1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তীব্র গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পোশাক শ্রমিকেরা

৪ জুন ২০২৪

গত ৭০ বছরের মধ্যে রেকর্ড তাপমাত্রা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ৷ এপ্রিল মাসে দেশটির তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছিল৷

https://p.dw.com/p/4gdWU
বাংলাদেশের একটি পোশাক কারখানা
সারা বিশ্বে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ শ্রমিক কাজের সময় তীব্র তাপদাহের মুখোমুখি হচ্ছেনছবি: Mohammad Ponir Hossain/REUTERS

বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় একটি অংশ তৈরি পোশাক শিল্প থেকে এলেও এই শিল্পের সঙ্গে সরাসরি জড়িত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও কাজের পরিবেশের সুরক্ষায় সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বের অবহেলার চিত্র প্রায়ই চোখে পড়ে৷

২২ বছর বয়সি আয়েশা আক্তার তানিশা আশুলিয়ায় বিদেশি ব্র্যান্ডের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন৷ সেখানে জিন্স ও বাচ্চাদের পোশাক তৈরি করা হলেও তীব্র গরমে কর্মীদের সুরক্ষা দেওয়ার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই বলে জানান তিনি৷ আয়েশা বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে প্রায়ই কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ বিশেষ করে মেয়েরা৷ অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেকে মাথা ঘুরিয়ে বমি করে দেয়৷''

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে কর্মরত ৪০ লাখ কর্মীর প্রায় ৬০ শতাংশ নারী৷ 

সম্প্রতি জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সারা বিশ্বের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ শ্রমিক কাজের সময় তীব্র তাপদাহের মুখোমুখি হয়৷ 

অ্যাড্রিয়েন আরস্ট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেসিলিয়েন্স সেন্টারের পরিসংখ্যান বলছে, গরমের তীব্রতায় কর্মীদের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার লোকসানের মুখোমুখি হয়৷ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতিবছরই তাপদাহের মাত্রা বেড়ে চলেছে৷ 

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ লেবার স্টাডিজের সহকারী পরিচালক মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘‘গার্মেন্টস শিল্পের জন্য তাপদাহ একটি গুরুতর ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷'' ৪০০ পোশাক শ্রমিকের উপর তিনি একটি জরিপ পরিচালনা করেন৷ এতে দেখা যায়, পাঁচজন শ্রমিকের মধ্য একজনকে গরম মাসগুলোতে অন্তত একবার অসুস্থতাজনিত ছুটি নিতে হয়েছে৷ আর ৩২ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন, তীব্র গরমের কারণে তাদের কর্মক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে৷

কিছু শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও তা অপর্যাপ্ত বলে মনে করছেন শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করা অ্যাক্টিভিস্টরা৷ সরকার, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আরও বেশি প্রতিশ্রুতির দাবি করছেন তারা৷ 

বেশ কিছু পোশাক কারখানার ছাদে এরই মধ্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ‘ওয়াটার স্প্রিঙ্কল' পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে৷  পাশাপাশি অতিরিক্ত ফ্যান ব্যবহার করে বাইরের তাপমাত্রার চেয়ে কারখানার ভেতরে চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি কম রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে৷

তবে শুধুমাত্র কর্মক্ষেত্রে নয়, পোশাক শ্রমিকদের বাসস্থানেও প্রায় একই অবস্থা৷ অধিকাংশ সময়ই তাদের ছোট আকারের ঘরে অনেকের সঙ্গে ভাগাভাগি করে থাকতে হওয়ায় সেখানেও গরমজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে যাচ্ছে৷ 

এসএইচ/জেডএইচ (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন)