1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পোল্যান্ডে যৌন হয়রানির ছবি ঘিরে বিতর্ক

৩ অক্টোবর ২০১৮

ছবির নাম ‘ক্লের' (পাদ্রী)৷ পোল্যান্ডে সবে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি৷ আর মুক্তির সাথে সাথেই নতুন করে শুরু হয়েছে ক্যাথলিক চার্চের ভেতরে যৌন হয়রানির ঘটনা নিয়ে বিতর্ক৷

https://p.dw.com/p/35uxz
Film Kler aus Polen
ছবি: KLER/Bartek Mrozowski

মুক্তি পাওয়ার আগে থেকেই শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছিল ওয়াজিচেক স্মারজোস্কি পরিচালিত ‘ক্লের' ছবিটি৷ কিন্তু মুক্তির পর এত বেশি সাড়া ফেলেছে চলচ্চিত্রটি যে, বিভিন্ন হলে ইতিমধ্যেই দৈনিক প্রায় ২০ বার পর্যন্ত দেখানো হচ্ছে৷ অন্যদিকে,  যে সমস্ত অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে রক্ষণশীল কর্তৃপক্ষ রয়েছে, সেখানের হলগুলিতে ছবিটি দেখানো যাচ্ছে না৷ পাশাপাশি ছবিটি ঘিরে উত্তেজনা থাকায় প্রচারও হচ্ছে ভালোই৷

ছবির বিষয়বস্তু বর্তমানে পোল্যান্ডে বহুলচর্চিত: ক্যাথলিক ধর্মযাজকদের জীবনে অর্থ, ক্ষমতা এবংযৌনতার পাশাপাশি পিডোফিলিয়া অথবা শিশুকামিতাও৷ ছবিটি এমন একটি দেশে দেখানো হচ্ছে, যেখানে মূল জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ নিয়ম মেনে প্রতি রবিবার গির্জায় যান এবং ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ দীক্ষিত ক্যাথলিক৷ সে কারণে আলোচনার সাথে তাল মিলিয়ে হচ্ছে বিতর্কও৷

একদিকে ক্যাথলিক সাংবাদিকদের একটি সংগঠন এই ছবিটিকে ‘ক্যাথলিকবিরোধী' ও ‘পোলিশবিরোধী' আখ্যা দিয়েছে৷ অন্যদিকে উদারপন্থি ক্যাথলিক পত্রিকা উইজ ‘অতিরিক্ত সরল' এবং ‘ক্লিশে' হিসাবে বর্ণনা করেছে৷ তবুও অনেকের মতামত এই যে, এই ছবির হাত ধরেই হয়ত একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানের উপেক্ষিত প্রক্রিয়া অবশেষে শুরু হতে পারে৷

‘‘সাংবাদিক বা চিত্রনির্মাতাদের সাহায্য ছাড়া পিডোফিলিয়ার মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা অসম্ভব ছিল''  বলে পিয়েত্র ক্রিসিয়াক জানান৷ ২০১৭ সালে ক্রিসিয়াক গবেষণায় ছয় বার ডমিনিকান প্রজাতন্ত্রে যাওয়ার পর উইস্পা স্লেপকো ‘দ্য আইল্যান্ড অফ দ্য ব্লাইন্ড' বইটি প্রকাশ করেন৷ সেখানে তিনি পোলিশ যাজক ওয়াজিচিয়েচের সাথে দেখা করেন৷ তিনি তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং ক্যারিবীয় দ্বীপে তাঁর জীবন সম্পর্কে বলেন৷ সেই পুরোহিত নিজের বাড়ির ভেতরেই ছোট ছেলেদের জন্য একটি হোটেল চালাতেন,  যা সেই সময় ক্রিসিয়াকের অদ্ভুত ঠেকেছিল৷

