নোবেল ২০২২: যারা, যে কারণে পেলেন
কোয়ান্টাম বলবিদ্যা, মানবজাতির বিবর্তন আর ক্লিক ক্যামিস্ট্রি নিয়ে গবেষণা করা বিজ্ঞানীরা, সাহিত্যে নতুন দিগন্ত রচনা করা লেখিকা আর মানবাধিকারের মশালবাহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ বছরের নোবেলজয়ী৷ বিস্তারিত জানুন ছবিঘরে৷
যুগান্তকারী গবেষণা
পদার্থে নোবেলজয়ী ফ্রান্সের অ্যালেইন অ্যাসপেক্ট, যুক্তরাষ্ট্রের জন ক্লজার এবং অস্ট্রিয়ার অ্যান্টন সাইলিঙ্গার৷ কোয়ান্টাম বলবিদ্যা নিয়ে এই তিন বিজ্ঞানীর কাজ যুগান্তকারী বলে অ্যাখ্যায়িত করেছে নোবেল কমিটি৷ কিভাবে দুটি অণুকে আলাদা করার পরও একটি অণুর মতো আচরণ করে তা নিয়ে গবেষণা করেন তারা৷ এর ফলাফল কোয়ান্টাম তথ্য ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহারের নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে বলে জানিয়েছে নোবেল কমিটি৷
অজ্ঞাত হোমিনিনের খোঁজে
এ বছর চিকিৎসায় নোবেল পেয়েছেন সুইডিশ বিজ্ঞানী সাভান্তে পাবো৷ তিনি এমন কাজ করে দেখিয়েছেন যা একসময় অসম্ভব বলে মনে হতো৷ কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া নিয়ান্ডারথালদের জিনোম রহস্য উন্মোচন করেছেন তিনি৷ সেইসঙ্গে হোমিনিনের অন্তর্ভুক্ত অজ্ঞাত নতুন প্রজাতি ডেনিসোভারও খোঁজ দিয়েছেন জার্মানির ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউটের এই বিজ্ঞানী৷ তার কাজ মানবজাতির বিবর্তনে নিয়ে গবেষণার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে৷
ক্লিক কেমিস্ট্রির কারিগর
দুইটি অণুকে দ্রুত ও কার্যকরভাবে যুক্ত করার এক কৌশলের নাম ‘ক্লিক কেমিস্ট্রি’৷ কাজটি আগে ছিল ভীষণ জটিল৷ ক্লিক কেমেস্ট্রির ভিত গড়ে সেটিই সহজ করেছেন মার্কিন গবেষক ব্যারি শার্পলেস ও ডেনমার্কের মর্টেন মেলডাল৷ যুক্তরাষ্ট্রের আরেক বিজ্ঞানী ক্যারোলিন বার্টোজি প্রক্রিয়াটি প্রাণীদেহে ব্যবহারের উপায় বের করে গবেষণায় নতুন মাত্রা যোগ করেন৷ ২০০০ সালের পর দ্বিতীয়বারে রসায়নে নোবেল পেলেন শার্পলেস৷
সাহিত্যে নতুন দিগন্ত
সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন ফরাসী লেখিকা আনি এর্নো৷ নোবেল কমিটি তাদের ঘোষণায় বলেছে এর্নো তার লেখায় বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে জেন্ডার, ভাষা ও শ্রেণি বৈষম্যকে তুলে ধরেছেন৷ ১৯৪০ সালে আনি এর্নো ফ্রান্সের লিলবনে জন্ম নেন৷ নিরীক্ষাধর্মী স্মৃতিচারণমূলক লেখার মধ্য দিয়ে তিনি সাহিত্যের নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করেছেন বলে উল্লেখ করেছে নোবেল কমিটি৷
মানবাধিকারের জন্য লড়াই
শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন জেলবন্দি বেলারুশিয়ান মানবাধিকার কর্মী আলিয়্যেস বিয়ালিয়াৎস্কি, রাশিয়ার মানবাধিকার সংস্থা মেমোরিয়াল এবং ইউক্রেনের সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিজ৷ ঘোষণায় বলা হয়েছে, পুরস্কারপ্রাপ্তরা সরকারের সমালোচনা ও নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় বছরের পর বছর কাজ করে চলেছেন৷ যুদ্ধাপরাধ, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যাবহারের দলিল তৈরিতে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন তারা৷
যা পাবেন তারা
চলতি বছর প্রতিটি ক্যাটারগরিতে নোবেলের অর্থমূল্য এক কোটি সুইডিশ ক্রোনা৷ একাধিক বিজয়ীর মধ্যে এই টাকা ভাগ করে দেয়া হবে৷ প্রতি বিজয়ী ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের একটি মেডেল ও একটি দলিলও পাবেন৷ সুইডিশ ও নরওয়েজীয় শিল্পীদের তৈরি প্রতিটি দলিলই একেকটি অনন্য শিল্পকর্ম৷ ১০ ডিসেম্বর পুরস্কার তুলে দেয়া হবে তাদের হাতে৷ (ছবি: ২০০৭ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিনিধি তাসলিমা বেগম৷)