বার্লিনে ‘৪২০’ উদযাপনে গাঁজা সেবন বৈধ করার দাবি
প্রতি বছর ২০ এপ্রিল বিশ্বের অনেক দেশেই এ দাবি তোলেন গাঁজাসেবীরা৷ এবার রাজধানী বার্লিনে সমবেত হয়ে জার্মানির নতুন জোট সরকারের কাছে এ দাবি আরো জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন সমাজের নানা পেশার গাঁজাসেবীরা৷ দেখুন ছবিঘরে...
কেন ‘৪২০’?
গাঁজাসেবীদের কাছে দিনটি আসলে ৪২০, ৪:২০, বা ৪/২০৷ প্রতি বছরের চতুর্থ মাস, অর্থাৎ এপ্রিলের ২০ তারিখ বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে বিশেষ এ দিনটি উদযাপন করা হয়৷
৫০০ গাঁজাসেবীর সমাবেশ
বুধবার বার্লিনের ব্রান্ডেনবুর্গ গেটের সামনে বিভিন্ন বয়স, শ্রেণি, পেশার অন্তত ৫০০ জন গাঁজাসেবী সমবেত হয়ে ‘৪২০’ উদযাপন করেন৷ প্রতিবছরের মতো এবারও গাঁজা সেবন বৈধ করার দাবি ছিল তাদের মুখে৷ জার্মানির বর্তমান জোট সরকার এর আগে দেশে গাঁজা বৈধ করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অঙ্গীকার করছিল৷ তাই ‘৪২০’ দিবসে দাবিটা আরো জোরালোভাবে উঠে আসে গাঁজাসেবীদের মুখে৷
বার্লিনে যারা ছিলেন
বুধবার ব্রান্ডেনবু্র্গ গেটের সামনে হাজির ছিলেন বিভিন্ন বয়স এবং পেশার গাঁজাসেবী৷ সাধারণ চাকুরিজীবী, অ্যাক্টিভিস্ট, র্যাপার, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা, আইনজীবী, ক্ষুদ্র গাঁজা ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি পথ্য হিসেবে গাঁজা সেবন করেন এমন রোগীরাও ছিলেন সেখানে৷
সরকারের অবস্থান
গত ডিসেম্বরে জোট সরকারের পক্ষ থেকে লাইসেন্সধারী দোকানে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য সীমিত পরিমানে গাঁজা বিক্রি বৈধ করার আইন প্রণয়নের অঙ্গীকার করা হয়েছিল৷ সরকার মনে করে, সীমিত পরিসরে গাঁজা সেবনকে বৈধতা দিলে ভেজাল গাঁজা সেবন বন্ধ করা এবং তরুণ সম্প্রদায়কে নেশাগ্রস্থ হওয়া থেকে রক্ষা করা নিশ্চিত করা যাবে৷ জোট সরকারের অন্যতম শরিক গ্রিন পার্টি বুন্ডেসটাগে এ বিষয়ে ইতিমধ্যে একটা খসড়া জমা দিয়েছে৷
গাঁজাসেবীদের দাবি
বুধবার ব্রান্ডেনবুর্গ গেটে সমবেত হয়ে গাঁজাসেবীরা জোট সরকারের কাছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গাঁজাসেবনকে আর অপরাধ হিসেবে গণ্য না করার আইন প্রণয়নের দাবি জানান৷
জার্মানিতে গাঁজাসেবন
জার্মানিতে ৪০ লাখের মতো মানুষ গাঁজা সেবন করেন বলে ধারণা করা হয়৷২০২১ সালে ড্যুসেলডর্ফের হাইনরিশ হাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালে সারা দেশে গাঁজা সংক্রান্ত মামলায় পুলিশের নানাভাবে যে ব্যয় করেছে তার আর্থিক মূল্য ১.৬৩ বিলিয়ন ইউরোর মতো৷ এর সঙ্গে আদালতের ব্যয় ৪৪৪.৭ মিলিয়ন ইউরোও যোগ করলে দেশের সার্বিক ব্যয়টা কিন্তু বিশাল৷
সরকারের ধীরে চলো নীতি
জার্মানির মাদক ও নেশা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সংস্থার এক মুখপাত্র বলেন, বর্তমান সরকার সীমিত পরিসরে গাঁজা সেবন বৈধ করার পক্ষে, তবে সরকার মনে করে, এ সংক্রান্ত আইনটি তাড়াহুড়ো করে প্রণয়ন করলে হিতে বিপরীত হতে পারে৷ কৃষি, অর্থনীতি, বিচার এবং পররাষ্ট্র- কমপক্ষে এই চারটি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনা করে প্রণয়ন করতে হবে আইনটি৷ তাই একটু সতর্কতা অবলম্বন করছে সরকার৷