ডিমের কারুকাজ
ডিম৷ পুষ্টিগুণের বাহার আর ইস্টারের রসনাবিলাসের চাইতে একটু বেশি কিছু৷ পেইন্টিং থেকে শুরু করে আসবাবপত্রের নকশা, এমনকি ঘর-সজ্জার উপকরণেও নানা সময় পরিণত হয়েছে ডিম!
হাম্পটি ডাম্পটি
‘হাম্পটি ডাম্পটি স্যাট অন আ ওয়াল’ কবিতা খুদে শিশুদের আনন্দপাঠের অংশ৷ কিন্তু কখনো এটাকে ডিম হিসাবে মাথায় আনেননি কেউ৷ তবে ১৮৭১ সালে ব্রিটিশ লেখক লুইস ক্যারলের ‘থ্রো দ্য লুকিং গ্লাস’ বইয়ে এলিসকে (উপরের ছবিতে) দেখে বুঝা যায়, সে দেখতে কতটা ডিমের মতো৷ অবশ্য অনেক সাহিত্যকর্মে ‘ডিমের মতো দেখার’ বর্ণনা এসেছে৷
ফ্যাবারজে ডিম
সৌখিন উপহার হিসাবে আদান-প্রদান হয় সোনা, অ্যানামেল ও মূল্যবান পাথরের উপকরণে তৈরি ফ্যাবারজে ডিম৷ এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হচ্ছে ৫০টি ইম্পেরিয়াল এগ, যেগুলো স্ত্রী আর মায়েদের উপহারের জন্য রোমানোভ জারদেরকে বানিয়ে দিয়েছিলেন রাশিয়ান স্বর্ণকার পিটার কার্ল ফ্যাবারজে৷ মূল্যবান জিনিস হিসাবে এগুলো এখন পৃথিবীর বিভিন্ন জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে৷
ভাঙা ডিম
কাঁচা ডিমকে ভঙ্গুরতা বা দুর্বলতার প্রতীক হিসাবে দেখানো হয়ে থাকে৷ কিন্তু শক্ত ও চকচকে স্টিল দিয়ে অ্যামেরিকান শিল্পী জেফ কুনস-এর তৈরি ম্যাজেন্টা রঙের এই ভাস্কর্য দেখাচ্ছে উল্টো চিত্র৷ ১৯৯৪ থেকে ২০০৪- এই সময়ে ‘ক্র্যাকড এগ’ নামে এ ধরনের দৃষ্টিনন্দন পাঁচটি ভাস্কর্য তিনি নির্মাণ করেন৷ কুনস এগুলোকে ‘জন্মের প্রতীক’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন৷
ইমোজি
এক ডিম, বহু আকার৷ সূর্যের আকারে ফ্রাইং প্যানের এই ইমোজি বেশ জনপ্রিয়৷ জাপানে এই ধরনের চিত্রলিপির প্রথম ব্যবহার হয় নব্বইয়ের দশকের শেষে, যেটি পরে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়৷ ২০১৫ সালে অক্সফোর্ড ডিকশনারি থেকে ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ারের স্বীকৃতি পায় হাসি-কান্নার ইমোজি৷ বর্তমানে উপরের পাত্রটির পাশাপাশি এমন ২ হাজারের বেশি ইমোজি ব্যবহার করা হচ্ছে৷
‘দ্য লাস্ট জাজমেন্ট’
রাত্রির আবেশে ইলাস্ট্রেশনের জন্য পরিচিত পঞ্চদশ শতক ও ষোড়শ শতকের শুরুর জার্মান চিত্রশিল্পী হিরোনিমুস বোশ৷ ‘দ্য লাস্ট জাজমেন্ট’ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, নারকীয় এক সৃষ্টি অসুরকে বধ করছে এবং দানবের তীরবিদ্ধ পা আটকা পড়েছে ডিমের মধ্যে৷ চাইলে অনলাইনে এই ডিমের অংশ কিনতে পারেন শিল্পানুরাগীরা৷
নার্সিসাসের রূপান্তর
এটি ডিমের আকৃতি দিয়ে আঁকা সালভাদর দালির মেটারমোরফোসিস অফ নার্সিসাস বা নার্সিসাসের রূপান্তর চিত্রকর্ম৷ ১৯৩৭ সালে পরা-বাস্তবিক এই চিত্রশিল্পীর আঁকা ছবিতে দেখা যায়, একজন সুদর্শন পুরুষ পুলের ভেতরে তার প্রতিকৃতিতে গ্রাস হয়ে যাচ্ছে৷ একইসঙ্গে ডিমেই ফুটে উঠছে নার্সিসাস ফুল৷
দালি থিয়েটার-মিউজিয়াম
ডিম্বাকৃতির বড় এসব বস্তু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে স্পেনের ফিগেরেস শহরের দালি থিয়েটার-মিউজিয়ামে৷ এই জাদুঘরটিতে রয়েছে সালভাদর দালির চিত্রকর্ম, আঁকা ছবি, ভাস্কর্য, খোদাই, ইনস্টলেশন, হলোগ্রাম আর ছবিসহ নানা কিছু৷ দালি নিজেই এই জাদুঘরের নকশা করেছেন, ‘এটি একটি পরা-বাস্তবিক জায়গা, এখানে যাঁরা আসবেন, তাঁরা ফিরবেন নাটকীয় স্বপ্ন নিয়ে,’ এই স্থাপনা সম্পর্কে বলেছেন তিনি৷
ডিম চেয়ার
কোপেনহেগেনের এসএএস রয়্যাল হোটেলের জন্য ১৯৫৮ সালে এই ডিম চেয়ারটি তৈরি করেন আর্নে জ্যাকবসেন৷ ড্যানিশ এই স্থপতি ও ডিজাইনার ওই হোটেলের নকশা ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনের পুরো দায়িত্ব পালন করেন৷ সেখানকার লবিতে রাখা ডিমের আকৃতির চেয়ার পরবর্তীতে অন্য অনেক ডিজাইনারকে ওই ধরনের নকশার প্রতি আগ্রহী করেছে৷