1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পদ্মা সেতুতে রেল চালু করে নৌকায় ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা

১০ অক্টোবর ২০২৩

নৌকা দেশের মানুষের ভাগ্যে পরিবর্তন আনে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷

https://p.dw.com/p/4XMIC
পদ্মা সেতু (ফাইল ফটো)
পদ্মা সেতু (ফাইল ফটো)ছবি: MOHAMMAD PONIR HOSSAIN/REUTERS

মঙ্গলবার পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধন শেষে রেল যোগে ভাঙ্গা পৌঁছে তিনি এ মন্তব্য করেন৷

২০২১ সালে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ার পর ২০২৬ সাল থেকে সেটা কার্যকর হবে বলে জানান শেখ হাসিনা৷ তিনি বলেন, ‘‘সেই কারণেই আপনাদের কাছে আমার আবেদন, এত দিনরাত পরিশ্রম করে এই দেশের যে উন্নতি করেছি, হাজার হাজার মাইল রাস্তাঘাট, গ্রামে গ্রামে কাঁচা রাস্তাঘাট খুব কমই আছে৷ যা আছে আগামীতে তাও (পাকা) করে দেবো৷ রেল সম্প্রসারণ করে দিচ্ছি, নৌপথ ড্রেজিং করে চালু করে দিচ্ছি৷ বিমান পথ চালু করেছি৷ বাংলাদেশে সার্বিকভাবে উন্নয়ন করে আজকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল৷ এটা করতে পেরেছি কেন?

‘‘তার কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছে৷ আজকে নৌকা আপনাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, নৌকা পদ্মা সেতু, রেল সেতু দিয়েছে, রাস্তাঘাটের উন্নতি করেছে, নৌকা আপনাদেরকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-স্কুল দিচ্ছে, নৌকাই এদেশের মানুষের ভাগ্যে পরিবর্তন আনে৷ তাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার যাতে আপনাদের সেবা করতে পারে, আপনাদের কাছে আমার সেই আবেদন থাকল৷''

এসময় বিএনপির রাজনীতির সমালোচনা করেন সরকারপ্রধান৷ তিনি বলেন, ‘‘ওই লুটেরা বিএনপি, যে এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেছে, দুর্নীতি করে সাজাপ্রাপ্ত আসামি, যে পলাতক আসামি, মুচলেকা দিয়ে দেশে ছেড়ে ভেগেছে, অর্থ আত্মসাৎ করেছে, অস্ত্র চোরাকারবারি-এই হলো বিএনপির নেতা৷ আর জামায়াতে ইসলামী হচ্ছে যুদ্ধাপরাধী৷ যুদ্ধে অপরাধের জন্য শাস্তি দিয়েছি৷ এরা দেশকে ধ্বংস করে দেবে৷ এই ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য একমাত্র নৌকায় মার্কাই আপনাদের সব রকম সহযোগিতা দেবে৷ তাই আপনাদের কাছে আমার এই আহ্বান৷''

তিনি আরও বলেন, ‘‘তা ছাড়া আমি জানি এবারে বৃষ্টি হচ্ছে, বন্যা হচ্ছে, নদী ভাঙন৷ নদী ভাঙন আমারে জন্য একটা সমস্যা৷ এই নদী ভাঙন থেকে ফরিদপুর ও শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন এলাকা রক্ষা করার জন্য ইতিমধ্যে আমরা নদী ভাঙন রোধে প্রকল্প গ্রহণ করেছি এবং তার কিছু কিছু বাস্তবায়নও শুরু করেছি৷''

সারাদেশের মানুষের কল্যাণে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘সেই কারণেই আমি আপনাদের এইটুকুই বলব, আজকে পদ্মা সেতুতে রেল আপনাদের উপহার দিয়ে গেলাম৷ আপনারা ফরিদপুরবাসী নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবার আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন৷''

এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে, সেই আহ্বান আবারও দেশের মানুষের প্রতি রাখেন শেখ হাসিনা৷ বলেন, ‘‘বাংলাদেশে এক ইঞ্চি জমি যে অনাবাদি না থাকে৷ আপনারা যা পারেন কিছু ফসল ফলান৷ যা পারেন উৎপাদন করেন৷ নিজের খাবার নিজে উৎপাদন করতে হবে৷ আমি কিন্তু আমার যত অনাবাদি জমি চাষ করা শুরু করে দিয়েছি৷ শুধু তাই না, গণভবনও এখন একটা খামার হয়ে গেছে৷ সেখানেও ধান, হলুদ, মরিচ, পেঁয়াজ-যা যা পারি সব উৎপাদন করি৷ তরি-তরকারি, ফলমূল... কাজেই সবার উৎপাদন বাড়াতে হবে৷ উৎপাদন বাড়িয়ে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিজেদেরকে ঠিক করতে হবে৷ বরং আমরা অনেক দেশকে সাহায্য করতে পারব৷ এটাই আপনাদের কাছে আমার আহ্বান থাকবে৷''

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা যে বিদ্যুৎ দিয়েছি, এই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে অনেক টাকা খরচ হয়৷বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন৷ পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন৷ সেই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশের মানুষের সব ধরনের উন্নয়নের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি৷''

শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণের বিষয়টি তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘‘আমরা বিনা পয়সায় বই দিই, আমরা বৃত্তি দিই, সবাইকে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে৷ প্রত্যেক এলাকায় এলাকায় স্কুল আমরা উন্নত করে দিচ্ছি৷ প্রতিটি জেলা-উপজেলায় আমরা একটা করে কলেজ, একটা করে স্কুল সরকারিকরণ করে দিয়েছি৷ কাজেই আমাদের লক্ষ্য শিক্ষায়-দীক্ষায়, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে আমাদের দেশের ছেলে-মেয়ে উন্নত মানের হবে, যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে-সেইভাবে আমরা তৈরি করতে চাই৷''

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই বাংলাদেশ গড়ে উঠবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আজকে বয়স্ক ভাতা দিচ্ছি, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতা দিচ্ছি, মাতৃত্বকালীন ভাতা দিচ্ছি... যে মা বাচ্চাকে দুধ খাওয়ায়, কর্মজীবী মহিলা, তাদের ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দিচ্ছি৷ আমরা সবার জন্য, যারা ভূমিহীন, তাদের বিনা পয়সায় ঘর করে দিচ্ছি৷ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না, ঠিকানাহীন থাকবে না৷''

ইতিমধ্যে আট লাখ ৪০ হাজার পরিবারকে বিনা পয়সায় ঘর করে দেয়া হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা৷ তিনি বলেন, ‘‘আর একটি মানুষও বাদ থাকলে তাকেও আমরা করে দেবো৷ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য, যারা একটু দুস্থ, বীর নিবাস তৈরি করে দিচ্ছি৷ আমাদের দেশের হিজড়া, বেদে, কুষ্ঠ রোগী, চা-শ্রমিক কেউ বাদ যাচ্ছে না৷''

এমকে/টিএম (দ্য ডেইলি স্টার)