ডাকসু নির্বাচন: তিন দিনের মধ্যে পুনঃতফশিলের দাবি
১৩ মার্চ ২০১৯আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে নতুন করে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নূর৷ এদিকে, ডাকসু এবং হল সংসদের নির্বাচনের ফল বাতিল করে পুনঃতফশিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে৷
সোমবারের ভোটে দায়িত্ব পালনকারী সবাইকে সরিয়ে দেওয়ারও দাবি তুলেছেন তাঁরা৷
আগামী তিন দিনের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন বাতিল করে পুনঃতফসিল দেয়া না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাম ছাত্রজোটের ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী৷ ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেছেন, ‘‘আগামী তিন দিনের মধ্যে যদি ডাকসু নির্বাচন বাতিল করে পুনঃতফশিল দেয়া না হয়, একই সঙ্গে এই নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত ছিলেন তাঁরা যদি পদত্যাগ না করেন এবং মামলা প্রত্যাহার না করা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব রক্ষার্থে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিতে বাধ্য হব৷'' স্বতন্ত্র জোটের ভিপি প্রার্থী অরণি সেমন্তি খান বলেন, ‘‘তিনদিনের মধ্যে নতুন তফসিল দিতে হবে, না হলে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে৷''
উপাচার্যের কার্যালয়ে শিক্ষার্থীরা
ছাত্রলীগ বাদে ভোট বর্জনকারী ডাকসুর পাঁচটি প্যানেল পুনর্নির্বাচন চেয়ে বুধবার দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয়ের কাছে স্মারকলিপি নিয়ে যায়৷ তবে, আন্দোলনকারীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে তাঁদের মুখের ওপর কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান৷
এর আগে দুপুর ১২টা থেকে মঙ্গলবারের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা৷ মঙ্গলবার অবশ্য নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক বলেছিলেন, ‘‘ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের যে ঘোষণা দিয়েছিলাম, তা থেকে আমরা সরে এসেছি৷'' কিন্তু ভোট বর্জনকারী অন্যান্য সংগঠন তাঁর এ ঘোষণা মেনে না নেয়ায় পর রাতে নরুল হক ঘোষণা দেন যে, অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন তিনি, চান পুনর্নির্বাচন৷
সোমবার গভীর রাতে যখন সহসভাপতি (ভিপি) পদে বিজয়ী হিসেবে নুরুল হকের নাম ঘোষণা করা হয়, তখন ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা৷ মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাম্পাসে এলে তাঁকে ধাওয়াও দেয়া হয়৷ এরপর বিকেলে হঠাৎ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী নুরুলকে বুকে জড়িয়ে ধরলে পরিস্থিতি পালটে যায়৷
ছাত্রী হলে স্বতন্ত্ররা জয়ী
ছাত্র হলগুলোর সংসদের নির্বাচনে ছাত্রলীগ প্রায় একচেটিয়াভাবে জিতলেও ছাত্রীদের হলগুলোতে ছিল ভিন্ন চিত্র৷ ছাত্রীদের পাঁচটি হলের চারটিতেই হেরেছে তারা৷ এই চারটি হলে সহসভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদকসহ (জিএস) বেশিরভাগ পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা৷ বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ভিপি পদে সুস্মিতা দে, জিএস সাগুফতা বুশরা ও এজিএস হয়েছেন মুন্নী আক্তার৷
কবি সুফিয়া কামাল হল সংসদে ভিপি-জিএসসহ নয়টি পদে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা৷ আর চারটি পদে জিতেছে ছাত্রলীগ৷ ভিপি পদে তানজিনা আক্তার, জিএস মনিরা শারমিন ও এজিএস নির্বাচিত হয়েছেন লুৎফুন্নাহার৷
অবশ্য রোকেয়া হলে ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ১১টি পদে জিতেছে ছাত্রলীগ৷ অন্য দু'টি পদে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা৷ ভিপি পদে ইশরাত জাহান, জিএস সায়মা আক্তার ও এজিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন ফাল্গুনী দাস৷
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ছাত্র সংসদে ভিপি, সংস্কৃতি ও সাহিত্য সম্পাদক পদে জিতেছেন স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী৷ তবে এই দুটি ছাড়া অন্য পদে জয় পেয়েছে ছাত্রলীগ৷ ভিপি পদে রিকি হায়দার (স্বতন্ত্র), জিএস পদে সারা বিনতে কামাল (ছাত্রলীগ) ও এজিএস পদে সাবরিনা স্বর্ণা (ছাত্রলীগ) জয় পেয়েছেন৷
শামসুন্নাহার হল ছাত্র সংসদের ১৩টি পদের মধ্যে ভিপি, জিএস, এজিএসসহ আটটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন৷ আর পাঁচটিতে জিতেছেন ছাত্রলীগের প্রার্থীরা৷ ভিপি পদে শেখ তাসনিম আফরোজ, জিএস আফসানা ছপা ও এজিএস পদে ফাতিমা আক্তার জয়ী হন৷
এপিবি/জেডএইচ (সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার)