1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফুকুশিমা বনাম চেরনোবিল

১৩ এপ্রিল ২০১১

দু’টি পারমাণবিক দুর্ঘটনা৷ দু’টিই এখন আন্তর্জাতিক আইএইএর মানদণ্ডে সাত মাত্রার আণবিক বিপর্যয়৷ কিন্তু দু’টির মধ্যে অনেক তফাৎ৷

https://p.dw.com/p/10sCW
দুর্ঘটনার পর ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রছবি: AP

এক) ১৯৮৬ এবং ২০১১৷ উক্রেইনের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে রিয়্যাক্টরগুলি সাধারণভাবে চলার সময় একটি রিয়্যাক্টর বিস্ফোরিত হয়৷ অগ্নিগোলকের মতো সেই বিস্ফোরণ আকাশে উঠে তেজস্ক্রিয়তা বহুদূর অবধি ছড়িয়ে দেয়৷ অপরদিকে গত ১১ই মার্চ জাপানের পূর্ব উপকূলে ভূমিকম্প এবং সুনামির পর ফুকুশিমার রিয়্যাক্টরগুলি স্বয়ংক্রিয় ভাবে বন্ধ হয়ে যায়৷

দুই) চেরনোবিলে মাত্র একটি রিয়্যাক্টরে দুর্ঘটনা ঘটে৷ ফুকুশিমায় তিনটি রিয়্যাক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ সুনামিতে রিয়্যাক্টরগুলির ভিতরের পারমাণবিক জ্বালানির রডগুলি ঠান্ডা রাখার প্রণালী খারাপ হয়ে যাওয়ার ফলে তথাকথিত নিউক্লিয়ার মেল্টডাউনের বিপদ দেখা দিয়েছে৷ অপরদিকে চেরনোবিলে ফুকুশিমার মতো কোনো অভ্যন্তরীণ আধার বা পাত্র ছিল না৷

তিন) সেটা প্রায় এক প্রজন্ম আগে বলেই হোক বা আমলটা সোভিয়েত আমল ছিল বলেই হোক, চেরনোবিলের দুর্ঘটনা সামাল দিতে হাজার হাজার কর্মী পাঠানো হয়৷ তাদের কাজ ছিল গোটা রিয়্যাক্টরটাকে একটি কংক্রিটের আস্তরণ দিয়ে মুড়ে দেওয়া৷ ফুকুশিমায় অনেক কম কর্মী এবং প্রযুক্তিবিদ কাজ করছেন৷ তাদের কাজ হল পারমাণবিক জ্বালানিকে ঠান্ডা রাখা, নানা ধরণের ফাটল ও ছিদ্র সারানো এবং প্রয়োজনে তেজস্ক্রিয় জল সাগরে ফেলা৷

Flash-Galerie Deutschland 60 Jahre Kapitel 4 1979 – 1989 Atomkatastrophe in Tschernobyl
বিস্ফোরণের পর চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রছবি: AP

চার) চেরনোবিলে ১৩৪ জন সোভিয়েত কর্মী অতিমাত্রার তেজস্ক্রিয়তা থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন, এমনকি তাদের মধ্যে ২৮ জন প্রাণ হারান বলে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷ জাপানে এযাবৎ তিনজন কর্মীর তেজস্ক্রিয় জলে পা ডুবিয়ে কাজ করতে গিয়ে পা পুড়ে গেছে৷

পাঁচ) ফুকুশিমা থেকে এযাবৎ যে পরিমাণ তেজস্ক্রিয়তা বেরিয়েছে তার অনুপাত চেরনোবিলের দশ ভাগের এক ভাগ৷ তবে তেজস্ক্রিয়তা বিকিরণের ক্ষেত্রে ফুকুশিমা শেষমেষ চেরনোবিলকে ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে পরিচালক সংস্থা টেপকোর ধারণা৷

ছয়) চেরনোবিলে আরো একটি সমস্যা ছিল রিয়্যাক্টরের ভিতরের গ্রাফাইটে অগ্নিকাণ্ড৷ এর ফলে তেজস্ক্রিয় কণাগুলি যেন সুউচ্চ চিমনি থেকে নির্গত হয়ে আকাশে উঠে হাজার হাজার কিলোমিটার দূর অবধি ছড়িয়ে পড়ে৷ ফুকুশিমায় গ্রাফাইটের বদলে জল ব্যবহার করে রিয়্যাক্টরের অভ্যন্তরে তথাকথিত চেইন রিয়্যাকশন নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷ ফুকুশিমাতেও চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে একটি ‘তেজস্ক্রিয় মেঘ' মাটি ছেড়ে ৫০০ মিটার উপরে উঠতে পারে৷ তবে সেই ‘মেঘ' আণবিক চুল্লিগুলির ৩০ কিলোমিটারের মধ্যেই মাটিতে নেমে আসবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷ জাপানের সমস্যা হবে প্রশান্ত মহাসাগরের তেজস্ক্রিয় দূষণ৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য