1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশ থেকে ফিরেছেন প্রায় এক হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী

২০ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উত্তাল বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতিতে বাড়ি ফিরে আসছেন ভারতীয় শিক্ষার্থীরা।

https://p.dw.com/p/4iXLm
ভারতীয় শিক্ষার্থীরা সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ফিরছেন
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমইএ) নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফেরা নিশ্চিত করতে বেসামরিক বিমান চলাচল বিভাগ, অভিবাসন বিভাগ, স্থল বন্দর এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফের) সঙ্গে সহযোগিতা করছে।ছবি: ANI

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমইএ) নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফেরা নিশ্চিত করতে বেসামরিক বিমান চলাচল বিভাগ, অভিবাসন বিভাগ, স্থল বন্দর এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফের) সঙ্গে সহযোগিতা করছে।

৭৭৮ জন ভারতীয় শিক্ষার্থী নিরাপদে বিভিন্ন স্থলবন্দর হয়ে ভারতে ফিরে এসেছে। এছাড়া ২০০ জন শিক্ষার্থী ঢাকা এবং চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের মাধ্যমে নিয়মিত ফ্লাইটের মাধ্য়মে দিয়ে বাড়ি ফিরেছে বলে এমইএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

ডয়চে ভেলের সূত্র অনুসারে, ১৮ জুলাই ১৯৮ জন ভারতীয় শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে মেঘালয়ে ফিরেছেন, ১৯ জুলাই সংখ্যাটি ছিল ২০৬ জন। ২০ জুলাই এই প্রতিবেদন লেখা অবধি কতজন ফিরেছেন তা জানা যায়নি৷

বিএসএফের সহায়তায় ঘরে ফেরা

ভারতের ত্রিপুরা সংলগ্ন বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত ৩৬ জন শিক্ষার্থীকে দেশে ফেরালো ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স। ২০ জুলাই খুব ভোরে বিএসএফের আইজি পীযূষ পুরুষোত্তম প্যাটেলের কাছে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত এক শিক্ষার্থীর উদ্বিগ্ন বাবা-মায়ের কাছ থেকে ফোন আসে। মেডিকেল কলেজে আটকে পড়া ভারতীয় শিক্ষার্থীদের কথা তাকে বলা হয়েছিল। ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় তাদের নিয়ে চিন্তিত ছিলেন অভিভাবকেরা। বিএসএফ, ত্রিপুরার আইজি কুমিল্লায় বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ (বিজিবি) এর রিজিয়ন কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দুই সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে চ্যানেলগুলো সক্রিয় করা হয়। বিজিবি বিওপি আখুরার কাছে সীমান্ত পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাত্রার খেয়াল রেখেছিলো। তারপরে বিএসএফ এই শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব নেয়।

বিএসএফের সাহায্যে দেশে ফেরেন বাংলাদেশে মেডিকেল পাঠরত ভারতীয় শিক্ষার্থীরা
ভারতের ত্রিপুরা সংলগ্ন বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত ৩৬ জন শিক্ষার্থীকে দেশে ফেরালো ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সছবি: Jayanta Dey/REUTERS

ভারত ছাড়াও নেপালের একাধিক শিক্ষার্থীও বাংলাদেশ থেকে ফিরেছেন। ১৮ এবং ১৯ জুলাইয়ে বাংলাদেশ থেকে নেপালে ফিরেছেন যথাক্রমে ১০১, ১৪৯ জন শিক্ষার্থী।

বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলা থেকে প্রায় ৫০ কিমি (৩০ মাইল) দূরে অবস্থিত ঢাকা। ভারতীয় শিক্ষার্থী হোসেন মানিকগঞ্জের বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করেন। ভারতে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় আশঙ্কায় ছিলেন হোসেন। ভারতে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, "আমাদের কলেজে সহিংসতার প্রভাব পড়েনি, তবে আমরা শুনেছি শহরে সমস্যা ছিল (যা মাত্র ১৫ মিনিট দূরে)।''

ঢাকায় ছাত্র নিহত হওয়ার খবর আসার পর অসমের ধুবড়ির বাসিন্দা হোসেন এবং তার কলেজের আরো ৮০ জন শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত ট্যাক্সি ভাড়া করে ১৭০ কিমি সফর করে পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে পৌঁছান। তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের অনুরোধে বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশন (দূতাবাস) একটি নিরাপত্তা এসকর্ট দিয়েছিলো।

পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের চারটি রাজ্য অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের সঙ্গেও বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। সেখানেও ভারতীয় শিক্ষার্থীরা ফিরে আসছেন বলে জানা গিয়েছে।

মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা শনিবার এক বার্তায় জানিয়েছেন, ''সরকার শিক্ষার্থীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাস এবং মেডিকেল কলেজগুলির সঙ্গে আন্তরিকভাবে সমন্বয় করছে।''

তার বার্তায় লেখা রয়েছে, ''আগরতলায় শিক্ষার্থীদের বাস দাঁড় করানো আছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাড়ি ফেরানোর জন্য সবরকম ব্যবস্থা করা আছে।''

এক্স প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ''মেঘালয়ের চল্লিশজন নাগরিক, বেশিরভাগ মেডিকেল শিক্ষার্থীকে আজ ঢাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তারা আগরতলা হয়ে প্রবেশ করবে এবং শিলংয়ের দিকে রওনা দেবে।''

ভারত থেকে প্রায় ৪০৫ জন শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে শনিবার একটি ভিডিও বিবৃতিতে বলেছেন তিনি। 

প্রভাব পেট্রাপোলে

এদিকে, বাংলাদেশে অশান্তির প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্তে। শনিবার রপ্তানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। পণ্য নিয়ে ৩৫টি ট্রাক সীমান্ত পেরোনোর বন্ধ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। আমদানিও ধীর গতিতে চলছে। এই পরিস্থিতিতে পরিবহন চালক এবং মুদ্রা ব্যবসায়ীরা সংকটের মুখে পড়েছেন।

আরকেসি/এআই (রয়টার্স, এবিপি আনন্দ)