1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নূরের নির্বাচনের সিদ্ধান্তে আমার, আপনার লাভ

২৪ আগস্ট ২০২০

ডাকসুর সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ অনেকেই বলছেন এ নির্বাচনে তিনি জিততে পারবেন না, বা তাকে জিততে দেয়া হবে না৷

https://p.dw.com/p/3hQM0
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan

তারপরও তিনি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ এর মাধ্যমে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় থেকে জাতীয় রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন৷

বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নূর জানিয়েছেন, ‘‘আমরা একটি রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগোচ্ছি৷ সামনে যেহেতু ঢাকার দুটি সংসদীয় উপনির্বাচন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা নিজেদের অবস্থানটাকে আরও ক্লিয়ার করতে চাই৷ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে আমি প্রার্থী হতে চাই৷ ঢাকা-৫ আসনেও আমরা তরুণ প্রার্থী দেব৷’’

এরই মধ্যে দল গঠনের কাজ শুরু করেছেন নূর৷ চলতি বছরের মধ্যেই এই দল আত্মপ্রকাশ করতে পারে৷ সে লক্ষ্যে দলের চারটি সহযোগী শাখা- ছাত্র অধিকার পরিষদ, যুব অধিকার পরিষদ, প্রবাসী অধিকার পরিষদ ও শ্রমিক অধিকার পরিষদ গঠনের কাজ শেষ হয়েছে এবং এখন পেশাজীবী পরিষদ গঠনের কাজ চলছে বলে বিডিনিউজকে জানিয়েছেন তিনি৷

নূরের উপনির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণার কারণে ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হবে৷ কারণ নূর এক অন্যরকম চরিত্র৷ একদিকে তিনি নিজেকে সরকারবিরোধী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছেন, অন্যদিকে একসময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে ছোটবেলায় হারানো তার মায়ের চেহারা ‘খুঁজে পান' বলে মন্তব্য করেছিলেন৷ যদিও এমন মন্তব্য তাকে ছাত্রলীগের কাছে নিয়মিত মার খাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি৷

এত মার খেয়েও অনেকের মতো দমে যাননি নূর৷ এ কারণে অবশ্য অনেকে মনে করেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো যেহেতু বর্তমান সরকারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারছে না, তাই সরকারই রাজনীতি করে নূরকে সরকারের বিরোধিতা করার সুযোগ দিচ্ছে৷ এমনকি এই প্রকল্পের অংশ হিসেবেই তিনি ডাকসু ভিপি হয়েছেন এমনও ভাবছেন অনেকে৷ এর মাধ্যমে সরকার দেখাতে চায়, এখনও দেশে গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ আছে!

Deutsche Welle Süd-Ost-Asien Mohammad Zahidul Haque
জাহিদুল হক, ডয়চে ভেলেছবি: DW

অবশ্য সরকার নূরকে এভাবে বিরোধিতা করার সুযোগ আর কতদিন দেবে, সামনে তা বোঝা যাবে৷ এতদিন যেহেতু নূর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে রাজনীতি করেছেন তাই সরকার তাকে সহ্য করেছে৷ এখন তিনি জাতীয় রাজনীতিতে পা রাখতে চাইছেন, নতুন দল গঠন করতে চাইছেন, তাই তাকে নিয়ে সরকার এখন কী করবে, তার একটা আঁচ পাওয়া যাবে ঢাকা-১৮ উপনির্বাচনকে ঘিরে৷ ভয় পেয়ে নূরকে কি যেনতেন একটা কারণ দেখিয়ে আগেভাগেই নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে, নাকি প্রচারণা চালানোর সময় বিভিন্ন স্থানে তাকে নিয়মিত মারধর করা হবে- সেটা ভবিষ্যতই বলে দেবে৷

অন্যদিকে সরকার সমর্থকেরা অনেক দিন থেকেই অভিযোগ করছেন যে, নূরের আপাত নিরীহ কোটা সংস্কার আন্দোলন বা ছাত্র রাজনীতির পেছনে বিএনপি-জামায়াতের ইন্ধন রয়েছে৷ নির্বাচনের মাঠে নূর তাদের কেমন সমর্থন পান বা বিএনপি-জামাতের পক্ষে প্রার্থী দেওয়া হয় কিনা তাও নিশ্চয়ই দেখা যাবে৷

সবমিলিয়ে এই উপনির্বাচন যে আর পাঁচ সাতটা উপনির্বাচনের চেয়ে বেশি আলোচিত হতে যাচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই৷ তাই আমার মতো আপনারাও যারা এই আসনের ভোটার নন, তারা দূর থেকে নূর বনাম সরকার খেলা দেখে মজা নেয়ার চেষ্টা করতে পারি, এই আর কী!

২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিলের ছবিঘরটি দেখুন...