হামলার ষড়যন্ত্র
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪৮০০-র বেশি পুলিশ কর্মী ও কর্মকর্তা ২৫টি তল্লাশি পরোয়ানা নিয়ে সিডনি এবং ব্রিসবেনের বহু বাড়ি ও ফ্ল্যাটে হানা দেন৷ অভিযানে একটি বন্দুক ও একটি তরোয়াল বাজেয়াপ্ত করা হয়৷ ওমরজান আজারি নামধারী এক ২২ বছরের যুবককে সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত গুরুতর অপরাধের দায়ে সিডনির একটি আদালতে হাজির করা হয়৷ আদালত আজারিকে রিম্যান্ডে দিয়েছেন৷
পুলিশ জানায় যে, আজারির উপরে নির্দেশ ছিল, অস্ট্রেলিয়ায় কোনো নির্দোষ পথচারীর শিরশ্ছেদ করে, সেই ভিডিও মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামিক স্টেটের কাছে পাঠানোর৷ নির্দেশটা দৃশ্যত এসেছিল ইসলামিক স্টেট (আইএস বা আইসিস) জঙ্গি গোষ্ঠীর সর্বোচ্চ অস্ট্রেলীয় সদস্যের কাছ থেকে৷ এই মহম্মদ আলি বারিয়ালেই আগে সিডনি-র বার-ডিস্কোথেকে বাউন্সারের কাজ করত, এবং সে অভিনয়ও করে থাকে; যুগপৎ সে ইসলামিক স্টেটের হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যোদ্ধা সংগ্রহ করত৷ দু'দিন আগে তার একটি টেলিফোন কল থেকে সম্ভাব্য সন্ত্রাসের খবর পায় অস্ট্রেলীয় পুলিশ: যে সন্ত্রাস অস্ট্রেলীয় সমাজকে ‘‘বিস্মিত, বিমূঢ় ও আতঙ্কিত'' করত, বলে জানিয়েছে এবিসি বা অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন৷
পুলিশ স্বয়ং সম্ভাব্য সন্ত্রাসের খুঁটিনাটি ব্যক্ত না করলেও, এবিসি সংস্থা উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদের সূত্রে যা জানিয়েছে, তা থেকে স্পষ্ট যে, আজারি ও তার দলবলের প্রতি নির্দেশ ছিল, সাধারণ জনতার কাউকে ধরে প্রকাশ্য রাজপথে তার মুণ্ডচ্ছেদ করে, সেই ভিডিও ইসলামিক স্টেটের কাছে পাঠানো৷ এই বিভীষণ হত্যাকাণ্ড সম্ভবত ঘটত সিডনি কিংবা মেলবোর্নে৷ নিউ সাউথ ওয়েলস-এর পুলিশ কমিশনার অ্যান্ড্রু সিপিওনে রিপোর্টারদের বলেন যে, পুলিশি অভিযানের ফলে একটি ‘‘আসন্ন সন্ত্রাসী আক্রমণ'' রোধ করা সম্ভব হয়েছে৷ অ্যাক্টিং পুলিশ কমিশনার অ্যান্ড্রু কলভিন জানিয়েছেন, সাধারণ জনতার উপর ‘‘নির্বিচার আক্রমণের'' পরিকল্পনা ছিল৷ অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবট সরাসরি ‘‘ডেমনস্ট্রেশন কিলিং'' বা ‘‘প্রকাশ্য হত্যাকাণ্ডের'' কথা বলেছেন৷
অ্যাবটকে দৃশ্যত বারিয়ালেই-এর ফোন কল সম্পর্কে জানানো হয়েছিল৷ ‘‘এটা শুধু সন্দেহ নয়, এটা একটা পরিকল্পনা ছিল,'' বলেছেন অ্যাবট – যে কারণে পুলিস ও নিরাপত্তা বিভাগ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়৷ ‘‘আমি বলতে দুঃখিত যে, এই লোকগুলো আমরা যা করছি, সে জন্য আমাদের বিরোধী নয়৷ আমরা যা, এবং আমরা যেভাবে বাঁচি, সেটাই তাদের চক্ষুশূল,'' যোগ করেছেন অ্যাবট৷ বর্তমানে প্রায় ৬০ জন অস্ট্রেলীয় আইএস-এর জিহাদিদের পাশাপাশি সক্রিয়, বলে অস্ট্রেলিয়া সরকারের খবর৷ আরো প্রায় একশো অস্ট্রেলীয় স্বদেশে থেকেই আইসিস-এর প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে ও সর্বপ্রকারে সাহায্য করার চেষ্টা করছে৷
এসি/এসবি (ডিপিএ, এএফপি)