নিজদেশে ফিরে এলো মৎস্যকন্যা
২২ নভেম্বর ২০১০ডেনমার্কের প্রতীক এই মৎস্যকন্যাই বিশ্বদরবারে তুলে ধরেছে দেশটিকে৷ তার ৯৭ বছরের ইতিহাসে এই মার্চ মাসে প্রথমবারের মতো কোপেনহেগেনের পোতাশ্রয় থেকে তার মূর্তি নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো সাংহাই এর ওয়ার্ল্ড এক্সপো প্রদর্শনীতে৷ তাই প্রদর্শনী শেষে আবার যখন হান্স ক্রিস্টিয়ান আন্ডারসেন'এর রূপকথার মৎস্যকন্যার মূর্তিটি ফিরিয়ে আনা হলো, কোপেনহেগেনে ঢল নেমেছিলো পর্যটকদের৷ পতাকা নিয়ে এবং ঢাকঢোল বাজিয়ে তাকে স্বাগত জানালো ডেনিমার্কবাসীরা৷ মূর্তিটির সামনে দাড়িয়ে কোপেনহেগেনের মেয়র ফ্রাঙ্ক ইয়েনজেন বললেন, ‘‘ যদিও আমরা তোমাকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরে গর্ববোধ করেছিলাম, কিন্তু আমরা তোমার অনুপস্থিতি অনুভব করেছি৷ ডেনমার্ক তোমার অভাব অনুভব করেছে৷ সারা বিশ্বের যেসব পর্যটক এখানে এসেছে তারাও তোমার অভাববোধ করেছে৷'' এরপর মেয়র, ঘরে ফেরা উপলক্ষ্যে একটি লাল গোলাপ উপহার দেন মৎস্যকন্যাকে৷
মৎসকন্যাকে ডেনমার্কের জাতীয় সম্পদ হিসেবে মনে করেন ডেনিশরা৷ ছয় মাসব্যাপী সাংহাই এর আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে মৎস্য কন্যার মূর্তিটি পাঠানো হলে তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছিলো ডেনমার্কে৷ কোপেনহেগেনের জনমত জরিপ দেখা গেছে, বেশিরভাগ কোপেনহেগেনবাসী মূর্তি পাঠানোর ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছিলো৷ বিষয়টি স্বীকার করে ইয়েনজেন জানালেন, ক্ষুব্ধ ডেনমার্কবাসীদের কাছ থেকে অনেক ই-মেইলও পেতে হয়েছে তাকে৷
মৎস্যকন্যার অনুপস্থিতি অনুভব করেছেন লেনে হানজেনের মতো কোপেনহেগেনের অনেকেই৷ বার্তা সংস্থা এএফপি'কে এই বৃদ্ধা জানান, প্রতিদিন পোতাশ্রয়ের সেই জায়গাটিতে তিনি এসেছেন৷ তাই মৎস্যকন্যা ফিরে আসায় তিনি বলছেন, ‘‘তাকে আবারও দেখতে পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত, এবং কেবল আমি নই৷'' তাঁর কথায় সায় দিয়ে লনে পেটারজেন বললেন, মৎস্যকন্যাকে আবারও আগের জায়গায় দেখতে পেয়ে তাঁর অনেক ভালো লাগছে৷ তিনি বলেন, ‘‘শহর কর্তৃপক্ষ কেন যে এমন অবিবেচকের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো আমি এখনও বুঝতে পারিনা৷ তার জায়গা কোপেনহেগেনে৷ শাহাই বা অন্য কোথাও নয়৷''
কিন্তু মেয়র বলছেন, মে মাসের ১ তারিখ থেকে শাংহাই এর আন্তর্জাতিক এক্সপো প্রদর্শনীর অন্যতম আকর্ষণ ছিলো ডেনিশ প্যাভিলিয়নের মৎস্যকন্যা৷ অর্ধকোটির বেশি মানুষ সেইসময় ডেনমার্কের প্যাভিলিয়নে ভিড় জমিয়েছিলো আন্ডারসেনের রূপকথার নায়িকাকে একনজর দেখতে৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক