সন্ত্রাসী হামলার বর্ষপূর্তি
২২ জুলাই ২০১২রাজধানী অসলোর সেই সরকারি ভবনটি এখনও আগের মতো রয়ে গেছে যেটিতে গত বছরের ২২ জুলাই প্রথম বোমা হামলা চালিয়েছিলেন ব্রাইভিক৷ বোমার আঘাতের ক্ষতচিহ্ন সম্বলিত ভবনটির সামনে আজ সমবেত হন হাজার হাজার মানুষ৷ উপস্থিত ছিলেন নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইয়েন্স স্টলটেনব্যার্গ৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন নরওয়ের রাজা পঞ্চম হ্যারাল্ড৷ তাঁরা সকলে শ্রদ্ধা জানান সেদিনের নিহত ৭৭ জন মানুষের প্রতি৷ সমবেদনা প্রকাশ করেন হতাহতদের স্বজনদের জন্য৷ নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানানোর সময় সমবেতদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, সেদিন যে উদ্দেশ্যে ঘাতক হামলা চালিয়েছিলো সেটা ব্যর্থ হয়েছে৷ মানুষের জয় হয়েছে৷ এর আগে এক সাক্ষাৎকারে স্টলটেনব্যার্গ বলেছিলেন, ‘‘২২ জুলাইয়ের হামলার মূল লক্ষ্য ছিলো আমাদের উদার ও গণতান্ত্রিক সমাজ৷ তাই এই সন্ত্রাসী হামলার জবাব হলো আরও উদারতা এবং গণতন্ত্র৷ আমি মনে করি সেটা আমরা করতে পেরেছি৷ এখন আরও মানুষ রাজনৈতিক বিতর্কে অংশ নিচ্ছে৷ হাজার হাজার মানুষ রাজনৈতিক দল, যুব সংগঠনে যোগ দিয়েছে৷''
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ জুলাই ব্রাইভিকের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় কেবল নরওয়ের ৫০ লাখ মানুষই স্তব্ধ হয়ে পড়েনি, হতবিহ্বল হয়ে পড়ে গোটা বিশ্ব৷ সেদিন প্রথম অসলোর সরকারি ভবনে বোমা হামলা চালান ব্রাইভিক৷ এতে নিহত হয় আট জন মানুষ৷ নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে এরপর তিনি যান পাশের উটোয়া দ্বীপে যেখানে চলছিলো যুব সংগঠনের কর্মসূচি৷ ঠান্ডা মাথায় একের পর এক মানুষকে গুলি করে মারতে শুরু করেন তিনি৷ নারী-পুরুষ, শিশু-তরুণ কোন বাছ বিচার না করেই হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যান৷ মোট ৬৯ জন প্রাণ হারায় তার গুলিতে৷ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরও কোন বিকার দেখা যায়নি তার মধ্যে৷
এই হত্যাযজ্ঞের আগে ইন্টারনেটে এক ঘোষণাপত্রে নিজের আদর্শের কথা প্রচার করেন আন্ডার্স বেরিং ব্রাইভিক৷ তাতে উগ্র খ্রিষ্টীয় মতবাদের পাশাপাশি ইউরোপে মুসলমান অভিবাসীদের রুখে দাঁড়ানোর কথা বলেন তিনি৷ ধরা পড়ার পরও নিজের অপকর্ম নিয়ে এতটুকু বিচলিত নন তিনি৷ বরং এখন পর্যন্ত নিজের পক্ষেই সাফাই গেয়ে যাচ্ছেন তিনি৷ উল্লেখ্য, আগামী ২৪ আগস্ট আদালত তার বিচারের রায় ঘোষণা করবে৷
আরআই/এএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ)