বাড়ি নয়, হাসপাতালে মরতে চান অধিকাংশ জাপানি
৮০ শতাংশের বেশি জাপানি নাগরিক বাড়ির চেয়ে হাসপাতালে মরতে আগ্রহী৷ কিন্তু সে দেশে হাসপাতালে পর্যাপ্ত বিছানার সংকট দিন দিন বাড়ছে৷
জাপানে সর্বোচ্চ
৮০ শতাংশের বেশি জাপানি নাগরিক বাড়ির চেয়ে হাসপাতালে মরতে আগ্রহী৷ ‘অরগ্যানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ বা ওইসিডি-র এক জরিপে এই তথ্য জানা গেছে৷ ৩৫টি দেশের উপর পরিচালিত এই জরিপে জাপানেই হাসপাতালে মরতে আগ্রহীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে৷
হাসপাতাল নিরাপদ
অনেক জাপানি মনে করেন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বাড়ির চেয়ে হাসপাতালে থাকা বেশি নিরাপদ৷ তাছাড়া তাঁরা ঐ অবস্থায় পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে বোঝা হয়ে থাকতে চান না৷
বিছানা সংকট
জাপানে হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত বিছানার অভাব রয়েছে৷ বিশেষজ্ঞরা আশংকা করছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় চার লক্ষ ৭০ হাজার বিছানার সংকট দেখা দিতে পারে৷
দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকা
ওইসিডি-র জরিপ বলছে, ২০১৫ সালে জাপানে একেকজন রোগী প্রায় সাড়ে ১৬ দিন করে হাসপাতালে ছিল৷ যেখানে যুক্তরাজ্যে ছিল মাত্র ছয়দিন৷
বাড়িতেই হাসপাতালের সুবিধা
ইয়ু ইয়াসুই (ডানে) একজন চিকিৎসক৷ তাঁর ইয়ামাতো ক্লিনিক বাড়িতে গিয়ে গুরুতর অসুস্থদের চিকিৎসা দিয়ে থাকে৷ তিনি মনে করেন, রোগীদের শেষ সময়টুকুতে একজন চিকিৎসক থাকা ভাল৷
মৃত্যুর দু’দিন আগে হাসপাতালে
৮৯ বছর বয়সি কাতসু সাইতোকে টোকিওতে নিজের বাসায় দেখা যাচ্ছে৷ লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত সাইতো চিকিৎসা না করে ‘প্যালিয়্যাটিভ কেয়ার’ পেতে আগ্রহী ছিলেন৷ এজন্য জুলাইয়ে রোগ ধরার পর হাসপাতালে যেতে চেয়েছিলেন তিনি৷ দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে সেপ্টেম্বরে তিনি হাসপাতালে বিছানা পেয়েছিলেন, কিন্তু দু’দিন পরই মারা যান সাইতো৷
বাড়িতে থাকতে চেয়েছেন তিনি
ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত ৬৯ বছরের মিতসুরু নিনুমা হাসপাতালের চেয়ে বাড়িতে থাকতেই আগ্রহী৷ কারণ এর ফলে তিনি নাতি-নাতনি ও প্রিয় কুকুর রিন-এর কাছে থাকতে পারেন৷
শান্তিতে পরপারে পাড়ি
জুলাইয়ে তোলা এই ছবিতে ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত ৭৫ বছর বয়সি ইয়াসুহিরো সাতোকে তাঁর বাড়িতে দেখা যাচ্ছে৷ সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখ তিনি মারা যান৷ পরিবারের সদস্য ও নিকট আত্মীয় না থাকায় মৃত্যুর সময় তাঁর পাশে ছিলেন চিকিৎসক আর সাহায্যকারীরা৷ জুলাইয়ে রয়টার্সকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ঠিক আছে৷ আমি কারও উপর বোঝা নই৷ আমি একাই শান্তিতে পরবর্তী জীবনে পাড়ি জমাবো৷’’