1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পঞ্চায়েত: জেলায় জেলায় বিরোধীদের মার, মনোনয়ন পেশে বাধা

১২ জুন ২০২৩

পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীদের মনোনয়ন পত্র পেশ করতে বাধা, মারধর, সহিংসতা, নথি ছিনতাই।

https://p.dw.com/p/4SSrQ
প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি। ছবি: Satyajit Shaw/DW

সোমবার সারা দিন ধরে মনোনয়নপত্র পেশ করা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় প্রবল অশান্তি হলো। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, বিডিও অফিসের ১০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। মনোনয়নপত্র যাতে নির্বিঘ্নে পেশ করা যায়, তাই এই সিদ্ধান্ত।

কিন্তু মনোনয়নপত্র পেশ করা শুরু হতেই দেখা গেল অন্য ছবি। জেলায় জেলায় বিডিও অফিসের ভিতরে বিরোধীদের মারধর, মনোননপত্র পেশ করতে না দেয়ার ঘটনা ঘটলো।  বিভিন্ন জেলায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা সিপিএম, কগ্রেস ও বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র পেশ করতে দেয়নি বলে অভিযোগ। কোথাও বাইক-বাহিনী নিয়ে গোলমাল করা হয়েছে, কোথাও বাঁশ নিয়ে হাঙ্গামা হয়েছে, কোথায় বিডিও অফিসে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়েছে, কোথাও প্রার্থীদের নথি ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রার্থীকে ধরে মারা হয়েছে। আর এ সবই ধরা পড়েছে টিভির ক্যামেরায়।

পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে বড় সংঘর্ষ হয়।  বড়শূলে সিপিএম প্রার্থীরা  একজোট হয়ে মনোনয়নপত্র পেশ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রচুর তৃণমূল কর্মী বাঁশ নিয়ে আগে থেকে প্রস্তুত ছিলেন। পুলিশের উপস্থিতিতে শুরু হয় মার। কিছুক্ষণ পর গোটা এলাকাটা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পাথর ছোড়া হয়। তিনজন আহত হয়ে হাসপাতালে।

কাকদ্বীপে বিডিও অফিসে ঢুকে মনোনয়নপত্র পেশ করতে কংগ্রেস প্রার্থীকে বাধা দেয়া হয়েছে। । তৃণমূলের কর্মীরা তাদের নথি কেড়ে নেয়।

সকাল থেকেই কাকদ্বীপে উত্তেজনা ছিল। কংগ্রেস প্রার্থী শিবানী দাসকে বিডিও অফিস চত্বরেই বাধা দেয়া হয়। তার মনোনয়নপত্র কেড়ে নেয়া হয়। তারপর বিজেপি কর্মীদের রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

ভাঙড়েও কংগ্রেস প্রার্থীকে বিডিও অফিসের মধ্য়েই মারধর করা হয়। কংগ্রেস প্রার্থী আশরাফ আলি মোল্লার অভিযোগ, প্রথমে তৃণমূলের কর্মীরা তাকে বাধা দেয়। তারপর পুলিশের সাহায্যে বিডিও অফিসে ঢুকলে তাকে মারধর করা হয়।

জামুড়িয়াতে বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়ন পেশে বাধা দেয়া হয়। মারা হয়। বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীদের আটকে দেয়া হয় এবং মারধর করে সব কাগজপত্র কেড়ে নেয়া হয় বলে অভিযোগ। বিজেপি-র অভিযোগ, পুরোটাই করা হয় পুলিশের সামনে।

বাঁকুড়ার সোনামুখিতে বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামিকে তিনবার হেনস্থা করে তৃণমূল কর্মীরা। ফলে বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়ন পেশ করতে পারেনি। মাথা ফেটছে এক বিজেপি প্রার্থীর। এর প্রতিবাদে সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সড়ক অবরোধ করেন।

মিনিখাঁতে তো তৃণমূল কর্মীরা সিপিএমের প্রার্থী অফিস ঘিরে রাখে। ফলে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বেরোতেই পারেননি প্রার্থীরা। বেশ কিছু বাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। সিপিএমের  নেতাদের মারা হয়েছে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সায়নদীপ মিত্র বলেছেন, তৃণমূলের গুণ্ডারা তাদের কর্মীদের বাইক নিয়ে পালিয়েছে। পার্টি অফিসের ভিতরে ঢুকে মারধর করেছে। সবই হয়েছে পুলিশের সামনে।

বীরভূমের কীর্ণাহারে বিডিএ অফিসে যাওয়ার পথে বিরোধী প্রার্থীদের মারধর করা হয়।

জামুড়িয়ায় বিজেপি প্রার্থীকে মারধর করা হয়। মুর্শিবাদাদের ডোমকলে ব্যাপক হাঙ্গামা হয়।

পাণ্ডুয়ায় বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে বিডিও অফিসে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশের।

মনোনয়নপত্র পেশ করার বিষয়টি দেখার জন্য তিনি বিডিও অফিসে ঢুকতে যাচ্ছিলেন। পুলিশ যেতে দেয়নি। লেকেটের প্রশ্ন, নিজের এলাকায় জনপ্রতিনিধিকে ঢুকতে দেবে না পুলিশ?

আদালতে শুনানি

কলকাতা হাইকোর্টে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার দিন বাড়ানো নিয়ে এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে শুনানি হয়।

নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ৯ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র পেশ করার কথা বলা হয়েছিল, তা একদিন বাড়িয়ে ১৬ জুন পর্যন্ত করা যেতে পারে। প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, তাহলে পঞ্চায়েত ভোট ১৪ জুলাই করতে হয়। তিনি বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার জন্য যে সময় দেয়া হয়েছে, তা যথেষ্ট নয়।  তিনি স্পর্শকাতর ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করার কথা বলেন।

জিএইচ/কেএম(পিটিআই, এবিপি আনন্দ, নিউজ১৮)