নাসার ৬০ বছরের ইতিহাসের ছয় উল্লেখযোগ্য ঘটনা
নাসার প্রতিষ্ঠার ৬০ বছর পূর্তিতে ডয়চে ভেলে ছয়টি ঘটনার কথা তুলে ধরছে যা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা হিসেবে নাসাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়৷
এক্সপ্লোরার ১ – নাসার চেয়েও পুরনো
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৫৭ সালে মহাকাশে স্পুটনিক স্যাটেলাইট পাঠায়৷ তখন অবধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠাতে সক্ষম হয়নি৷ ফলে সোভিয়েত ইউনিয়ন এইদিক থেকে এগিয়ে যায় এবং মহাকাশে সোভিয়েত আধিপত্যের শঙ্কা সৃষ্টি হয়৷ পরের বছরই অবশ্য মার্কিন সেনাবাহিনী এক্সপ্লোরার ১ (ছবিতে দেখা যাচ্ছে) মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম হয়৷ আর সেবছরের ২৯ জুলাই মার্কিন কংগ্রেসে নাসা সৃষ্টির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়৷
চাঁদে মানুষ
১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই চাঁদের বুকে মানুষের পায়ের ছোয়া পড়ে৷ সৃষ্টির ১১ বছরের মাথায় এই সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয় নাসা৷ সেসময় বর্তমান কালের স্মার্টফোনের চেয়েও অনেক কম ক্ষমতার ‘কম্পিউটিং পাওয়ার’ ব্যবহার করে সেই মিশন সফল করতে সক্ষম হয়েছিল মহাকাশ সংস্থাটি৷ ছবিতে নিল আর্মস্ট্রং এবং এডউইন অলড্রিনকে চাঁদের মাটিতে মার্কিন পতাকাযুক্ত খুঁটি বসাতে দেখা যাচ্ছে৷
‘হুস্টন, উই হ্যাভ হ্যাড এ প্রব্লেম’
১৯৭০ সালের ১৪ এপ্রিল অ্যাপোলো ১৩ মহাকাশযানের একটি অক্সিজেন ট্যাংকে বিস্ফোরণ ঘটে৷ সেসময় মহাকাশচারী জেমস লাভেল (মাঝখানে) টেক্সাসে নাসার ঘাঁটিতে সমস্যার কথা জানা৷ এক ঝুঁকিপূর্ণ সংষ্কার অভিযানের পর অবশ্য দলটি পৃথিবীতে ফিরতে সক্ষম হয়৷ পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অ্যাপোলো ১৩’ ছবিতে লাভেলে’র ‘হুস্টন, উই হ্যাভ হ্যাড এ প্রব্লেম’ বাক্যটি কিছুটা ভুলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছিল, যা বিখ্যাত হয়ে যায়৷
রাবার সিলের কারণে মৃত্যু
‘চ্যালেঞ্জার স্পেস শ্যাটলটি’ অবশ্য ‘অ্যাপোলো ১৩’-র মতো ভাগ্যবান ছিল না৷ ১৯৮৬ সালের ২৮ জানুয়ারি সেটি উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিট পরই বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে যায়৷ ফলে মারা যায় সেটির সব মানে সাত আরোহী৷ প্রখ্যাত মহাকাশচারী রিচার্ড ফিমান মনে করেন, সামান্য এক রাবার সিলের কারণে, যেটি অপ্রত্যাশিত ঠান্ডা তাপমাত্রায় ঠিকভাবে কাজ করেনি, মহাকাশযানটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছিল৷
বৈরিতার সমাপ্তি
রুশ এবং মার্কিন বিজ্ঞানীদের মধ্যে শীতলযুদ্ধের সময়ে সৃষ্ট রেষারেষির চূড়ান্ত অবসান ঘটে ১৯৯৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর৷ সেদিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ইউনিটি মডিউল এবং রাশিয়ায় তৈরি জারিয়া মডিউল মহাকাশে যুক্ত হয়৷ এই দুই মডিউলের মাধ্যমে মহাকাশে বর্তমানে পরিচিত আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা হয়৷
মঙ্গলে নাসা
মঙ্গলে ২০১২ সালের ৬ আগস্ট নাসার কিউরিওসিটি রোভার অবতরণ করে৷ এই মোবাইল গবেষণাগারটি এখনো মঙ্গল গ্রহ থেকে বিজ্ঞানিক তথ্যউপাত্ত এবং সেলফি পাঠাচ্ছে, এমনকি টুইটও করছে৷ কিউরিওসিটির পাঠানো তথ্যউপাত্ত নাসার পরবর্তী মিশনের প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে৷ ২০৩০ সালের দিকে মঙ্গলে মানুষ পাঠাতে চায় মার্কিন মহাকাশ সংস্থাটি৷