1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বার্লিন প্রাচীর পতনের ২০ বছর উপলক্ষ্যে ‘ডান্সিং টু কানেক্ট’

৭ নভেম্বর ২০০৯

বার্লিন প্রাচীর পতনের পর ২০ বছর পেরিয়ে গেছে৷ যার অর্থ, এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা সাবেক দুই জার্মানির শুধু গল্পই শুনে যাবে৷ তারা পড়বে, শুনবে এবং জানবে৷ কিন্তু কিভাবে তাদের আরো ভালোভাবে এ বিষয়ে অবহিত করা যায় ?

https://p.dw.com/p/KQMs
ডান্সিং টু কনেক্ট-এর শিল্পীরাছবি: Christian Jungeblodt

বার্লিনের হাইনরিশ ব্যোয়েল ফাউন্ডেশন উদ্যোগ নিয়েছে এক অভিনব ‘ডান্সিং টু কানেক্ট' নামের এক ওয়ার্কশপের৷ ফাউন্ডেশনটি অ্যামেরিকার দুটি নাচের দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বার্লিনে পারফর্ম করার জন্য৷ নাচের দল দুটি হল - ব্যাটারি ডান্স কোম্পানি এবং ড্রাসটিক অ্যাকশন৷ তাদের নাচে যোগ দেবে বার্লিন এবং ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যের প্রায় ১০০ জন ছেলে-মেয়ে৷ উপলক্ষ্য, বার্লিন প্রাচীর পতনের ২০ বছর৷

কাঠের বাক্সের ওপর ড্রামের মত শব্দ তুলে হাততালি এবং তার সঙ্গে নাচ৷ প্রায় ২০ জন স্কুল ছাত্র-ছাত্রী অনুশীলনে ব্যস্ত৷ মঞ্চে তাদের প্রাচীর পতনের দৃশ্যটি তুলে ধরতে হবে৷ অনুষ্ঠান শুরুর মাত্র আর কয়েক ঘন্টা বাকি৷ মঞ্চে পর্দা উঠে যাওয়ার পরপরই শুরু হবে নাচ৷ শুরু হবে ‘ডান্সিং টু কানেক্ট'৷ অর্থাৎ, নৃত্যর মাধ্যমে সংযোগ - বার্লিন প্রাচীরের পতন৷ নাচের দৃশ্যে অভিনয় করছে ১৪ থেকে ১৯ বছরের স্কুল ছাত্র-ছাত্রী৷ তাদের সঙ্গে রয়েছে অ্যামেরিকার পেশাগত নৃত্যশিল্পীরা৷

Projekt Dancing to connect The fall of the wall
প্রশিক্ষণরত শিল্পীরাছবি: Christian Jungeblodt

গিমনাজিউম অর্থাৎ হাই স্কুলের ১৯ বছরের ছাত্রী ঈলদিজ অপেক্ষা করছে গ্রীনরুমে৷ বার্লিনের ভেডিং এলাকাতে থাকে সে৷ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে সে খুব খুশি৷ বার্লিন প্রাচীরের পতন - সে বিষয়ে তাঁর যথেষ্ঠ আগ্রহ রয়েছে৷ ঈলদিজ বলল, ‘‘আমি যখনই সেই সময়ের কথা শুনি অবাক হই৷ পুরো বিষয়টি আমাকে মানসিকভাবে বেশ স্পর্শ করে৷ কে কিভাবে চলবে, কীভাবে থাকবে সে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে আরেক জন৷ একটি দেশের মধ্যে সীমানা এঁকে দেয়া, দেয়াল তুলে দেয়া - তা অন্যায়৷ ভবিষ্যতে কি হবে তা নির্ধারণ করবে অন্য কেউ ? এক পরিবার ভেঙ্গে দু দিকে চলে গেছে - এসব আমি কিছুতেই কল্পনা করতে পারিনা৷''

কুর্দি বংশোদ্ভূত ঈলদিজ স্কুলেই দুই জার্মানির নানা রকম গল্প শুনেছে৷ হাইনরিশ ব্যোয়েল ফাউন্ডেশনে কর্মরত সুজানে হেরমেনাও জানান, বেশিরভাগ টীন এজারদের ওপর ইতিহাসের এই অংশটি বিশেষ কোন প্রভাব ফেলেনি৷ ‘ডান্সিং টু কানেক্ট' তাদের কাছে হবে শিক্ষণীয় একটি বিষয়৷

Projekt Dancing to connect The fall of the wall
এ নাচের মধ্য দিয়ে শরীরের উত্তেজনাকে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছেছবি: Christian Jungeblodt

তিনি আরো জানান, ‘‘আমরা চাচ্ছি এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করুক, তর্ক-বিতর্ক হোক৷ আরো বেশি করে পড়াশোনা করুক৷ বাবা-মা, দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছ থেকে আরো গল্প শুনুক৷ তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানুক৷ প্রশ্ন করুক, কেমন ছিল পূর্ব জার্মানি ? কেমন ছিল সে সময়ের দিনগুলো ? কীভাবে সবার সময় কাটতো প্রাচীরের এ পাশে ?''

‘ডান্সিং টু কানেক্ট' প্রসঙ্গে সুজানে আরো জানান, নাচের মধ্য দিয়ে শরীরের উত্তেজনাকে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে৷ তা করা হচ্ছে ইতিবাচকভাবেই, সৃজনশীলতার সঙ্গে৷ অনেকেরই নাচের কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না৷ তার ওপর একেবারে পেশাগত নৃত্যশিল্পীর সঙ্গে নাচতে গিয়ে তারা অনেকেই তাল হারিয়ে ফেলেছিল৷ নিউ ইয়র্কের নৃত্যশিল্পী জোনাথেন হল্যান্ডার জানান, ‘‘ছাত্র-ছাত্রীরা মনে করছে আমরা নিউ ইয়র্ক থেকে এসেছি আমরা নাচ শেখাবো৷ তারা খুবই অবাক হয়েছে যখন আমরা তাদের বলেছি ‘না, আমরা নাচ শেখাবো না, তোমাদের সামনে নাচবো না৷ তোমরা আমাদের অনুসরণও করবে না বরং তোমারাই হবে নাচের মূল উৎস'৷''

Projekt Dancing to connect The fall of the wall
পর্দা ওঠার পরই শুরু হলো নাচছবি: Christian Jungeblodt

জোনাথেন এই প্রকল্পের প্রধান৷ তিনি নাচের ওয়ার্কশপ প্রসঙ্গে জানান, স্কুল ছাত্র-ছাত্রীরা যে ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করছে তা হল একটি প্রক্রিয়া৷ সেই প্রক্রিয়ায় বার্লিন প্রাচীর পতনের সময়ের আবেগ, আন্দোলন, একাত্মতা সব কিছুই তুলে ধরা হয়েছে৷ ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেছে ১৮ বছরের স্কুল ছাত্র উমুট৷ তুর্কি বংশোদ্ভূত উমুটের জন্ম জার্মানিতেই ৷ সে জানাল তাঁর মিশ্র অভিজ্ঞতার কথা৷ তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমে খুব কঠিন মনে হচ্ছিল৷ কারণ কেউ বলল, ‘দেয়ালটি তৈরি কর '- তখন সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে একেবারে লাইন ধরে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যেতে হবে৷ কিন্তু এর সঙ্গে আবেগ এবং অনুভূতিকে যুক্ত করা হয়েছে৷ যেমন, প্রাচীরের এ পাশে পশ্চিম জার্মানি অন্যদিকে পূর্ব জার্মানি৷ দু পাশেই মানুষ৷ দুই দলই দু ধরণের নাচ নেচে যাচ্ছে৷ পশ্চিম জার্মানির নাচ এক রকম, পূর্ব জার্মানির নাচ আরেক রকম৷''

প্রতিবেদক: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক