1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গণতন্ত্রের হাওয়া

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২

মিয়ানমারে গণতন্ত্রের হাওয়া বইছে৷ তা বোঝা যাচ্ছে বেশ স্পষ্টভাবেই৷ দেশের রাজনীতি নিয়ে সাধারণত মানুষ নির্বিঘ্নে তাদের মতামত পোষণ করছে৷ কয়েক বছর আগেও যা ছিল অসম্ভব৷

https://p.dw.com/p/143pe
ছবি: REUTERS

এরপাশাপাশি বিরোধী নেত্রী অং সান সু চি'কে নিয়ে তৈরি বিভিন্ন ডকুমেন্টারিও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে৷ আগে যা কল্পনাই করা যেত না৷ মিয়ানমারের প্রতিটি কোনায়, আনাচে-কানাচে পরিবর্তনের সুস্পষ্ট হাওয়া বইছে৷ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সামরিক জান্তা ক্ষমতায় থাকার পর সংস্কারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ৷ প্রায় এক বছর আগে সংস্কারের বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়৷ ইদানিং দেখা যাচ্ছে, সাধারণ মানুষ দেশের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে স্বচ্ছন্দে কথা বলছে, আলাপ-আলোচনা করছে৷ অথচ কয়েক বছর আগেও এসব বিষয় নিয়ে কথা বলা ছিল নিষিদ্ধ৷ কারণ সামরিক জান্তার রোষানলে কেউই পড়তে চাইতো না৷

ইদানিং মিয়ানমারের রাজধানী ইয়াঙ্গনে বিভিন্ন ডিভিডির দোকানে বিরোধী নেত্রী অং সান সু চি'কে নিয়ে তৈরি বিভিন্ন ডকুমেন্টারিও বিক্রি হচ্ছে৷ কোন ধরণের ভয়-ভীতি ছাড়াই এসব ডিভিডি সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য৷

আনোইয়াদার রোড ইয়াঙ্গনের অত্যন্ত ব্যস্ত একটি রাস্তা৷ রাস্তার দু পাশে অসংখ্য দোকান৷ মিয়ানমারের অর্থাৎ এক সময়কার বার্মার এক রাজা ছিলেন আনোইয়াদার৷ তার নামানুসারে রাস্তার নাম রাখা হয়৷ রাস্তার বিভিন্ন দোকানে বিরোধী নেত্রী অং সান সু চি'র পোস্টার সহ, তার ছবি দিয়ে তৈরি লোগো, তার রাজনৈতিক দলের লোগো এবং বিভিন্ন ডিভিডি বিক্রির জন্য দোকান শোভা পাচ্ছে৷ এর মধ্যে একটি হল ফরাসি চলচ্চিত্র পরিচালক লুক বসোঁ'র তৈরি ছবি ‘দ্য লেডি'৷ ২৯ বছরের বিক্রেতা সোয়ি প্রায় কয়েকশ কপি করিয়েছে এবং বিক্রির জন্য তা নিয়ে এসেছে তার দোকানে৷ সোয়ি বলল,‘‘বিক্রি-বাটা বেশ ভাল চলছে৷ প্রতিদিন প্রায় চার থেকে পাঁচশো কপি আমি বিক্রি করছি৷''

Myanmar Aung San Suu Kyi Wahlkampf 2012
মিয়ানমারের প্রতিটি কোনায়, আনাচে-কানাচে পরিবর্তনের সুস্পষ্ট হাওয়া বইছেছবি: REUTERS

একটি ডিভিডির দাম পাঁচশো কিয়াট৷ অর্থাৎ প্রায় ৫৮ ইউরো সেন্ট একটি ডিভিডির দাম৷ সোয়ির জন্য ব্যবসা একেবারে রমরমা৷ তবে ব্যবসা ভাল হচ্ছে কি হচ্ছে না সেটা বড় কথা নয়৷ সে জানাল যে সে অং সান সু চি'র একজন ভক্ত৷ সোয়ির ভাষায়,‘‘আমি অং সান সু চি'র একজন অন্ধ ভক্ত৷ তাকে আমি ভীষণ শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি৷ শুধু আমি একা নই, এরকম চিন্তা ভাবনা আরো অনেকেরই৷ আর এ কারণেই সবাই সু চি'র ডিভিডি কিনছে৷''

অনেকের কাছেই বিশ্বাস হবে না যে অং সান সু চি সত্যিই ইয়াঙ্গনের রাস্তায় কয়েকদিন আগেই নেমেছিলেন৷ সবার ধরা-ছোঁয়ার মধ্যে তিনি চলে এসেছিলেন৷ সাধারণ মানুষের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন৷ তাদের কাছ থেকে ফুলের তোড়া উপহার নিয়েছেন৷

সোয়ি তার ডিভিডি নিয়ে রাস্তার এক কোনায় বসেছে বিক্রির জন্য৷ কয়েক মাস আগেও এসব চিন্তা ভাবনা করা যেত না৷ ‘দ্য লেডি' ছবিটি অরিজিনাল কভারসহ বিক্রি করা সম্ভব হত না৷ যদি তা করা হত তাহলে সঙ্গে সঙ্গে হাজির হত সেনা এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কারাগারে চালান হয়ে যেত সোয়ি৷

গণতন্ত্রের হাওয়া লাগছে মিয়ানমারে৷ এই পরিবর্তনে প্রতিটি নাগরিক খুশি, তারা লুফে নিয়েছে এই সুযোগ৷ অনেকেই আশা করছেন জীবনযাত্রার মান পাল্টাবে৷ এখন সামনে শুধুই সুসময় – এমন কিছুও ভাবছে না সোয়ি৷ সোয়ির আক্ষেপ,‘‘এখানে অনেক কিছুই হচ্ছে কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমার জীবন-যাত্রার মান পাল্টাবে৷ আমি যা আছি, তাই থাকবো৷''

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য