1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিশ্রম কমাতে পারে ভার্চুয়াল অবতার

১৮ অক্টোবর ২০২১

আধুনিক যুগে সৃজনশীল কাজের চাপ সামলাতে হিমসিম খেলে কোনো কোনো তারকা নিজের ভার্চুয়াল অবতার সৃষ্টির পথ বেছে নিচ্ছেন৷ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিং-এর কল্যাণে সেটা সম্ভব হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/41nWU
ছবি: DW

নিজের বিকল্প ভার্চুয়াল অবতার!

করোনা মহামারির সময় হোম অফিস বা মোবাইল ওয়ার্ক একেবারে নতুন মাত্রা পেয়েছে৷ কাগজেকলমে আমাদের মধ্যে অনেকেই যে কোনো জায়গা থেকে কাজ করতে পারেন৷ তবে নটা-পাঁচটার কাজের দিন শেষ৷ হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের নতুন এক গবেষণা অনুযায়ী অবশ্য নতুন এই স্বাধীনতা বিভ্রান্তিকর৷

বাস্তবে আমাদের কাজের দিন প্রায় দশ শতাংশ বেড়ে গেছে৷ আগের তুলনায় অনেক বেশি সময় অনলাইন থাকতে হচ্ছে৷ ডিজিটাল ডিভাইস দূরে রেখে ঘুমাতেও আমাদের সমস্যা হচ্ছে৷ বাস্তব ও ডিজিটাল জগতের মধ্যে সীমানা আরও কমে চলেছে৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, কঠিন পরিশ্রমের বদলে কীভাবে আরও বুদ্ধিমানের মতো কাজ করতে পারি? 

নিজের বিকল্প ভার্চুয়াল অবতার!

লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের ট্যারিন সাদার্ন একজন ইউটিউব তারকা, পরিচালক, গায়ক ও অভিনেতা৷ গত এক দশক ধরে তার সংগীত ও ভিডিও গোটা বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে৷ কিন্তু বেড়ে চলা খ্যাতি ও অনুরাগীদের সংখ্যার সঙ্গে সঙ্গে আরও ডিজিটাল কনটেন্ট সৃষ্টির জন্য চাপও বেড়ে গেল৷ নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে ট্যারিন বলেন, ‘‘আমি আর পেরে উঠছিলাম না৷ সফল থাকতে হলে ক্রমাগত কনটেন্ট তৈরি করে যেতে হবে৷ কেউ প্রতিদিন কিছু পোস্ট না করলে অ্যালগোরিদম কোনো মায়াদয়া করে না৷ সব প্ল্যাটফর্মেই সেই খেসারৎ দিতে হয়৷ আমি আর সেই অঙ্গীকার করি নি৷ বরং অন্য কিছু করতে চেয়েছি এবং করেওছি৷''

সৃজনশীল সমাধানসূত্রের সন্ধানে ট্যারিন ভবিষ্যতমুখী প্রযুক্তির প্রতি মনোযোগ দিয়েছেন৷ ২০১৮ সালে তার প্রথম মিউডিক অ্যালবাম প্রকাশ করেছিলেন, যেটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সফটওয়্যার ও ডিপ লার্নিং নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তৈরি হয়েছিল৷ ট্যারিন সাদার্ন বলেন, ‘‘এআই ও নিউরো টেকনলজির প্রতি আমার আগ্রহ বাড়ছিল৷ সে সব ক্ষেত্রে প্রায় প্রতিদিনই  অবিশ্বাস্য অগ্রগতি ঘটছে৷ মনে প্রশ্ন জাগলো, সেখানে কী ঘটছে, কোন কাহিনি শোনানো যায়?'' 

২০১৯ সালে ট্যারিনের সব পরিশ্রমের ফল সংকটের মুখে পড়ে৷ কারণ তার থার্ড স্টেজের ব্রেস্ট ক্যানসার ধরা পড়েছিল৷ সেই ধাক্কার পরের অনুভূতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘প্রথম বার আমার মনে নিজেকে এবং নিজের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিল৷ আমি সব সময়ে কঠিন পরিশ্রম করেছি৷ ‘না' বলতে এবং কাজ কমাতে আমার খুব সমস্যা হতো৷ এমন কাজ খোঁজা জরুরি হয়ে উঠেছিল, যা আমাকে প্রতিদিন নিংড়ে না নেয়৷''

করোনা মহামারির মাঝে ট্যারিন নিজের ‘ওয়ার্ক-লাইফ-ব্যালেন্স' নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করতে বাধ্য হলেন৷ তিনি ‘আওয়ার ওয়ান' নামের স্টার্টআপ কোম্পানির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজের এক ডিজিটাল ক্লোন সৃষ্টির কাজে মেতে উঠলেন৷ ভারচুয়াল জগতে নিজের হুবহু নকল সৃষ্টি হলো৷ নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে ট্যারিন বলেন, ‘‘প্রায় দশ মিনিট সময় লেগেছিল৷ একটি ক্যামেরার মাধ্যমে আমার ছবি ও কণ্ঠ ধারণ করে মেশিন লার্নিং প্রোগ্রামে ভরে দেওয়া হলো৷ তারপর এআই ট্যারিনের জন্ম হলো৷''

বোতাম টিপলেই তাঁর সেই ভার্চুয়াল অবতার ভিডিও তৈরি করতে পারে৷ শুধু একটা টেক্সট ভরে দিতে হয়৷ এআই ট্যারিন নানা ভাষা বলতে পারে৷ সে নানা রকম মুখচ্ছবি, লিঙ্গ ও বয়স আত্মস্থ করতে পারে, এমনকি গানও গাইতে পারে৷ ট্যারিন মনে করেন, ‘‘আমাদের সময় আসলে সীমিত সম্পদ৷ আমার এআই ক্লোন তার কিছু অংশ আউটসোর্স করতে পারে৷ দারুণ ব্যাপার!''

করোনা মহামারি সামলাতে বিভিন্ন কোম্পানি যখন ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে ব্যস্ত, সে সময়েই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিং-এর সাহায্যে কৃত্রিম কন্টেন্ট তৈরির ক্ষেত্রেও জোয়ার এসেছে৷ সেইসঙ্গে ভার্চুয়াল অবতারের জনপ্রিয়তাও বাড়ছে৷

আমেলিয়া হেম্পহিল/এসবি