বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও বড় কোরবানির হাট

এই ঈদে রাজধানীতে এবার বসতে যাচ্ছে ১৮টি অস্থায়ী পশুর হাট। এছাড়া দুই সিটি করপোরেশনের গাবতলী ও সারুলিয়া স্থায়ী দু’টি হাটেও কেনা-বেচা হচ্ছে কোরবানির পশু। এরমধ্যে ৯টি অস্থায়ী পশুর হাট বসেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি)। পাশাপাশি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেও (ডিএসসিসি) তাদের আওতাধীন এলাকায় নয়টি অস্থায়ী পশুর হাট বসিয়েছে।

জমে উঠছে রাজধানীর অন্যতম বড় গাবতলী পশুর হাট। ক্রেতার উপস্থিত কম থাকলেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পশু বিক্রেতারা হাটে এসে জায়গা করে নিচ্ছেন। হাটে এখনও পুরোপুরি কেনাবেচা শুরু না হলেও গরু বিক্রেতারা দাম কিছুটা চড়া হাঁকছেন। বড় গরুর তুলনায় মাঝারি আকারের গরুর দাম বেশি দেখা যায়।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী, চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ২১২টি পশুর হাট বসেছে। এর মধ্যে স্থায়ী ৫৭ ও অস্থায়ী ১৫৫টি। চট্টগ্রাম শহরে তিনটি স্থায়ী পশুর হাট হচ্ছে সাগরিকা বাজার, বিবিরহাট বাজার ও পোস্তারপাড় ছাগলের হাট। এছাড়া শহরে এবার ৭টি স্থানে অস্থায়ী পশুরহাট বসেছে।

নগরের কয়েকটি স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, এখন বাজারে ব্যাপারী থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন। নগরের সাগরিকা বাজারে ছোট গরুর বেশি দাম। এখনো বিক্রেতারা দাম কমাচ্ছেন না। আনুমানিক দেড় মণ ওজনের একটি গরু লাখ টাকার ওপর দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা।

শেষ মুহূর্তে জমতে শুরু করেছে রাজশাহীর পশুর হাট গুলো। রাজশাহী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানাচ্ছে, রাজশাহীতে এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৮ হাজার পশু। এবার ছোট সাইজের দুই থেকে চার মণের গরু ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছে, সরবরাহ কমের কারণে কোরবানির পশুর দাম এবার বেশি। তবে ক্রেতাদের দাবি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কোরবানির পশুর দাম বাড়ানো হচ্ছে। অন্যদিকে হাট গুলোতে কোরবানির পশুর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।

নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চৌবাড়িয়া হাট। নিয়ম মেনে সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার বসে এই হাট। কোরবানি ঈদ উপলক্ষে জমজমাট হয়ে উঠে হাটটি। স্বাভাবিক হাটের তুলনায় হাটের আকার বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন গুণ। নওগাঁ জেলার ১১ টি উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার খামারী-পশুপালনকারীরা গবাদি পশু বিক্রির জন্য সরবরাহ করেছিলেন।

কোরবানীর পশু কিনতে চৌবাড়িয়ায় গত শুক্রবার হাটে ভিড় করেছিলেন দুই লাখেরও বেশি মানুষ। সরবরাহ ও কেনা-বেচা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন খামারি ও ব্যাপারিরা।

চৌবাড়িয়ায় দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। খামারি ও বিক্রেতারা বলছেন- পশু পালনের খরচ বেড়েছে। তাই আগের বছরের তুলনায় প্রতিটি মাঝারি গরুতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। ৪ থেকে ৫ মণের গরুর চাহিদা বেশি৷

যশোরের পশুহাটের অন্যতম চৌগাছার পশুহাট। এবার ঈদ উপলক্ষে সেখানকার পশুহাট জমে উঠেছে। প্রতি সপ্তাহের দুই দিন শুক্র ও সোমবার সেখানে হাট বসে। চৌগাছারা রামকৃষ্ণপুরের আব্দুল হামিদ একটি দেশী ষাড় এনেছিলেন বাজারে। বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। তিনি দাম পেয়ে খুশি।

যশোর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো: রাশিদুল হক জানান, যশোরে এবারের কোরবানির ঈদে পশুর চাহিদা রয়েছে ৮০ হাজার। এরমধ্যে গরু চাহিদা বেশি।

রোববার পর্যন্ত বরিশাল নগরীর কাগাশুরা, রূপাতলী, চরমোনাই, বানারীপাড়ার গুয়াচিত্রাসহ কয়েকটি হাটে কিছুটা ক্রেতা সমাগম দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ হাটে ক্রেতা একেবারেই কম ছিল। যে কটা গরু উঠেছে তার দামও গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি।

বরিশালে এবারে মোট ৬৩টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে। এবার খামারিদের কাছেও প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার গরু। আলমডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর থেকে গরু আসছে এসব হাটে। সাধারণ সাইজের যে গরু গত বছরও ৬৫-৭০ হাজার টাকায় মিলেছে, এবার তার দাম ৯০-৯৫ হাজার টাকা। আর তাই হাটে অসংখ্য গরু আসার পরও বেচাকেনা নেই।