ফ্রান্সে ধর্মঘট অব্যাহত, তেল সংকটের মুখে বিমানবন্দর
১৬ অক্টোবর ২০১০শ্রমিকদের অবসর বয়স এবং অবসর ভাতা সংক্রান্ত সংস্কারে ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজির পরিকল্পনার বিরুদ্ধেই মূলত এই আন্দোলন৷ ২০১৮ সালের মধ্যে অবসরের বয়সসীমা ৬০ থেকে ৬২ বছর করতে চান সার্কোজি৷ এমনকি এই সংস্কার প্রস্তাবের অধিকাংশ নীতিমালাই জাতীয় সংসদে অনুমোদিত হয়ে গেছে৷ সরকার আশা করছে, চলতি মাসের শেষ নাগাদ এটি সিনেটে অনুমোদন পেয়ে যাবে৷ তবে এই প্রস্তাবের বিপক্ষে কঠোর অবস্থান শ্রমিক ইউনিয়ন এবং বিরোধী সমাজবাদী দলের৷ তাদের অভিযোগ, সার্কোজি অর্থনৈতিক খাতের ব্যর্থতার দায়ভার শ্রমিকদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন৷ তাই তাদের প্রস্তাব, শ্রমিকদের উপর নয় বরং কর বাড়ানো হোক ধনী জনগোষ্ঠীর উপর৷
সর্বশেষ পরিস্থিতি
চলমান ধর্মঘট এবং গণ বিক্ষোভ আরো প্রকট হয়ে উঠছে৷ রাষ্ট্রীয় রেল সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার নির্ধারিত ট্রেনের প্রায় অর্ধেকই বন্ধ ছিল৷ ফ্রান্সের ২৩০টিরও বেশি শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনকারীরা৷ এক হিসাবে, শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে দশ লাখেরও বেশি মানুষ৷ বিক্ষোভকে আরো উত্তাল করেছে উচ্চ-বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশ গ্রহণ৷ অব্যাহত ধর্মঘটের ফলে ফ্রান্সের ১২টি তেল শোধনাগারের ১০টিই বন্ধ হয়ে গেছে৷ এর আগে শুক্রবার বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়৷ এতে ২০ জন পুলিশ সদস্য আহত হন৷ আটক করা হয় আড়াই শতাধিক বিক্ষোভকারীকে৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে, ধর্মঘট চলতে থাকলে প্যারিসের প্রধান বিমান বন্দরের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেল সোমবার কিংবা মঙ্গলবারেই ফুরিয়ে যাবে৷ ফলে বিঘ্নিত হতে পারে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণ সেবা৷
সরকারের অবস্থান
সার্কোজি সরকারের অবস্থান এখনও অনড়৷ আন্দোলনের ফলে সংস্কার পরিকল্পনা থেকে পিছু হটার তেমন কোন লক্ষণ এখনও চোখে পড়ছে না৷ তবে আন্দোলনের ফলে যেন ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা না বাড়ে সেব্যাপারে সতর্ক রয়েছে সরকার৷ শনিবারের বিক্ষোভ শুরুর আগেই পুলিশকে সংযত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ব্রাইস হর্টেফক্স৷ বিশেষ করে আগের দিন বেশ কিছু শহরে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের কারণেই এমন সতর্ক বার্তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা