তিব্বত: চীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ৬৫তম বার্ষিকী
উত্তর ভারতের ধর্মশালায় ৬৫ বছর আগে চীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের বার্ষিকী উদযাপন শত শত তিব্বতি।
ধর্মশালায় প্রতিবাদ ও স্মরণ
উত্তর ভারতের ধর্মশালায় তিব্বতিরা মুখের তিব্বতের পতাকা এঁকে চীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ৬৫তম বার্ষিকীকে স্মরণ করেছেন। ১৯৫৯ সালের ১০ মার্চ শুরু হওয়া বিদ্রোহ কঠোরভাবে দমন করেছিল চীনা দখলদাররা। এরপর তিব্বতিদের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামাকে তিব্বত ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছিল।
নির্বাসন থেকে প্রতিরোধ
তিব্বত থেকে পালিয়ে আসা ভিক্ষুরা ভারতে আশ্রয় পেয়েছিলেন। ২০১১ সালে উত্তর ভারতের ধর্মশালায় নির্বাচিত হয় নির্বাসিত তিব্বত সরকার। তিব্বতের সীমান্ত থেকে ধর্মশালা প্রায় ২৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তিব্বত-চীন সংঘাতের আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছে নির্বাসিত সরকার। প্রধানমন্ত্রী পেনপা সেরিং-এর মতে, তিব্বতের বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের বিষয়ে মধ্যবর্তী নিয়ে এগোচ্ছেন তারা।
তিব্বতের কণ্ঠ
সরকারের সদস্য লাগিয়ারি নামগয়াল ডলকার বলেছেন, উদযাপনগুলো "শুধুমাত্র তিব্বতিদের কণ্ঠস্বর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে শোনানোর একটি সুযোগ নয়, বরং সমস্ত তিব্বতিদের জন্য নিজেদের বোঝারও সময়।" শত শত নির্বাসিত তিব্বতি এই বছরের বার্ষিকীতে দেয়া বক্তৃতা শুনেছেন এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদেও অংশ নিয়েছেন।
একটি মুক্ত তিব্বতের স্বপ্ন
ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিহিত সন্ন্যাসীরা প্রতিবাদে যোগ দেয়ার আগে গালে 'মুক্ত তিব্বত' লিখে নিয়েছেন। আন্দোলনের কিছু নেতা মনে করছেন, কয়েক দশকের নির্বাসনে তিব্বতিদের প্রতিরোধই হুমকির মুখে পড়ে গেছে।
আরও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উদ্বেগ
স্লোগান দেয়া প্রতিবাদী তরুণ সন্ন্যাসীদের মুখে তাদের আবেগ টের পাওয়া যাচ্ছিলো। নির্বাসিত তিব্বতিদের মধ্যে একটি ভয় কাজ করে যে হিমালয় এলাকায় চীন তার আরো কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে দালাই লামার একজন প্রতিদ্বন্দ্বী উত্তরসূরি নিয়োগ করতে পারে।
প্রতিরোধের চিহ্ন
তরুণ সন্ন্যাসীরা ধর্মশালায় প্রতিবাদ মিছিল শুরু হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। যে দেশ থেকে তিব্বতিরা একসময় পালিয়ে এসেছিলেন, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে পরিবর্তন এসেছে। চীন সরকারের আনুষ্ঠানিক দৃষ্টিকোণ হচ্ছে, তিব্বত মালভূমি এখন 'শান্তিপূর্ণভাবে মুক্ত' এবং শিক্ষা ও অবকাঠামোর পরিধিও বেড়েছে।
বিদেশে জীবন
কয়েক দশক নির্বাসনে থাকা তিব্বতিদের অনেকেই কখনও নিজেদের জন্মভূমি দেখেনি। ১৯৫০ সালের শুরুর দিকেই হিমালয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চল দখলে নিয়েছিল চীনা সৈন্যরা। তিব্বতকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে দেখে চীন। গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের এই দাবি অবশ্য আন্তর্জাতিক আইনে বিতর্কিত।