প্রকৃতি রক্ষায় ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তি সই
২০ ডিসেম্বর ২০২২জলবায়ু রক্ষায় জাতিসংঘের উদ্যোগে গতমাসে মিশরে জলবায়ু সম্মেলন কপ২৭ অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ এর একমাস পর মন্ট্রিয়লে জাতিসংঘের উদ্যোগে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷ প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা সম্মেলনটি, যাকে কপ১৫ বলা হচ্ছে, চীনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু করোনার কারণে দেশটিতে বিদ্যমান কঠোর নীতির কারণে সম্মেলনটি ক্যানাডায় অনুষ্ঠিত হয়৷ তবে সম্মেলনের সভাপতির দায়িত্বে ছিল চীন৷
মিশরের জলবায়ু সম্মেলনের এক মাস পর আয়োজিত মন্ট্রিয়ল সম্মেলন নিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের তেমন মনোযোগ ছিল না৷ ফলে সম্মেলন থেকে বেশি কিছু আশা করা হচ্ছিল না৷ তবে চীনের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়া গেছে৷ এতে প্রকৃতি রক্ষায় বেশ কিছু অঙ্গীকার করা হয়েছে, যা বাস্তবায়ন করা বাধ্যতামূলক নয়৷ তারপরও একে ‘ভূমি ও সাগর রক্ষায় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুক্তি' বলে আখ্যায়িত করেছেন ক্যাম্পেন ফর নেচারের পরিচালক ব্রায়ান ও'ডনেল৷ আর চুক্তি সইয়ের পর ক্যানাডার পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘এটি এমন এক মুহূর্ত যা ইতিহাসে লেখা থাকবে, প্যারিসে যেমনটা হয়েছিল জলবায়ুর জন্য৷''
চুক্তিতে যা আছে:
- বর্তমানে বিশ্বের ১৭ শতাংশ জমি ও ১০ শতাংশ সাগর সংরক্ষিত এলাকা বলে ধরা হয়৷ ২০৩০ সালের মধ্যে সংখ্যাটি ৩০-এ নিয়ে যেতে একমত হয়েছেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ৷
- আদিবাসীরা যেখানে বসবাস করেন সেই জমি দেখাশোনার দায়িত্ব তাদেরকেই দিতে হবে৷ বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আদিবাসীদের তাদের জমি থেকে উচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে৷ সই হওয়া চুক্তিতে এই বিষয়টি বন্ধ করতে দেশগুলো একমত হয়েছে৷
- জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নেয়া বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বর্তমানে বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হচ্ছে৷ ২০২৫ পর্যন্ত সংখ্যাটি বাড়িয়ে বছরে ২০ বিলিয়ন ও ২০৩০ পর্যন্ত প্রতিবছর ৩০ বিলিয়ন ডলার করে দিতে সম্মত হয়েছে ধনী দেশগুলো৷ তবে এই টাকা কোথায়, কীভাবে খরচ করা হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়নি৷ তাই অর্থ অপচয়ের আশঙ্কা করছেন সমালোচকেরা৷
- কীটনাশক ও বিপজ্জনক রাসায়নিক ব্যবহারের ঝুঁকি অর্ধেকে নামিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে৷
- পরিবেশের ক্ষতি করে এমন প্রকল্প বাস্তবায়নে দেয়া মোট ভর্তুকির পরিমাণ ৫০০ বিলিয়ন ডলার কমাতে হবে কিংবা ঐ টাকা অন্যখাতে ব্যবহার করতে হবে৷
- ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিবছর তাদের কর্মকাণ্ড জীববৈচিত্র্যের উপর কতটা প্রভাব ফেলছে, সেই প্রতিবেদন দিতে অনুরোধ করা হবে৷ তবে এটা বাধ্যতামূলক নয়৷
প্রতিবেদন: টিম শাওয়েনব্যার্গ/জেডএইচ