1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জুনিয়র ইয়ার' প্রোগ্রাম

২৩ মে ২০১১

বিদেশে পড়তে আসার আগে যে কেউ ভাবে পছন্দমত বন্ধু বান্ধব পাবো তো? সময় ভাল কাটবে তো? অন্য দেশে যাচ্ছি, অন্য সংস্কৃতি, ভাষা– মানিয়ে চলতে পারবো তো?

https://p.dw.com/p/11LWU
বন বিশ্ববিদ্যালয়ছবি: DW

বন বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সব বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করেছে তারা ফিরে যাওয়ার আগে জানিয়েছে, বন শহরেটি তাদের কাছে বাড়ির মতই মনে হয়েছে৷ মার্কিন ছাত্র ট্রে হুভার বলল, ‘‘আমি এখন অনেক ভাল জার্মান বলতে পারি৷ আমার বন্ধু-বান্ধবের সংখ্যা অনেক বেড়েছে৷ প্রথম সপ্তাহটা খুব খারাপ কেটেছে আমার, ভাল লাগেনি৷ আমার স্টুডেন্ট ডর্ম ছিল ভীষণ নোংরা, অনেক ভাঙা জিনিসপত্রে আমার ঘর ভর্তি ছিল৷ প্রথমে মানিয়ে নিতে বেশ কষ্ট হয়েছিল৷''

যে কোন কিছুর শুরুটাই কঠিন হয় – একথা শেষ পর্যন্ত উপলব্ধি করতে পেরেছে ট্রে৷ ট্রে অ্যামেরিকা থেকে এসেছে এবং বন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সেমেস্টার কাটিয়েছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়র ইয়ার প্রোগ্রামের আওতায় ট্রে এসেছে জার্মানিতে৷

Campus der Uni Bonn
শান্ত এই শহরের ক্যাম্পাসছবি: DW

ফিরে আসবে রিয়োকো টাকেনিশি

জুনিয়র ইয়ার প্রোগ্রাম বন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমের একটি৷ এই প্রোগ্রামে বিদেশে থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের একটি সেমেস্টারের জন্য জার্মানিতে আনা হয়৷ অ্যামেরিকা, চীন, জাপান থেকে বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী এখন পর্যন্ত এই জুনিয়র প্রোগ্রামের সুবাদে জার্মানিতে এসেছে৷ রিয়োকো টাকেনিশি জাপানের ছাত্রী৷ সে আরো কিছুদিন জর্মানিতে থাকতে চায়৷ রিয়োকো বলল, ‘‘আমি জার্মানির বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়িয়েছি৷ আমার সবচেয়ে ভাল লেগেছে জার্মানির দক্ষিণাঞ্চল৷ আমি আরেকবার জার্মানিতে আসতে চাই৷ কয়েক বছর জার্মানিতে থাকতে চাই, বসবাস করতে চাই, দেশটিকে জানতে চাই৷''

রিয়োকো গত বছর জার্মানিতে এসেছে৷ এক বছরে তার অনেক বন্ধু-বান্ধব হয়েছে৷ সবাই বন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে৷ জুনিয়র ইয়ার প্রোগ্রামের সুবাদে যেসব বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী এসেছে তাদের সবাইকে দেয়া হয়েছে একজন করে স্টাডি-বাডি৷ স্টাডি-বাডির কথা এর আগেও আমরা জানিয়েছি৷ এই স্টাডি-বাডি বিদেশি ছাত্র বা ছাত্রীকে পড়াশোনা থেকে শুরু করে জার্মানি সম্পর্কে নানা তথ্য দেবে, প্রয়োজনে জার্মানি ঘুরিয়ে দেখাবে৷ শুরু থেকেই স্টাডি-বাডি বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে থাকে বলে আর যাই হোক অন্তত জার্মান ভাষা নিয়ে কোন সমস্যা হয় না৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক দপ্তরে কাজ করেছেন কাটারিন স্মিট৷ তিনি জানালেন, ‘‘যে সব পরিবারের সঙ্গে এসব বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পৃক্ত করা হয় তারা, শুধু কোথায় থাকবে বা কীভাবে থাকবে তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে না বরং উইকএন্ড কোথায় কাটাবে বা তাদের নিয়ে কোথায় যাওয়া যায় – তা নিয়েও চিন্তা ভাবনা করা হয়৷''

Campus der Uni Bonn
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমছবি: DW

বার্লিনে পড়তে চায় অস্ট্রেলিয়ার মেয়ে এরিন

সেমেস্টারের শুরুতে প্রতিটি বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীর সঙ্গে সবার পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়৷ তখন শুধু যে জার্মান ভাষাই শেখানো হয় তা নয়, সেই রাজ্যের বিভিন্ন শহর ঘুরিয়ে দেখানো হয়৷ যারা আগে থেকেই জার্মান ভাষাটি জানতো তাদের সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি৷ অনেক ছাত্র-ছাত্রী চাইলে জার্মানির যে কেন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপও করতে পারে৷ সেই প্রকল্পের নাম ‘জার্মানি হ্যান্ডস অন'৷ বন শহরে এই ইন্টার্নশিপের সুযোগ সুবিধা অনেক বেশি৷ কারণ এই শহরটি একসময় রাজধানি ছিল৷ এখানে রয়েছে জাতিসংঘের ক্যাম্পাস এবং ডিএইচএলের বিশাল একটি ভবন৷ অস্ট্রেলিয়ার ছাত্রী এরিন মিশেল একারণেই বন শহর এবং বন বিশ্ববিদ্যালয়কে বেছে নিয়েছে৷ শুধু বনের ঠান্ডা আবহাওয়া বেড়ানোর কিছু পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছে৷ এরিন জানাল, ‘‘বিশ্বের কম-বেশি প্রতিটি দেশই জানে যে জার্মানিতে পড়াশোনার মান বেশ ভাল৷ আমি এখানে কিছু সময় কাটিয়েছি৷ এখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ইউরোপীয় এবং আন্তর্জাতিক সাংবাদিকতা বিষয়ে মাস্টার্স করার৷ সেটা করবো বার্লিনে৷ অর্থাৎ আমি অবশ্যই আবারো ফিরে আসছি৷''

এক টুরো জার্মানি সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে হানা

অ্যামেরিকান ছাত্রী হানা কোরেল দারুণ সময় কাটিয়েছে বন শহরে৷ জার্মানি তার এত ভাল লেগেছে তার যে সে একটি সেমেস্টার বেশি কাটিয়েছে জার্মানিতে৷ সে ‘জার্মানি হ্যান্ডস অন' প্রকল্পের অধীনে ইন্টার্নশিপের সুযোগ পেয়েছে৷ দেড় বছর থাকার পর হানা অনর্গল জার্মান ভাষায় কথা বলতে পারে৷ শুধু ভাষা নয় আরো অনেক কিছু হানা সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে জার্মানি থেকে৷ মন খারাপ করে হানা কোরেল জানায়, ‘‘আমি এখানে দারুণ সময় কাটিয়েছি৷ আমার জার্মানি ছেড়ে যেতে খারাপ লাগছে৷ এখানে অনেক বন্ধু-বান্ধব আমি রেখে যাচ্ছি৷ আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি মানুষ যখন যেখানে থাকে তখন সেও সেই জায়গাটির একটি অংশে পরিণত হয়৷ নিজের ব্যর্থতা এবং সাফল্যের কাছ থেকেই অনেক কিছু শেখা যায়৷ নতুন করে নিজেকে জানা হয়৷ এটাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা৷''

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক