বাংলাদেশি ছাত্রী
১০ সেপ্টেম্বর ২০১২প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার ছাত্র উচ্চ শিক্ষার জন্য ইউরোপ অ্যামেরিকার অনেক দেশে পাড়ি জমাচ্ছে৷ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ফলাফলের দিকে তাকালে এই ক্ষেত্রে কিন্তু বড় একটি ফাঁক চোখে পড়বে৷ সেখানে রেজাল্টের দিক থেকে মেয়েরা কোনভাবেই ছেলেদের চেয়ে পিছিয়ে নেই৷ অথচ উচ্চ শিক্ষার জন্য খুব কম মেয়েই বিদেশে আসে৷ কেন এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মেয়েদের আগ্রহ কম? প্রশ্নটি করেছিলাম গ্যোটিঙ্গেন ইউনিভার্সিটির হাইড্রোজিওলজি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগে মাস্টার্স পড়ুয়া ছাত্রী সাবরিনা ফাতিমাকে৷ তিনি বললেন, ‘‘আমি ঠিক জানিনা কেন? তবে হয়তো আমাদের সামাজিক অবকাঠামোর কারণে অনেকে ভয় পেয়ে থাকতে পারে৷ অন্যদিকে ভারত নেপাল থেকে অনেক মেয়েকে দেখেছি কেবল অনার্স শেষ করেই মাস্টার্স করতে বিদেশে চলে আসে৷ আর পিএইচডিতে তো আছেই৷''
বাংলাদেশি ছাত্রীদের জন্য এই ক্ষেত্রে উদাহরণ হয়ে উঠতে পারেন তণুশ্রী পাল৷ উচ্চশিক্ষার পুরোটাই তার বিদেশে করা৷ ভারতের ব্যাঙ্গালোর থেকে ব্যাচেলর্স করেছেন, মাস্টার্স করেছেন দক্ষিণ কোরিয়াতে৷ বর্তমানে তিনি জার্মানির উল্ম ইউনিভার্সিটিতে মলিকিউলার মেডিসিন বিভাগের অধীনে পিএইচডি করছেন৷ তিনি বললেন, উচ্চ শিক্ষার জন্য একজন মেয়ের পেছনে পারিবারিক সমর্থনটা সবচেয়ে বেশি জরুরি৷ কারণ আমি বাংলাদেশের নাটোর থেকে উঠে এসেছি৷ আমি যখন বাংলাদেশ ছাড়ি তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর৷ বিদেশে পড়াশোনার জন্য আমার বাবা মা আমাকে খুবই সমর্থন দিয়েছে৷
বিদেশে মেয়েদের পড়তে আসার বিষয়টি বাংলাদেশের সাধারণ পরিবারগুলো এখনও গ্রহণ করে উঠতে পারে নি৷ এর পেছনে কারণ থাকে মেয়ের ভবিষ্যত আর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা৷ অথচ তণুশ্রী পালের মতে, বাংলাদেশ থেকে বিদেশেই বরং একজন মেয়ে অনেক বেশি স্বচ্ছন্দে চলতে ফিরতে পারে৷
অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যারা ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের বেশি সুযোগ দিয়ে থাকে৷ এই যেমন ডয়চে ভেলে একাডেমির ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া স্টাডিজ কোর্স৷ এখানে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের বেশি ভর্তি করানো হয়৷ তবে তার আগে দরকার মানসিক পরিবর্তন৷ ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, পরিবারের একজন এগিয়ে যাওয়াই মানে তো পরিবারটি এগিয়ে যাওয়া, তাই নয় কি?
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই