নাচোলের আলপনা গ্রাম
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলা৷ এখানকার একটি গ্রামের সব নারীরাই শিল্পী৷ তাঁদের শিল্পকর্মের ছোঁয়া সেখানকার প্রতিটি বাড়ি ঘরেই দেখা যায়৷ দেখুন ছবিঘরে৷
আলপনা গ্রাম
তেভাগা আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেত্রী ইলা মিত্রের স্মৃতিধন্য নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের গ্রাম টিকইল৷ এ গ্রামটিকে সবাই এখন চেনেন ‘আলপনা গ্রাম’ হিসেবে৷ হিন্দু-অধ্যুষিত এ গ্রামের প্রতিটি বাড়ির দেয়ালে দেয়ালে শোভা পায় হাতে আঁকা নানা আলপনা৷
আলপনার কারিগর
টিকইল গ্রামের আলপনার মূল কারিগর হচ্ছেন এ গ্রামের গৃহিণী আর মেয়েরা৷ বংশ পরম্পরায় বছরের পর বছর বাড়ির দেয়ালে দেয়ালে এ ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছেন তাঁরা৷
দেয়ালই যাঁদের ক্যানভাস
নাচোলের আলপনা গ্রামের প্রতিটি বাড়ির দেয়ালই যেন একেকটি ক্যানভাস৷ মাটির তৈরি এ সব বাড়ির ভেতরের-বাইরের কোনো দেয়ালই বাদ পড়ে না তুলির আঁচর থেকে৷ রান্নাঘর থেকে শোবার ঘর, প্রতিটি দেয়ালই মেয়েরা ভরে ফেলেন হাতে আঁকা আলপনায়৷
আলপনায় আশীর্বাদ
টিকইল গ্রামের নারীরা বাড়ির দেয়ালে দেয়ালে আলপনা এঁকে বাড়ির সৌন্দর্যবর্ধনের সঙ্গে সঙ্গে দেবতার সুদৃষ্টি ও আশীর্বাদ কামনা করে থাকেন৷
পূজা-পার্বণে
টিকইল গ্রামের নারীরা বাড়ির দেয়ালগুলোতে সবচেয়ে বেশি আলপনা আঁকেন পূজা-পার্বণ উপলক্ষ্যে৷ এ সব বর্ণিল আলপনা বছর ধরে শোভা পায় দেয়ালজুড়ে৷
আলপনা স্থায়ী করতে
বাড়ির দেয়ালে আঁকা আলপনা স্থায়ী করতে রং-ও তৈরি করেন অনেক গৃহিনী৷ শুকনো বড়ই, আম আঁটির শাঁস চূর্ণ, চকগুঁড়া, মানকচু ও কলাগাছের কস বিভিন্ন রঙের সঙ্গে মিশিয়ে তাঁরা নিজেদের মতো রং তৈরি করেন৷ ওই রঙে আঁকা আলপনা সারা বছর টিকে থাকে মাটির দেয়ালে৷
এক ক্ষুদে আলপনা শিল্পী
স্কুল পড়ুয়া রীমা বর্মন মা এবং দাদির আঁকা দেখে দেখে আলপনা আঁকতে শিখেছে৷ তাই কোনো উৎসব এলেই তার ব্যস্ততা বেড়ে যায় রং-তুলি নিয়ে৷ তার বয়সি গ্রামের অনেক মেয়েকে আলপনা আঁকার তালিমও দেয় সে৷