অল্পবয়সি ছেলেদের যৌনহেনস্থার দায়ে ওয়াজিচিয়েচ চার বছর ধরে কারাবন্দি৷ ওয়াজিচিয়েচের হেনস্থার শিকার এমন দু'টি ছেলের সাথে কথা বলেন ক্রিসিয়াক৷ ওয়াজিচিয়েচের হেনস্থার ইতিহাস বিষয়ে ক্রিসিয়াক আরো বলেন, ‘‘তিনি ওয়ারশ'র কাছে মার্কি শহরেও শিশুদের সাথে অভব্য আচরণ করেন, কিন্তু কেউ তা বিশ্বাস করেনি৷''

পোল্যান্ডে ক্যাথলিক গির্জার অভ্যন্তরে ঘটা যৌনহেনস্থা সম্পর্কিতকোনো সরকারী পরিসংখ্যান নেই৷ পোলিশ সংবাদমাধ্যম অনুসারে,  ২০০২ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ২৭জন ক্যাথলিক যাজককে শাস্তি দেওয়া হয়৷ ‘নই লেকজসি সাই' (ভয় পেয়ো না) নামক সংস্থার মতে এমন আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে যা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি৷ সংস্থাটি বর্তমানে ৩০০ জন যৌন নির্যাতনের শিকারকে সাহায্য করছে৷

সাধারণ পোলিশ জনগণের মধ্যে যদিও কিছুই লুকোনো নেই৷ গত সপ্তাহে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত মতামত-জরিপে, উত্তরদাতাদের চার-পঞ্চমাংশ বলেছেন যে, গির্জার ভেতরে শিশুকামিতা বাস্তব সমস্যা৷ প্রায় তিন-চতুর্থাংশ উত্তরদাতা এই বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার দাবি জানান৷

পরিচালক স্মারজোস্কি বিশ্বাস করেন না যে, গির্জার ভেতরে ঘটা অন্যায়ের সমাধান হবে গির্জার ভেতরেই৷ ‘‘ইউরোপের অন্যান্য উদাহরণগুলি আমাদের শেখায় যে,  রাষ্ট্রের চাপ বা ধর্মনিরপেক্ষ কমিশন ছাড়া, গির্জা তার অন্যায়ের ক্ষতিপূরণ দেয় ন,'' বলেন তিনি৷

যদিও আগে স্মারজোস্কি অভিযোগ করেছিলেন যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে যৌনহেনস্থার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ তদন্ত করার সাহস কারো ছিল না, কিন্তু তারপরে ক্রিসিয়াকের বই প্রকাশের পর তা কিছুটা হলেও পালটায়৷

শিশু যৌন নিপীড়নের মামলায় বিপাকে যাজক

সম্প্রতি পোলিশ বিশপ সম্মেলনে এই বিষয়ে তদন্তের পক্ষে ঘোষণা আসে৷ নভেম্বরের মধ্যেই গির্জার ভেতরে যৌনহেনস্থা সম্পর্কে পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে এবং ভবিষ্যতে সমস্ত বিশপদের একই বিষয়ে প্রতিরোধ প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করতে হবে৷

পোল্যান্ডের প্রবীণ আর্চ-বিশপ ওয়াজিশিচ পোলাক গত সপ্তাহে বিশপদের সাধারণ অধিবেশনের শেষে বলেন, ‘‘ধর্মযাজকদের সাথে সাথে সাধারণ মানুষকেও এই বিষয়ে সংবেদনশীল করে তুলতে এবং নিগৃহীত শিশুদের রক্ষার্থে এই সিদ্ধান্ত৷''

‘‘যদি আমরা অন্য দেশের সাথে নিজেদের তুলনা করি, তবে আমাকে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, পোল্যান্ডের এখনো অনেক পথ চলা বাকি,'' বলেন ক্যাথলিক সাপ্তাহিক পত্রিকা টাইগডনিক পোওসচেনির সম্পাদক আর্টুর স্পর্নিয়াক৷

ম্যাগডালেনা গোচ পাল্লোকাট /এসএস

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য