1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজনরওয়ে

পুষ্টির দারুণ উৎস সামুদ্রিক শৈবাল

৯ জুন ২০২২

ইউক্রেন সংকটের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খাদ্য সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে৷ অথচ পুষ্টিকর ‘সুপারফুড' হিসেবে অ্যালজির মতো উদ্ভিদের প্রচলন এখনো সীমিত৷ নরওয়েতে দুই নারী সেই উদ্ভিদ রান্নার জন্য প্রস্তুত করছেন৷

https://p.dw.com/p/4CR78
DW Global 3000 20.01.2020
ফাইল ফটোছবি: DW

সিউইড বা সামুদ্রিক শৈবালকে ‘সুপারফুড' বলা হয়৷ অ্যাঞ্জেলিটা এরিকসেন ও তামারা সিংগার সুমেরু বৃত্তের প্রায় ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সেই অ্যালজি সংগ্রহ করেন৷ অ্যালজি শুধু স্বাস্থ্যকর খাদ্যই নয়, স্বাদেগন্ধেও আকর্ষণীয় হতে পারে বলে মনে করেন অ্যাঞ্জেলিটা৷ তিনি বলেন, ‘‘এই ছোট্ট ঝোপটি হলো ট্রাফল সিউইড৷ কিছুটা বাদামী ও ঘন দেখালেও খেতে কিন্তু ট্রাফলের মতো৷ অসাধারণ৷ ধীরে ধীরে সেই সুন্দর স্বাদ মুখে ছেয়ে যায়৷ দারুণ খেতে৷''

সমুদ্রে প্রায় হাজার প্রজাতির খাবার উপযুক্ত অ্যালজি রয়েছে৷ নরওয়ের উপকূলে ট্রাফল সিউইডের খুব ভালো ফলন হয়৷ যেমন লোফোটেন দ্বীপপুঞ্জে৷

অ্যাঞ্জেলিটা এরিকসেন ও তামারা সিংগার তাঁদের ‘লোফোটেন সিউইড' কোম্পানিতে সামুদ্রিক শৈবালকে রান্নার উপযুক্ত করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছেন৷ ইউরোপের মানুষ ভুলে গেলেও এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে খাদ্য হিসেবে অ্যালজি অত্যন্ত জনপ্রিয়৷ তামারা বলেন, ‘‘আমার মা জাপানি, সামুদ্রিক শৈবাল খেয়েই বড় হয়েছি৷ তাই নরওয়েতে বসবাস করতে এসে সেখানকার সম্ভাবনা দেখে খুব উৎসাহ পেয়েছিলাম৷ উপকূলে এত পরিমাণ অ্যালজি গজায়, অথচ নরওয়ের ঐতিহ্যে সেই উদ্ভিদের কথা পুরোপুরি ভুলে যাওয়া হয়েছে৷''

স্থানীয় অনেক মানুষ সমুদ্রের উপর নির্ভরশীল৷ এই অঞ্চল কড মাছের শুটকির কারণে বিখ্যাত৷ ভাইকিংরাও সেই শুটকি খেতো৷ তখন অ্যালজিও খাওয়া হতো৷ এখানকার সমুদ্র রুক্ষ ও পরিষ্কার৷ সমুদ্র যত উত্তাল হয়, জংলি সিউইড ততই স্বাস্থ্যকর পুষ্টি সংগ্রহ করে৷''

নাপ নামের জেলেদের ছোট্ট গ্রামে এই দুই নারী অ্যালজির ফসল প্রক্রিয়াজাত করেন৷ অ্যাঞ্জেলিটা তার বাবাকে মাছ ধরার কাজে সাহায্য করতেন বলে উপকূল অঞ্চলটি ভালোই চেনেন৷ তিনি বলেন, ‘‘লোফোটেন সিউইডের বৃদ্ধির জন্য আদর্শ জায়গা৷ সুমেরু অঞ্চলের শীতল পানি সত্যি পুষ্টিকর৷ পানি দ্রুত চলাচল করে৷ এখানকার স্রোত বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী হিসেবে পরিচিত৷''

ফসল তোলার পর সবার আগে সিউইড শুকাতে হয়৷ এখানে নয়টি ভিন্ন প্রজাতির অ্যালজি প্রক্রিয়াজাত করা হয়৷ ২৪ ঘণ্টার শেষেই এই সুপারফুড রান্নার উপযুক্ত হয়ে যায়৷ হয় তাজা অবস্থায় সবজি এবং সালাদ হিসেবে কিংবা শুকনা অবস্থায় লবণের সঙ্গে মসলা হিসেবে অ্যালজি খাওয়া যায়৷ তাঁরা তাদের পরীক্ষামূলক রান্নাঘরে আশেপাশের রাঁধুনীদের সঙ্গে মিলে নতুন পদ সৃষ্টি করেন৷

ফরাসি বংশোদ্ভূত রাঁধুনী জোয়াঁ পর-মাদেক ট্রাফেল সিউইড দিয়ে কড মাছের পাস্তা রান্না করেন অথবা ফুলকপির ক্রিমের উপর অ্যালজি চিপস সাজান৷ তিনি বলেন, ‘‘সবকিছুই করা যায়৷ এর টেক্সচার বা গঠন ও স্বাদ নিয়ে খেলা যায়৷ সালাদ তৈরি, মাছ রান্না, সিউইডের মধ্যে মাংসও রান্না করা যায়৷ নানা ধরনের স্বাদ সৃষ্টি করা যায়৷ আমাদের সামনে একেবারে নতুন জগত খুলে যায়৷''

সারা বিশ্বের রেস্তোরাঁ ও বিলাসি খাদ্যের দোকানের মালিক অ্যাঞ্জেলিটা ও তামারার কাছে অ্যালজি অর্ডার দেন৷ ট্রাফেল সিউইডের দাম কিলোগ্রাম প্রতি ৫০০ ইউরো পর্যন্ত হওয়ায় মূলত দামী রেস্তোরাঁগুলিই সেটি কিনতে চায়৷ তাদের কাছে অ্যালজি ভবিষ্যতের খাদ্য৷ এত স্বাস্থ্যকর খাদ্য পাওয়া কঠিন৷ তামারা সিংগার বলেন, ‘‘এটা সত্যি এক সুপারফুড৷ ভিটামিন ও মিনারেলে ভরপুর৷ সেইসঙ্গে অ্যান্টি-ভাইরাল ও অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়ালও বটে৷ পৃথিবীর অন্য যে কোনো উদ্ভিদের তুলনায় প্রতি গ্রাম অ্যালজিতে বেশি নিউট্রিয়েন্ট আছে এবং সেটা বেড়েই চলেছে৷''

অ্যাঞ্জেলিটা এরিকসেন ও তামারা সিংগার প্রতিদিন পানিতে নেমে গোটা বিশ্বের জন্য স্বাস্থ্যকর এই সুপারফুড সংগ্রহ করেন৷

হেন্ড্রিক ভেলিং/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য