নিজভূমে পরবাসী
আরব বসন্তের তিন বছর পরও লিবিয়ার তাওয়ারঘা অঞ্চলের মানুষগুলো বাড়িতে ফিরতে পারেনি৷ তাওয়ারঘা এখন ভূতুড়ে শহর৷ এলাকা ছেড়ে গিয়ে মানুষগুলো অন্য কোনো জায়গাতেও বাড়ি তৈরি করতে পারছেন না৷ এ নিয়েই আমাদের আজকের ছবিঘর৷
এখনো ভূতুড়ে শহর
২০১১ সালের গৃহযুদ্ধের শেষ দিকে তাওয়ারঘা শহরকেই ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন মুয়াম্মার গাদ্দাফি৷ এক পর্যায়ে তাওয়ারঘা দখল করে নেয় বিদ্রোহীরা৷ গাদ্দাফির নির্যাতনের প্রতিশোধ হিসেবে স্থানীয়দেরই বেছে নেয় তারা৷ পার্শ্ববর্তী মিসরাতার ওপর কয়েক মাস ধরে চলা হামলা-নির্যাতনের জন্য দায়ী করে তাওয়ারঘাবাসীদের ওপরও চালানো হয় হামলা৷ হামলা থেকে বাঁচতে দলে দলে এলাকা ছাড়ায় তাওয়ারঘা এখনো ভূতুড়ে শহর৷
কন্টেইনারে বসবাস
ত্রিপোলি বিমানবন্দরের কাছের একটি শিবির৷ এখানে অনেক শরণার্থীকে ভবন নির্মাণের কাজে লাগানোর জন্য নিয়ে আসা প্লাস্টিক আর লোহার কেবিনে বাস করতে হয়৷ এক সময় এখানে বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির পরিকল্পনা ছিল৷ এলকাটি পার্ক, ছোট ছোট সেতু আর শপিং মলে ঘেরা৷
হামলার শিকার আল-ফালাহ ক্যাম্প
গত ১৬ই নভেম্বর আল-ফালাহ শিবিরে আকস্মিকভাবে ঢুকে পড়ে তিন অস্ত্রধারী৷ আবু মুনতালিবসহ তিনজনের ওপর গুলি চালায় তারা৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার আগের দিন তিন জন লোক আল-ফালাহ শিবিরে এসে সেখানে তাওয়ারঘার কেউ থাকে কিনা জানতে চেয়েছিল৷
ক্রোধ আর হতাশা
ভদ্রমহিলা চিৎকার করে বলছিলেন, ‘‘আমাদের সব সময় ‘গাদ্দাফিপন্থী’ বলে ডাকা হয়৷ গায়ের রংয়ের জন্যও ওরা আমাদের ঘৃণা করে৷’’ এর কয়েক ঘণ্টা আগে তাঁর ভাইকে অপহরণ করে মিসরাতার বেসামরিক বাহিনী৷
অস্থায়ী স্কুল
প্রায় চারশ শিক্ষার্থী রয়েছে ত্রিপোলির জানজৌর শিবিরের এই স্কুলে৷ লিবিয়া সরকার শরণার্থীদের জন্য ৫০০ ঘর তৈরি করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে৷ তাওয়ারঘার স্থানীয় প্রশাসনের কর্মীদের পরিবারগুলো সরকারের এই উদ্যোগকে প্রত্যাখ্যান করেছে৷
আশার আলো নেই
ত্রিপোলি বিমানবন্দরের কাছের একটি শিবিরের মুখপাত্র মাবরুক সুয়েসি (বাঁ দিকে)৷ তাঁর পাশেই দেখা যাচ্ছে জালিয়া সালেমাকে৷ গত নভেম্বরে জালিয়ার ছেলেকে অপহরণ করা হয়৷ সেই থেকে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই জালিয়ার৷ মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সার্বিক পরিস্থিতিকে ‘মানবতাবিরোধী চলমান অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে৷
ঘা শুকাতে সময় লাগবে
বাস্তুচ্যূতদের জন্য বিশেষ কার্যালয়ের প্রধান ওয়াফা এলনাস৷ তাওয়ারঘা ছেড়ে আসা মানুষগুলো শিগগিরই নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারবেন বলে তিনি মনে করেন না৷ তিনি মনে করেন, তাওয়ারঘা থেকে যাঁরা চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরাও জানেন, এখন যে তাঁদের ঘৃণা করা হচ্ছে এর পেছনে অতীতে মিসরাতায় পরিচালিত তাঁদের কিছু কর্মকাণ্ডের অবদান রয়েছে৷ ওয়াফা এলনাসের ধারণা, এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে৷