দুই পুরুষ ইঁদুর থেকে সন্তান জন্ম দিলেন জাপানের বিজ্ঞানীরা
১৬ মার্চ ২০২৩জাপানের বিজ্ঞানীরা পুরুষ ইঁদুরের কোষ থেকে ডিম্বাণু তৈরি করেছেন এবং স্বাস্থ্যবান ইঁদুর শাবকের জন্মও দিতে সক্ষম হয়েছেন৷
বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ন্যাচারে প্রকাশিত গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন কিয়ুশু বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা৷ এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধ্যাপত কাতসুহিকো হায়াশি৷
গবেষণাপত্রের পাশাপাশি একটি ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির স্টেম সেল এবং প্রজনন বিশেষজ্ঞ ডায়ানা লেয়ার্ড এবং তার সহকর্মী জোনাথন বায়ের্লের একটি মন্তব্যও প্রকাশ হয়েছে৷ তাদের মতে এই গবেষণাটি ‘প্রজনন গবেষণার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে'৷
ভবিষ্যতে হুমকির মুখে থাকা স্তন্যপায়ী প্রজাতিগুলোর ক্ষেত্রে একটি একক পুরুষ প্রাণী থেকেই সন্তান জন্মদান সম্ভব হতে পারে৷
তারা লিখেছেন, ‘‘সমকামীদের ক্ষেত্রে অন্যের ডিম্বাণু ব্যবহারের নৈতিক এবং আইনি সংকট এড়িয়ে নিজেদের সন্তান জন্মদানের সুযোগও তৈরি করছে এই গবেষণা৷''
হায়াশি অবশ্য বলছেন, এই গবেষণা এখনও একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে৷ গত সপ্তাহে লন্ডনের ক্রিক ইনস্টিটিউটে জিন এডিটিং সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘ইঁদুর এবং মানুষের মধ্যে অনেক বড় পার্থক্য রয়েছে৷''
দীর্ঘদিনের গবেষণা
২০১৮ সালে এক চীনা গবেষণায় দুই নারী ইঁদুর থেকে সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা৷ কিন্তু পুরুষ ইঁদুর থেকে সন্তান জন্ম দিতে পারলেও তাদের বেশিদিন বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি৷
জাপানের বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় একটু ভিন্ন পথ অবলম্বন করেছেন৷ তাদের গবেষণায় পুরুষ ইঁদুর থেকে জন্ম দেয়া সন্তান স্বাভাবিকভাবে বড় হয়েছে, নিজেরাও সন্তান জন্ম দিয়েছে৷
এই পদ্ধতিতে প্রথমে পুরুষ ইঁদুরের লেজ থেকে একটি কোষ নেয়া হয়েছে৷ এরপর সেই কোষকে স্টেম সেলে রূপ দেয়া হয়েছে৷
এরপর পুরুষ ইঁদুরের সেই স্টেম সেলকে নারী কোষে, তারপর সেটিকে ডিম্বাণুতে রূপান্তর করা হয়েছে৷ এরপর সেই ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে এক নারী ইঁদুরের গর্ভে স্থাপন করা হয়েছে৷
মানুষের ওপর গবেষণা এখনও অনেক দূর
গবেষণাটি এখনও একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং যে পদ্ধতি এখানে অনুসরণ করা হয়েছে সেটা এখনও অনেক অপর্যাপ্ত৷
গবেষণায় ৬৩০টি ভ্রুণ নারী ইঁদুরের গর্ভে স্থাপন করা হলেও কেবল এর সাতটি থেকেই সন্তান জন্ম দেয়া গেছে৷
কেন এত অল্প সংখ্যক ভ্রুণ বাঁচলো সেটি এখনও গবেষকেরা নিশ্চিত হতে পারেননি৷
মানুষের স্টেম সেলে কিভাবে এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে, সেটিও নিশ্চিত নন গবেষকেরা৷
জিনের পরিবর্তন ঘটানোর প্রক্রিয়ায় ভুল বা অন্য কোনো কারণে যেসব জটিলতা তৈরি হতে পারে, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীদের সতর্ক থাকার ওপর জোর দিয়েছেন লেয়ার্ড৷
এডিকে/কেএম (এপি, ডিপিএ)