1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিযুক্তরাষ্ট্র

তেল সরবরাহ কমানোর ঘোষণায় সৌদি-মার্কিন সম্পর্কে টানাপোড়েন

৮ অক্টোবর ২০২২

বিশ্বের তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সংগঠন ওপেক প্লাসের উৎপাদন হ্রাসের ঘোষণায় বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে সৌদি রাজপরিবারের দূরত্ব আরেক দফা বেড়েছে৷

https://p.dw.com/p/4HvW7
Saudi-Arabien | Besuch US-Präsident Joe Biden | Golf-Kooperationsrat
ফাইল ছবি৷ছবি: Mandel Ngan/AP/picture alliance

জানা গেছে, সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চাপ সত্ত্বেও ওয়াশিংটনের লবিং পাত্তা দেয়নি রিয়াদ৷

মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে কাছের মিত্র সৌদি আরবের সঙ্গে ভালো যাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক৷ জামাল খাশোগজি হত্যা নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের অবস্থান, ইয়েমেন যুদ্ধ থেকে সমর্থন তুলে নেয়া এবং ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির ইস্যু নিয়ে ওয়াশিংটনের উপর নাখোশ রিয়াদ৷

রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার পর বিশ্ব রাজনীতির নতুন মেরুকরণে পড়েছে  সেই প্রভাব৷ জুলাইয়ে বাইডেনের সৌদি সফরে তার পরিবর্তন যে হয়নি এখন সেই ইঙ্গিতই মিলছে৷ বরং দুই দেশের সম্পর্কের আরেকদফা অবনতি ঘটেছে৷

সম্প্রতি জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক প্লাস বিশ্ববাজারে অত্যাবশ্যকীয় এই পণ্যের সরবরাহ বড় আকারে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ওপেকের অন্তর্ভুক্ত ১৩ সদস্যের এই জোটে রয়েছে মস্কোর নেতৃত্বাধীন আরো ১০ দেশ৷

গত সপ্তাহে নেয়া সিদ্ধান্ত অনযায়ী,  নভেম্বর থেকে তারা বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দৈনিক সরবরাহ ২০ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনবে৷ ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে অস্থির জ্বালানির বাজারে যা বড় এক ধাক্কা হয়ে এসেছে৷ এর ফলে গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ বেড়ে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম সপ্তাহ শেষে প্রায় ৯৮ ডলার ছুঁয়েছে৷  

রয়টার্স বলছে ওপেক প্লাসের এই সিদ্ধান্তে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে সৌদি রাজ পরিবারের সম্পর্কের আরো অবনতি হয়েছে৷ এ নিয়ে দুই দেশের এক ডজন সরকারি কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছে বার্তা সংস্থাটি৷

সূত্র অনুযায়ী, ওপেকের তেলের সরবরাহে লাগাম টানা ঠেকাতে সৌদি আরবের উপর কঠোর চাপ প্রয়োগ করে হোয়াইট হাউস৷ কেনন গ্যাসোলিনের মূল্যের আরেক দফা বৃদ্ধির কারণে স্বভাবতই ইউএস কংগ্রেসের মধ্যমেয়াদী নির্বাচনে সংকটে পড়বে ক্ষমতাশীণ ডেমোক্রেটরা৷ পাশাপাশি ইউক্রেন যুদ্ধের এই সময়ে জ্বালানির উচ্চমূল্য থেকে রাশিয়া যাতে সুবিধা না পায় সেই দিকটিও নিশ্চিত করতে চায় তারা৷

এই বিষয়ে তাই রিয়াদের সঙ্গে দেনদরবার করতে বাইডেন তার জ্বালানি দূত অ্যামোস হকস্টাইন, জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ব্রেট ম্যাকগুর্ককে এবং প্রশাসনের বিশেষ দূত টিম ল্যান্ডারকিংকে গত মাসে সৌদি আরবে পাঠান৷ কিন্তু তারা এই ব্যাপারে কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত আনতে ব্যার্থ হন৷

রয়টার্স তাদের সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, আলোচনায় মার্কিন কর্মকর্তারা এটিকে ‘যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া' ইস্যু হিসেবে অভিহিত করে সৌদি আরবকে যেকোন এক পক্ষ বেছে নেয়ার কথাও বলেন৷ জবাবে সৌদি কর্মকর্তারা বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র যদি বাজারে আরো তেলের সরবরাহ চায় তাহলে তাদের নিজেদের উৎপাদন বাড়িয়েই সেটি করা উচিৎ৷’’

উল্লেখ্য, মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র হলো বিশ্বের এক নাম্বার তেল উৎপাদনকারী ও সবচেয়ে বেশি ব্যবহারকারী দেশ৷

রয়টার্স জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে সৌদি আরবের সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয়ে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া পায়নি৷ তবে বুধবার সৌদি টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী প্রিন্স আব্দুল আজিজ বলেন, ‘‘সৌদি আরবের স্বার্থ আমাদের কাছে সবার আগে, এরপর আমাদের উপর আস্থা রাখা দেশের স্বার্থ এবং ওপেক ও ওপেক প্লাসের সদস্যদের স্বার্থ৷’’

এদিকে সৌদি আরবের সিদ্ধান্তকে হতাশাজনক হিসেবে অভিহিত করেছেন বাইডেন৷ তেলের বাজার ঠিক রাখতে ওয়াশিংটন সামনে আরো পদক্ষেপ নিবে বলে জানান তিনি৷ হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জন পিয়ার বলেন, ‘‘এটা পরিস্কার যে ওপেক প্লাস রাশিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে চলছে৷’’

বিশ্ববাজারের জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণে সৌদি আরব বড় ভূমিকা রাখে৷ জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে রিয়াদের সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলে রপ্তানিকারক দেশগুলোর উপরেও৷ এক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় মিত্র সৌদি আরবকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হলেও এবার আর ওয়াশিংটনের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি৷

সৌদিকে জবাব দিতে হোয়াইট হাউস দেশটির সঙ্গে সম্পর্কের বিভিন্ন দিক যাচাই করছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন৷

এফএস/আরআর (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান