তুষার চিতারা বিপন্ন, তাদের বাঁচাবার উদ্যোগ চলছে আফগানিস্তানে
২৯ আগস্ট ২০১১তুষার চিতাদের মূলত বিশ্বের যে দেশগুলিতে দেখতে পাওয়া যেত, সেগুলি হল বরফ সমৃদ্ধ আফগানিস্তান, ভূটান, চীন, ভারত, কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান, মঙ্গোলিয়া, পাকিস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তান - এই দেশগুলিতে৷ সচরাচর এই প্রাণীগুলি পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরে বেড়ায় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা পরিযায়ী পশু৷ অর্থাৎ, বরফের সন্ধানে তারা বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে চলে যেতে পছন্দ করে৷ কিন্তু নানা কারণে তারা সংখ্যায় ক্রমশ কমে আসছে৷ বিশেষ করে এই তুষার চিতাদের যেখানে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় দেখতে পাওয়া যেত আগে, সেই আফগানিস্তানে৷
আফগানিস্তানে অতি সম্প্রতি একটি তুষার চিতার সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা৷ দেখা গেছে, লুকিয়ে রাখা ক্যামেরায় সেই সবল সুস্থ পুরুষ চিতাটির ছবি৷ যেহেতু এই প্রাণীটি বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর তালিকায় পড়ছে, তাই এগুলিকে বাঁচাতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷ যাঁরা বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের সংরক্ষণের কাজ করে থাকেন৷ জাতিসংঘের প্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় কর্মরত সেই সংগঠনের নাম সি এম এস৷ এই সিএমএস-এর এক পরামর্শদাত্রী ক্রিশ্চিয়ানে ব়্যোটগার জানিয়েছেন, তুষার চিতাদের নিয়ে মূল সমস্যাটি ঠিক কোথায়৷
ক্রিশ্চিয়ানে জানাচ্ছেন, তুষার চিতারা যেহেতু অতি উঁচু পাহাড়ের দুর্গম জায়গায় বসবাস করে এবং প্রায়শই তারা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতায়াত করে থাকে৷ তাই তাদের সঠিক সংখ্যা দেওয়া বেশ সমস্যার বিষয়৷ তার ওপর রয়েছে চোরা শিকারীদের অত্যাচার৷ দেখা গেছে, এইসব চোরা শিকারীরে দুর্গম এলাকায় সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে গিয়ে চিতাগুলিকে মেরে ফের নিজেদের দেশে ঢুকে পড়ে৷ ফলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয় না সীমান্ত আইনের কারণে৷ আরেকটি সমস্যা হল, যে দেশে সর্বশেষ তুষার চিতাটির সন্ধান মিলেছে, সেই আফগানিস্তান আবার সিএমএস বা বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী সংরক্ষণের যে আন্তর্জাতিক চুক্তি, তাতে সই করেনি৷
তুষার চিতাদের সংরক্ষণে তাই উদ্যোগ নেওয়া এবং তার নবীকরণের চেষ্টায় এখন ব্যস্ত সিএমএস৷ ৪০ বছর আগে নেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, সে সময়ে মোট ৮০ টি তুষার চিতা ছিল শুধুমাত্র আফগানিস্তানে৷ আর ২০০২ সালে শেষবার আফগানিস্তানে মাত্র দুটি তুষার চিতার সন্ধান মিলেছিল৷ আর বর্তমানে মাত্র একটি চিতার জীবিত থাকার প্রমাণ মিলেছে৷ সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, সংখ্যায় দ্রুতবেগে তারা কমছে৷ কিন্তু তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থাটা কীভাবে নেওয়া যাবে, সে বিষয়েই এখন চিন্তিত জাতিসংঘের বিলুপ্তপ্রায় পশু সুরক্ষা দপ্তর সিএমএস৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