ডায়নোসরও কি ফিরে আসবে?
আধুনিককালে জীববৈচিত্র্য এত দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে যে, বিজ্ঞানীরা এ সময়টাকে পৃথিবীর ষষ্ঠ বড় আকারের বিলুপ্তি হিসেবে চিহ্নিত করছেন৷ কিন্তু হারিয়ে যাওয়া এসব প্রাণীকে কি ফিরিয়ে আনা সম্ভব?
ডায়নোসর
এই গ্রহের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বাসিন্দা ছিল ডায়নোসর৷ জুরাসিক পার্ক ছবির পাঁচটি সিকুয়েলে দেখানো হয়েছে, এদের পুনরুত্থান হলে কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে পারে মানুষ৷ তবে স্বস্তির ব্যাপার হলো, যেসব বিজ্ঞানী পুনরুত্থান নিয়ে গবেষণা করেন, তাঁরা বলছেন, মিলিয়ন বছর বয়সি কোনো জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল থেকে প্রাণীর পুনরুত্থান সম্ভব নয়৷
উলি ম্যামোথ
‘আইস এইজ’ চলচ্চিত্র এই প্রাণীটিকে জনপ্রিয় করে তুলেছে৷ এশিয়ার হাতিদের খুব কাছের আত্মীয় এরা৷ প্লায়েস্টোসিন যুগের (২.৫ মিলিয়ন থেকে ১১,৭০০ বছর) এই বিরাট প্রাণীটি ফিরিয়ে আনার খুব চমৎকার বৈজ্ঞানিক সুযোগ দেখছেন গবেষকরা৷
তাসমানিয়ান টাইগার
একবার এক থাইলাসিন বা তাসমানিয়ান টাইগারের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকরা এর মাথার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন৷ এই মার্সুপিয়াল প্রজাতির প্রাণীদের সর্বশেষ সদস্যটি দেশটির হোবার্ট চিড়িয়াখানায় মারা যায় ১৯৩৬ সালে৷ সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এই প্রাণীর পুরো জিনোম ডিকোড করেছেন৷ এর সবচেয়ে কাছের প্রজাতি নুম্বাটের শরীরে এই জেনোম প্রবেশ করিয়ে এই প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে৷
সাদা গণ্ডার
২০১৮-তে শেষ সাদা গণ্ডারটি মারা গেল৷ একই সঙ্গে এই প্রজাতিকে ‘আপাত বিলুপ্ত’ ঘোষণা করা হয়েছে৷ তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, হিমাগারে রাখা ডিম্বানু থেকে এদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব৷
ডোডো
শুধু মরিশাসেই মিলত ডোডো৷ ১৭শ’ শতকে দুরন্ত ও সুস্বাদু এই পাখিটি যখন বিলুপ্ত হয়ে যায়, তখন কেউ কেউ ভাবছিলেন যে একে ফিরিয়ে আনা সম্ভব কিনা৷ কিন্তু এখন অনেকেই মনে করছেন যে, তা সম্ভব৷ প্রকৃতি বিজ্ঞানীরা হন্যে হয়ে খুঁজছেন ডোডোর ডিএনএ৷
পাইরেনিয়ান ইবেক্স
২০০০ সালে পাইরেনিয়ান ইবেক্স নামক এই বন্য ছাগল প্রজাতির প্রাণীটির শেষ প্রতিনিধি সেলিয়া মারা যায়৷ তখন বিজ্ঞানীরা তার টিস্যু সেল সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করে রাখেন৷ তিন বছর পর একটি ছাগলের ডিম্বানুতে এই টিস্যু প্রবেশ করিয়ে এর ক্লোনের জন্ম দেয়া হয়৷ বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টার পর একটিই কেবল সফলভাবে জন্ম নেয়৷ তবে কয়েক মিনিটের মধ্যে সেও মারা যায়৷
মার্থা নামের কবুতর
পরিযায়ী কবুতরের একটি বিশেষ বংশ হলো মার্থা৷ শেষ মার্থা কবুতর মারা যায় ১৯১৪ সালে৷ উত্তর আমেরিকার এই বন্য কবুতরগুলো মূলত শিকারিদের কবলে পড়ে ও বন ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কারণে বিলুপ্ত হয়ে গেছে৷ অনেকেই মনে করেন, বিজ্ঞানের প্রজাতি পুনরুত্থানের শক্তি প্রমাণের জন্য মার্থা একটি আদর্শ প্রকল্প হতে পারে৷
আউরোখ
এই ইউরোয়েশিয়ান বুনো গরুগুলো নিশ্চিহ্ন হয় প্রায় ৪শ’ বছর আগে৷ এরা বুনো হলেও এদের বংশধরেরা কিন্তু গৃহপালিত৷ তাই সেই বংশধরদের মধ্যে পূর্বপুরুষদের বুনো চরিত্র ঢেলে দিয়ে তাদের পুনরুত্থানের চেষ্টা করা হচ্ছে৷
তারাও মানুষের পূর্বপুরুষ
আধুনিক মানব প্রজাতির কাছের আত্মীয় হলো নিয়ানডার্থালরা৷ এমনকি এদের সঙ্গে মানুষের পূর্বপুরুষদের জৈবিক আদান প্রদানও হয়েছে৷ তাই এখনো মানুষদের অনেকেই বয়ে বেড়াচ্ছেন নিয়ানডার্থালদের ডিএনএ৷ বিজ্ঞানীরা ল্যাবে হোমো স্যাপিয়েন্স ও নিয়ানডার্থালদের হাইব্রিড মস্তিষ্ক তৈরির চেষ্টা করছেন৷