বাই, বাই, ‘বিকিনি’ – ফিরছে ‘ওয়ান-পিস’ সুইমসুট
বিকিনি হয়ত বড় সংক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছিল, তাই হালের সুইমওয়্যার শো’গুলোতে হঠাৎ অনদূর অতীতের সেই অনুগ্র ওয়ান-পিস সুইমসুট উঁকিঝুঁকি মারতে শুরু করেছে...
উগ্র নয়, নম্র
সুইমসুটের আসল মজা তার কাপড়ে৷ ফ্যাশন ডিজাইনাররা চান নরম কাপড়, যা কিনা বাতাসে বা রোদ্দুরে খুব তাড়াতাড়ি শুকোবে৷ ২০১৫ সালের মরশুমের রঙচঙে ওয়ান-পিস সুইমসুট বিকিনিদের অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছে৷
সুইমসুটের সূচনা
মহিলাদের জন্য স্নান করার এবং সাঁতার কাটার পরিধান প্রথম বের হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে – সেই সঙ্গে পুরুষদের জন্যও সর্বাঙ্গ ঢেকে জলে নামার পরিধেয়৷ মোটা পশম কিংবা তুলোর এই সব কাপড় জল শুষে নিতো, যার ফলে তা শুকোতে বহু সময় লাগত৷ নারী-পুরুষের একত্রে জলে নামা ছিল নিষিদ্ধ৷ স্নান করতে হতো আলাদা জায়গায়৷
বেলাভূমি
বিংশ শতাব্দীর সূচনায় ছুটিছাটায় সমুদ্রতীরে গিয়ে স্নান ও সূর্যস্নানের প্রথা শুরু হয়৷ ততদিনে সুইমসুট আর একটু বেশি ‘টাইট’ হয়েছে, কাপড়ের সঙ্গে জুটেছে ইলাস্টিক৷ হ্যাট-এর মতো দেখতে ‘বেদিং ক্যাপ’ বা চান করার টুপির আসল কাজ ছিল মাথায় যা-তে বেশি রোদ না লাগে, তার ব্যবস্থা করা৷ ফুল-বডি বা পুরো শরীর ঢাকার এ ধরনের সুইমসুট পুরুষ ও মহিলা, সকলের জন্যেই তৈরি হতো – সালটা ধরুন ১৯১০, যেমন এই ছবিতে৷
উচ্ছল বিশের দশক
সুইমওয়্যার অবশেষে আধুনিক হয় বিশের দশকে৷ ছোটো বেল্ট, সোনালি বোতাম, চুমকি ইত্যাদি লাগানো সুইমসুটকে মহিলাদের মনপসন্দ করে তোলা হয়৷ সেই আমলে সুইমসুট শুধুমাত্র ছোট সাইজগুলোয় পাওয়া যেত৷
জলপরী
এস্থার উইলিয়াম্স ছিলেন অলিম্পিক সাঁতারু৷ একটি ‘ওয়াটার শো’-তে অংশগ্রহণ করা সময় তিনি হলিউড এজেন্টদের নজরে পড়েন৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দরুণ ১৯৪০ সালের অলিম্পিক বাতিল করা হয়৷ কিন্তু এস্থারের রোজগারপাতির অভাব হয়নি, কেননা তিনি তখন চিত্রতারকা৷ ‘নেপচুন্স ডটার’ ছবিতে তিনি ছিলেন বেদিং বিউটি৷ পরে হলিউডের সবচেয়ে ধনি অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন হয়েছিলেন৷
মেরিলিন মনরো
সুইমসুট পরিহিতা মেরিলিন: এর বেশি বলার প্রয়োজন পড়ে না৷ চল্লিশের দশকে তিনি মডেল হিসেবেই কাজ করেছেন, অভিনেত্রী হিসেবে নাম করেন তার অনেক পরে৷ ছবিতে তিনি প্রখ্যাত পিরেলি বর্ষপঞ্জীতে ক্যালেন্ডার গার্ল হিসেবে পোজ দিচ্ছেন৷ লক্ষণীয়: ওয়ান-পিস সুইমসুট৷
মিস জার্মানি
পঞ্চাশের দশকে জার্মানির সেরা সুন্দরী বাছা হতো বিকিনি ছাড়াই৷ অপরদিকে যে সব মহিলার বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে, তাঁদের প্রতিযোগিতায় যোগদান করতে দেওয়া হতো না৷ তবে হাইহিল জুতো থেকে আঁটসাঁট সুইমসুট, বাকি সবই চলত৷
যে দৃশ্য না থাকলেই নয়
ষাটের দশকে নায়িকাকে একবার না একবার সুইমসুটে দেখা দিতেই হবে৷ সেই সঙ্গে মাথায় বেদিং ক্যাপ: এগুলো ছিল রবারের, যা-তে চুল না ভেজে৷ ছবিতে জিনা লোলোব্রিজিডা-কে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে বন্ড-খ্যাত সন কনারি-র সঙ্গে৷
বে-ওয়াচ
সুইমওয়্যারের ইতিহাসে ‘বে-ওয়াচ’ ইতিহাস সৃষ্টি করে গিয়েছে৷ বে-ওয়াচ-এর মহিলারা অত্যন্ত হাই-কাট সুইমসুট পরে নব্বই-এর দশকে সারা দুনিয়ায় সেই ফ্যাশন চালু করে দেন – বিশেষ করে অভিনেত্রী প্যামেলা অ্যান্ডারসন৷ সিরিয়ালটি প্রদর্শিত হয় ১৪৪টি দেশে৷
কম-বেশি
সুইমসুট ডিজাইন করার সময় ফ্যাশন ডিজাইনারদের সবার আগে ভাবতে হয়: কতটা রাখব আর কতটা ফেলব৷ বিকিনি-র চেয়ে সুইমসুটে বেশি লজ্জা ঢাকার কথা, কিন্তু হালফ্যাশনে সে সীমা সব সময় বজায় থাকে না৷
আমরা সকলে তো এক নই
পোষা কুকুরকে নিয়ে জলে নামতে কার না ইচ্ছে করে! এই মহিলাও নেমেছেন৷ অপরদিকে বড় সাইজের সুইমসুট তৈরি করা ডিজাইনারদের পক্ষে একটা বড় চ্যালেঞ্জ৷ অনেক ক্ষেত্রে দু’পরত কাপড় দিয়ে জমি শক্ত করতে হয়৷ আগে ফ্যাশন, পরে সাইজ, এই হল নীতি৷ সুইমসুটের ক্ষেত্রেও তাই৷