1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতারণার শিকার ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র নাগরিকেরা

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১১ জানুয়ারি ২০২০

‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া' গড়ার ডাক দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ অথচ ডিজিটাল লেনদেন করতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন ভারতীয়রা৷ ক্রমশ বেড়ে চলেছে এই সংখ্যা৷

https://p.dw.com/p/3W24L
Argentinien Buenos Aires Online Shopping
ছবি: Imago Images

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারকে জনতার মাঝে ছড়িয়ে দিতে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া' গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ গত কয়েক বছরে ভারতে মোবাইল সেবার খরচ কমায় অনুকূল পরিবেশও তৈরি হয়েছে৷ এর ফলে বিনোদনের যেমন নয়া মঞ্চ তৈরি হয়েছে, তেমনি ইন্টারনেট ব্যবহার করেবাণিজ্যের সুযোগও বেড়েছে৷ বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইট নানা পণ্যের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছে৷ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করলেই ভার্চুয়াল বিপণিতে হাজির হচ্ছেন ক্রেতা৷ পছন্দের সামগ্রী কেনাকাটার পর অনলাইনেই কার্ড বা নেট ব্যাঙ্কিং ব্যবহার করে দাম মিটিয়ে দিচ্ছেন৷ বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে অর্ডার দেওয়া পণ্যটি৷

বিষয়টি খুব সহজ মনে হলেও এই ডিজিটাল লেনদেনের বিপদও আছে৷ অনলাইনে হাজার হাজার মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন৷ এ কথা স্বীকার করছে খোদ কেন্দ্রীয় সরকারই৷

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ এর আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত অনলাইন শপিং সংক্রান্ত প্রায় ১৪ হাজার প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়েছে৷ লোকসভায় একটি প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানিয়েছেন, এই ধরনের প্রতারণা দিনে দিনে বাড়ছে৷ ২০১৬ এর আগস্ট থেকে ২০১৭ এর মার্চ পর্যন্ত ৯৭৭ জন প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন৷ সেই সংখ্যা এপ্রিল ২০১৭ থেকে মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৪৪১টি৷ তা ক্রমশ বাড়তে বাড়তে গত বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বরে পাঁচ হাজার ৬২০টি প্রতারণার অভিযোগ হয়েছে৷ 

ডিজিটাল লেনদেনে টাকা খোয়ানো শুধু নয়, অনলাইন শপিং সংস্থাগুলি মানুষকে নানাভাবে ঠকাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে৷ অ্যান্টি ভাইরাস সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাকাফির সমীক্ষায় সেই তথ্য উঠে এসেছে৷ তাদের দাবি, প্রায় ৫৪ শতাংশ ভারতীয় প্রতারণার মুখে পড়েছেন৷ প্রতারণার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে উঠে এসেছে ছাড়ের প্রলোভন৷ চিরাচরিত কেনাকাটার বদলে জনতাকে অনলাইন শপিংয়ে আকৃষ্ট করার জন্য সংস্থাগুলির হাতিয়ার বিপুল ছাড়৷ পণ্যের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাংক ও ক্রেডিট কার্ডে ছাড়ের সুবিধা মেলায় অনেক ক্ষেত্রেই বাজারের থেকে ই-কমার্স ওয়েবসাইটে কম দামে জিনিসপত্র মিলছে৷ তা সে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম হোক বা পোশাক, ঘর সাজানোর উপকরণ থেকে মুদিখানার জিনিসপত্র৷ ম্যাকাফির দাবি, শুধু এই ছাড়ের টানে ৫৬ শতাংশের বেশি ভারতীয় প্রতারণার শিকার হয়েছেন৷

‘ক্রেতার স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে আইন আরো কঠোর করা দরকার’

কেনাকাটা ছাড়াও নানা ধরনের সেবার অফার ছড়িয়ে রয়েছে নেট দুনিয়ায়৷ অনেকেই সেই ফাঁদে পা দিয়ে টাকা দিয়ে ফেলেন৷ পরে বুঝতে পারেন, তাঁর টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে৷

ডিজিটাল ইন্ডিয়ার ডাক দেওয়া হলেও সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে ১৯৮৬ সালের একটি আইনই ভরসা৷ তখন ভারতে মোবাইলই আসেনি৷ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সেই ক্রেতা সুরক্ষা আইনে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে চাইছে৷ তাদের বক্তব্য, সব ধরনের পণ্য ও পরিষেবার মতো অনলাইনে কেনাবেচাও এই আইনের মাধ্যমে সুরক্ষিত৷ পশ্চিমবঙ্গের ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তর ক্রেতাদের সচেতন করতে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে৷ দেয়াল লিখন থেকে টিভি রেডিওতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত৷ তাও সচেতনতার অভাবে অনেকেই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন৷

শুধু যে সাধারন মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন, তা নয়৷ দেশের আইন প্রণেতাও এর থেকে রেহাই পাচ্ছেন না৷ পশ্চিমবঙ্গের মালদা উত্তর কেন্দ্রের সাসংদ, নরেন্দ্র মোদীর দলের নেতা খগেন মুর্মু অনলাইনে মোবাইল কিনতে গিয়ে ঠকেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলে একটি মোবাইলের অর্ডার দেয়, বাড়িতে সুন্দর মোড়কে বাক্সটি আসে, কিন্তু খুলে দেখি ভেতরে ইঁট-পাথর৷'' সাসংদের প্রতারিত হওয়ার খবর ফলাও করে তুলে ধরেছিল সংবাদমাধ্যম৷ কেন্দ্রের শাসকদলের এই সাংসদ মনে করেন, ‘‘ডিজিটাল মাধ্যমকে অস্বীকার করা যাবে না৷ কিন্তু ক্রেতার স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে আইন আরো কঠোর করা দরকার৷''

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য