তিনি নারীবাদী, প্রথম জানালেন ম্যার্কেল
৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ডুসেলডর্ফে একটি আলোচনাসভায় যোগ দিয়েছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, ''হ্যাঁ, আমি নারীবাদী।'' বছরকয়েক আগে একটি সভায় একই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন ম্যার্কেল। কিন্তু সেখানে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। যা নিয়ে জার্মান বিদ্বজ্জন মহলে যথেষ্ট আলোচনা এবং সমালোচনাও হয়েছিল।
চলতি মাসের শেষেই তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে। চ্যান্সেলর পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। ভোটের মাধ্যমে নতুন চ্যান্সেলর নির্বাচিত হবেন। রাজনৈতিক জীবনের একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে নারীবাদ নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন চ্যান্সেলর।
'হ্যাঁ আমি নারীবাদী'
অনুষ্ঠানে ম্যার্কেলকে জিজ্ঞেস করা হয় তিনি নারীবাদী কি না। উত্তরে চ্যান্সেলর বলেন, ''নারী এবং পুরুষের সমান অধিকার থাকা উচিত। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সেই সাম্য থাকা প্রয়োজন। সেই দিক থেকে ভাবলে, হ্যাঁ, আমি নারীবাদী।''
'আমরা সকলে নারীবাদী'
এদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন নারীবাদী লেখক চিমামান্ডা আদিচি। ২০১২ সালে তিনি টেডটকে যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, তা এখন বই হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। যার নাম 'উই শুড অল বি ফেমিনিস্ট'। অনেকেই মনে করেন, তার ওই বই একুশ শতকের নারীবাদের অন্যতম দলিল। আদিচির সেই বইয়ের নাম ধার করে এদিন ম্যার্কেলও বলেন, ''আমরা সকলে নারীবাদী''। যা শুনে গোটা প্রেক্ষাগৃহ উঠে দাঁড়িয়ে তাকে হাততালি দিয়ে ধন্যবাদ জানায়।
অথচ কয়েকবছর আগেও এতটা সহজে নিজেকে নারীবাদী বলতে পারেননি ম্যার্কেল। ২০১৭ সালে উইমেন ২০ সামিটে যোগ দিয়েছিলেন জার্মানির প্রথম নারী চ্যান্সেলর। সেখানেই নারীবাদের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। যা নিয়ে বহু সমালোচনা হয়েছিল। ম্যার্কেল এদিন বলেন, নিজেকে নারীবাদী বলতে এখনো এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করে তার। কিন্তু এখন বিষয়টি নিয়ে তার ধারণা অনেক স্পষ্ট। এখন তিনি নিজেকে নারীবাদী বলতেই পারেন।
অনুষ্ঠানে দুই নারী সাংবাদিকের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন ম্যার্কেল। সেখানে নিজের ছোটবেলার গল্পও বলেন তিনি। কীভাবে মানসিকভাবে অসুস্থ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তার ছোটবেলা কেটেছে তার বর্ণনা দেন চ্যান্সেলর। ফিরে যান কলেজ জীবনে। ফিজিক্সের ছাত্রী বলেন, তার ক্লাসে নারী কার্যত ছিল না। গবেষণাগারে কাজ করার টেবিল পেতেন না তিনি। কারণ, তিনি নারী। সেই তিনি পরবর্তীকালে ইতিহাস রচনা করেন, জার্মানির প্রথম নারী চ্যান্সেলর হয়ে।
ম্যার্কেলের মতে, গত কয়েক দশকে জার্মানির আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এখন আর পুরুষশাসিত সমাজ নেই। নারী তার অধিকার নিয়ে সচেতন। এখন কোনো অনুষ্ঠানে শুধু পুরুষ দেখলে তার অস্বস্তি হয়। ২০ বছর আগেও যা হতো না।
এসজি/জিএইচ (ডিপিএ, রয়টার্স)