পার্থ গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিক্ষোভকারীদের দাবি, চাকরি চাই
প্রায় পাঁচশ দিন ধরে তারা প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর খুশি হয়েও তাদের দাবি, এবার চাকরি দিতে হবে।
গান্ধী মূর্তির নীচে
রোদ-বৃষ্টি-ঝড় উপেক্ষা করে এই শামিয়ানার নীচে আন্দোলনরত কয়েকশ চাকরিপ্রার্থী নারী পুরুষ আজও একটাই আশায় এখানে প্রতিদিন অবস্থান করেন, “একদিন সুবিচার অবশ্যই পাওয়া যাবে। তারা চাকরি পাবেন।
পার্থর বিরুদ্ধে
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের এই আন্দোলন, সেই দফতরেরই সাবেক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে গত শুক্রবার ইডির আধিকারিকরা ২৭ ঘণ্টা তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেফতার করেন। এতে খুশি বিক্ষোভকারীরা। এসএসসি-কেলেঙ্কারি যখন হয়, তখন পার্থ শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তখন থেকেই পার্থর বিরুদ্ধে সোচ্চার বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু তারা এখন অবিলম্বে চাকরি চান।
ববিতার দাবি
২০২১ সালে ব্যক্তিগত ভাবে মামলা করেন ববিতা সরকার। পরবর্তীকালে তিনি জয়ী হন এবং সরকার তাকে চাকরি দিতে বাধ্য হয়। ববিতার মামলার জেরেই ব্যাপারটা ইডি ও সিবিআই পর্যন্ত গড়ায়। পার্থর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমে ববিতা বলেছেন, ''এখন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে আমরা কী কারণে বঞ্চিত হয়েছি। তবে এটা সফল্য কি না জানি না, এটুকু বলতে পারি, কেউই আইনের ঊর্ধে নয়।''
ক্যানসার আক্রান্ত সোমার কথা
এসএসসি দুর্নীতির পাশাপাশি ক্যানসারের মত মারণরোগের বিরুদ্ধেও লড়াই চালাতে হয়েছে সোমাকে। সোমার অবশ্য চাকরি হয়েছে, তবু আন্দোলনের মঞ্চকে ভুলে যাননি সোমা। সোমা আজও সুযোগ পেলে অবস্থান মঞ্চে আসেন। সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ''জানতাম দুর্নীতি হয়েছে, তবে তার শিকড় যে এত দূর বিস্তৃত তা জানতাম না। তবে যদি উনি দোষী সাব্যস্ত হন, কঠিন শাস্তি চাইব।''
চাকরি চান মইদুল
যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের প্রেসিডেণ্ট মইদুল ইসলাম। আন্দোলন চলাকালীন আট দিনের সন্তানের মৃত্যুও দেখতে হয়েছে তাকে। তিনি জানালেন, তারা এই গ্রেপ্তারিতে দুঃখিত নন আবার খুশিও নন। কারণ তারা যে তিমিরে ছিলেন সেই তিমিরেই আছেন। তারা চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পেলে খুশি হবেন।
রাসমণির বক্তব্য
পূর্ব মেদিনীপুরের রাসমণি মাইতির গলায় কান্নার সুর। ''প্রাকৃতিক বিপর্যয়, অর্থনৈতিক সংকট, সামাজিক কটাক্ষ সবকিছু উপেক্ষা করে দিনের পর দিন এই আন্দোলনে অবস্থান করছি। এমন একটা রাজ্যে বাস করি যে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী দুর্নীতির দায়ে ইডির হেফাজতে, এর থেকে লজ্জার কী হতে পারে?''
রুকসানার কাছে আশার আলো
পার্থ চট্টোপধ্যায়ের গ্রেপ্তারিতে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন মালদার রুকসানা খাতুন। বললেন, ''সব দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসুক তবে এর সঙ্গে আমাদের নিয়োগটাও প্রয়োজন।''
কেলেঙ্কারির অংশ, বলছেন মনোজ
মনোজ ঘোষ বললেন, ''সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর এই গ্রেপ্তারিটাও কেলেঙ্কারির একটা অংশ, এটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।''
যারা ঘুষ দিয়েছেন তাদের শাস্তি চান সুদীপ
যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের স্টেট কো-অর্ডিনেটর সুদীপ মণ্ডল বললেন, ''যারা ঘুষ খেয়েছে তারা যেমন অপরাধী, যারা দিয়েছেন তারাও দোষী। তাদের বিচারও আদালতের মাধ্যমেই হোক।''
এবার চাকরি চান তনয়া
নদিয়ার তনয়া বিশ্বাস বললেন, ''দুর্নীতির আর কত প্রমাণ প্রয়োজন? যেখানে মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং স্বীকার করে নিয়েছেন যে দুর্নীতি হয়েছে। ২০১৯ সালে উনি নিজে এসে আমাদের বলে গিয়েছিলেন যে প্রয়োজন হলে আইন বদল করেও আমাদের নিয়োগ করা হবে, কোথায় গেল সেই সব কথা? কাজেই এই গ্রেপ্তারি নিয়ে আমাদের আলাদা কোনও উচ্ছ্বাস নেই। যতক্ষণ না আমাদের চাকরি হচ্ছে আমাদের মুখে হাসি ফিরবে না।''
নিয়োগপত্র চান সুদীপ
মুর্শিদাবাদের সুদীপ সাহার বক্তব্য তার হাতের পোস্টারেই লেখা রয়েছে। জানালেন, ''গ্রেপ্তার, বিচার, জিজ্ঞাসাবাদ সব চলুক, কিন্তু আগে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগপত্রটা দিক''