নির্বাচনের আগে ঐক্যের ডাক
২২ জানুয়ারি ২০১৩ইসরায়েলে সংসদ নির্বাচন৷ এমন নির্বাচনের আগে যেমন উত্তেজনা থাকার কথা ঠিক তেমন আবহই এখন ইসরায়েলে৷ ভোটের আগের জরিপ বলছে, নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টিই জিতবে, তবে জিতলেও সেই জয় আসবে খুব কষ্টেসৃষ্টে৷
খুব চমকে দিয়েছেন নাফতালি বেনেট৷ তাঁর দল হোম পার্টি যেন হঠাৎ করেই ঢুকে পড়েছে ভোটারদের মনে৷ বেনেটের আশা, মঙ্গলবারের নির্বাচনেও জনগণ তাঁর পাশে থাকবে, এককভাবে তাঁর দল ক্ষমতায় যেতে না পারলেও ক্ষতি নেই, তিনি জোট সরকারের অংশ হতেও রাজি৷ সেক্ষেত্রে নেতানিয়াহুর সঙ্গেই হাত মেলাতে হবে তাঁকে৷ হাত বাড়ালে ইসরায়েলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীরও ক্ষতি নেই, ক্ষমতায় তো নেতানিয়াহু থাকছেনই৷ কিন্তু জোট সরকারে যে তাঁর রাজনৈতিক ক্ষমতা কিছুটা হলেও লোপ পাবে সেটা খুব ভালো করেই জানেন নেতানিয়াহু৷ সে কারণেই তিনি মনেপ্রাণে চান তাঁর দল লিকুদ পার্টি আবার সরকার গঠন করুক৷ সোমবার এক ভাষণে তাই তিনি ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এক হয়ে ইসরায়েলকে এগিয়ে নেয়ার কাজে তাঁকে সহায়তা করার৷ সেটা করার একটাই উপায় আর তা হলো লিকুদ পার্টিকে ভোট দেয়া৷
নেতানিয়াহুর লিকুদ আর বেনেটের হোম পার্টি দুটোই দক্ষিণপন্থী দল৷ আদর্শগতভাবে তেমন কোনো পার্থক্য নেই৷ ফিলিস্তিনে ইহুদি বসতি নির্মাণ প্রসঙ্গে দুই নেতা এবং তাঁদের দলেরও দৃষ্টিভঙ্গি এক৷ সোজা কথায়, মোটা দাগে তেমন কোনো পার্থক্য নেই দল দুটির মধ্যে৷ তাই নির্বাচনের আগের জরিপে হোম পার্টির চেয়ে জনগণও সামান্যই এগিয়ে রেখেছে নেতানিয়ানহুর লিকুদকে৷
ভাষণে দলের জয় সম্পর্কে আশার কথাই শুনিয়েছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু৷ বলেছেন, ‘‘আমার মনে কোনো সন্দেহই নেই যে শেষ মুহূর্তে অনেকেই লিকুদ ইসরায়েল বেতিয়েনুর ঘরে আসার সিদ্ধান্ত নেবেন৷ এটা ভাবতে আমার ভালোই লাগছে৷ তবু আমি শেষ মুহূর্তে ইসরায়েলের প্রত্যেকটি মানুষকে অনুরোধ করবো, আপনারা ব্যালট পেপার হাতে নেয়ার আগে সিদ্ধান্ত নিন, বিভক্ত, দুর্বল ইসরায়েল চান, নাকি ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী ইসরায়েল?''
সে সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের জনগণ নেবেন আজ মঙ্গলবার৷ অন্যান্য প্রার্থীদের দিকেও নজর থাকবে তাঁদের৷ তবে সবার মনোযোগ এখন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং নাফতালি বেনেটের দিকেই৷ দু'জনের মাঝে মিলও অনেক৷ দুজনই সাবেক সেনা কর্মকর্তা৷ অ্যামেরিকানদের মতো করে ইংরেজি বলেন দুজনই৷ নেতানিয়াহু স্কুল এবং কলেজ পর্বের লেখাপড়া সেরেছেন যুক্তরাষ্ট্রে৷ আর বেনেটের ইংরেজী তো মার্কিনীদের মতো হবেই, কেননা, তাঁর জন্মই যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে৷ বাবা-মা সেখান থেকে চলে আসায় তিনি এখন ইসরায়েলি৷ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দুজনের সবচেয়ে বড় যে মিলটা চোখে পড়ছে সেটা ফিলিস্তিনের দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি নির্মাণের ব্যাপারে৷ নির্বাচনি প্রচারণায় দু'জনই বলেছেন, সে অঞ্চলে ইহুদিদের ঘর-বাড়ি তৈরিতে ছেদ টানার কোনো ইচ্ছে তো নেই-ই, বরং ক্ষমতায় গেলে কাজটি আরো ভালোভাবে করবেন তাঁরা৷ এত মিলের মধ্যে বড় পার্থক্য নেতানিয়াহুর অভিজ্ঞতা৷ দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতার ওপরই ইসরায়েলের জনগণ শেষ পর্যন্ত বেশি আস্থা দেখাবেন বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান৷
এসিবি/এসি (রয়টার্স, এএফপি)