বাংলাদেশ-ভারত ট্রানজিট
সম্প্রতি ভারতকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ৷ তবে বাংলাদেশ এখনও ভারতের স্থলবন্দর, বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানি করতে ট্রানজিট পাওয়ার অপেক্ষায় আছে৷
চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পেল ভারত
চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে নিয়মিতভাবে পণ্য পরিবহন শুরুর পথ খুলেছে৷ এ ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২৪ এপ্রিল স্থায়ী আদেশ জারি করে৷ এর আগে ২০২০ সালের জুলাই থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ভারতীয় পণ্যের কয়েকটি চালান বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে৷ এখন এনবিআর স্থায়ী আদেশ জারির মাধ্যমে নিয়মিত ট্রানজিট কার্যক্রম শুরুর পথ খুললো৷
আশুগঞ্জ দিয়ে ট্রানজিট
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান নৌ প্রটোকলের আওতায় ২০১৬ সালে ভারতকে আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছিল৷ সেই সুযোগ পেয়ে ঐ বছরের জুন মাসে কলকাতা থেকে নৌপথে প্রথমে আশুগঞ্জ নৌবন্দর, এরপর সড়কপথে আখাউড়া হয়ে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় প্রথম চালান গিয়েছিল৷ তবে আশুগঞ্জ নৌবন্দরের অবকাঠামোগত ঘাটতির কারণে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা এই পথে তেমন আগ্রহী নন৷
অপেক্ষায় বাংলাদেশ
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় প্রকাশ করা এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ভারতের স্থলবন্দর, বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে বিনা মাসুলে ট্রানজিট দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত৷ তবে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, এখনও নেপাল-ভুটানে ট্রানজিট সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না৷
সমস্যায় বাংলাদেশ
সড়কপথে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানি করতে বাংলাদেশকে ভারতের সড়কপথ ব্যবহার করতে হয়৷ কিন্তু এখনও ট্রানজিটের সুযোগ না মেলায় বাংলাদেশের পণ্যবাহী ট্রাক সরাসরি নেপাল বা ভুটানে যেতে পারছে না৷ ট্রাকে করে পণ্য নিয়ে গিয়ে সীমান্তে অন্য ট্রাকে তুলে দিতে হচ্ছে৷ এতে যেমন খরচ বেশি হচ্ছে, তেমনি সময়ও বেশি লাগছে৷ সময় বেশি লাগায় পণ্য নষ্ট হওয়ারও সুযোগ তৈরি হয়৷
সার রপ্তানিতে ট্রানজিট পেয়েছে বাংলাদেশ
তবে ২০২১ সালে মাশুল দিয়ে বাংলাদেশ থেকে নেপালে সার রপ্তানিতে ট্রানজিট সুবিধা দিয়েছে ভারত৷ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার রহনপুর ও ভারতের সিঙ্গাবাদ রেলপথ দিয়ে এই ট্রানজিট সুবিধা দেওয়া হয়েছে৷
কার্যকর হয়নি বিবিআইএন
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের মধ্যে অবাধে গাড়ি চলাচলের জন্য ২০১৫ সালে বিবিআইএন চুক্তি সই হয়েছিল৷ কিন্তু এখনও সেটি কার্যকর করা যায়নি৷ সবশেষ ২০২২ সালের মার্চে নতুন দিল্লিতে এক বৈঠকে চুক্তি বাস্তবায়নে যাত্রী ও কার্গো প্রটোকল দ্রুত চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতিনিধিরা৷
রেল যোগাযোগ স্থাপন
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রেল যোগাযোগ বাড়ানো হচ্ছে৷ ১৯৬৫ সালের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া আটটি রেলপথের মধ্যে পাঁচটি ইতিমধ্যে চালু হয়েছে৷ বাকি তিনটি নতুনভাবে চালু করার জন্য কাজ চলছে৷ এতে করে যাত্রীর পাশাপাশি পণ্যপরিবহনের সুযোগ তৈরি হবে যা ট্রানজিটের পরিধি বাড়াবে৷