‘টপ কিল’ কার্যকর হতে সময় লাগবে আরো একদিন
২৭ মে ২০১০গত ২০শে এপ্রিল মেক্সিকো উপসাগরে বিস্ফোরিত তেলকূপের ছিদ্র দিয়ে তেল নিঃসরণ বন্ধ করতে এই ছিপি কার্যকর কি না, তা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন বিপি'র প্রধান নির্বাহী টোনি হেওয়ার্ড৷
বুধবার সমুদ্রের গভীর তলদেশে ঐ ছিপি লাগানোর অভিযান শুরু করা হয়৷ যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলরক্ষা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর, ‘টপ কিল' নামের এ প্রক্রিয়া অনুমোদন করে৷ পদ্ধতিটি হল এই যে, ওপর থেকে প্রচণ্ড চাপে ‘ড্রিলিং মাড' বা কাদা, তেলের পাইপে ঠেলে ঢোকানো হবে – এবং তা সফল হলে সিমেন্ট দিয়ে উৎসের মুখটি বন্ধ করা হবে৷
এছাড়া, প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে আরো একদিন লাগবে এবং সাফল্যের সম্ভাবনা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বলে জানান হেওয়ার্ড৷ তাঁর কথায়, ‘‘এটা যদি জমিতে হতো, তাহলে এর সাফল্য সম্পর্কে আমরা খুবই আশাবাদী হতাম৷ কিন্তু যেহেতু স্থানটি ৫,০০০ ফুট জলের তলায়, সেহেতু আমাদের এক মাইল জলের নীচে কাজ করার ব্যাপারে বাস্তববাদী হতে হবে৷''
এদিকে, এই কাজের জন্য সাগরতলে রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে বলে খবর৷ চেষ্টা করা হচ্ছে, প্রায় এক মাইল দীর্ঘ তেলকূপে ভারী ও তরল কাদা এবং সিমেন্ট পুরে ছিদ্র বন্ধ করতে৷ বিপি'র প্রধান নির্বাহী টোনি হেওয়ার্ড ও মার্কিন জ্বালানি মন্ত্রী স্টিফেন চু – দু'জনেই অভিযানটি পর্যবেক্ষণ করতে এ সময় হিউস্টনে উপস্থিত ছিলেন বলে জানাচ্ছে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা৷ ওদিকে, ‘টপ কিল' কৌশল প্রয়োগ করে অপারেশন শুরুর চার ঘণ্টা পর অ্যাডমিরাল মেরি লন্ড্রি জানান, ‘‘পরিকল্পনা অনুযায়ীই অভিযান শুরু হয়েছে৷ তবে যতোক্ষণ পর্যন্ত আমরা সবগুলি ছিদ্র দিয়ে তেল নিঃসরণ বন্ধ করতে সম্পূর্ণভাবে কার্যকর না হচ্ছি - ততোক্ষণ পর্যন্ত আমি কোনরকম ইতিবাচক কথা বলতে চাই না৷''
উল্লেখ্য, মেক্সিকো উপসাগরের ঐ দুর্ঘটনায় সৃষ্ট ছিদ্র দিয়ে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার ব্যারেল তেল ছড়িয়ে পড়ছে সমুদ্রের জলে৷ ফলে লুইজিয়ানাসহ যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলে মারাত্মক অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়তই৷
তাই স্বাভাবিকভাবেই, যতো শীঘ্র সম্ভব তেলের রিগের ছিদ্র বন্ধ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ব্রিটেনের জ্বালানি কোম্পানি ‘ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম' বা বিপি৷ বুধবার কোম্পানির প্রকৌশলীরা তিনটি ছিদ্রের মধ্যে সবচেয়ে ছোটটি বন্ধ করতে সক্ষম হলেও, বাকি দুটো বড় ছিদ্র এখনও খোলা রয়ে গেছে৷
বলাই বাহুল্য, ঐ তেলের রিগটিতে বিস্ফোরণ ঘটার পর প্রতিদিন প্রায় আট লক্ষ লিটার করে তেল ছড়িয়ে পড়ছে মেক্সিকো উপসাগরে৷ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এর ফলে ৬০০'রও বেশি সামুদ্রিক জীব বিপন্ন হয়ে পড়েছে ইতিমধ্যেই৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন৷
তবে যাই হোক না কেন, ‘টপ কিল' কার্যকর হয় কি না - সেটা দেখার জন্য আরো একটা দিন অপেক্ষা যে করতেই হবে !
প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন