1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জয় উপভোগ করুন, হার মেনে নিন

৬ জুন ২০১৯

হার মানা আমাদের জন্য কঠিন৷ জেতার মতো হারাও যে জীবনের একটি অধ্যায় কেন জানি আমরা মানতে চাই না৷ সবখানে জিততে চাই বলে হেরে গেলে তো বটেই জিতে গিয়েও কখনো কখনো হারতে হয় আমাদের৷

https://p.dw.com/p/3Jvh5
Cricket World Cup 2019 | Bangladesch vs. Neuseeland
ছবি: Getty Images/D. Rogers

ক্রিকেট খেলা অনিশ্চয়তাময়, ওয়ান ডে তো আরো সাংঘাতিক৷ ২ জুন আর ৫ জুন,  তিন দিনের ব্যবধানে দেখেন বাংলাদেশ দলকে কীরকম বিচার করছি৷

হঠাৎ করেই যেন আমরা বুঝতে পারছি যে, মুশফিক দুর্বল উইকেট কিপার, আচমকা মানে এই গতকালের হারের পর যেন প্রথম দেখছি আমাদের ক্যাপ্টেন পুরো ফিট নন–১০ ওভার নিয়ন্ত্রিত বোলিং তার কাছে চাওয়া একটু বাড়াবাড়িই বটে!

আমাদের মনে রাখতে হবে, মুশফিক কিপিং করেন বলেই আমরা একজন স্পেশালাইজড ব্যাটসম্যান বা একজন কেবল বোলার বাড়তি খেলাতে পারি৷ তিনি ছাড়া আমাদের অপশন লিটন দাশ বা মোহাম্মদ মিঠুন৷ এই দু'জনের মধ্যে দলে যে থাকবেন তাঁকে দিয়ে কিপিং করালে মুশফিককে অন্য জায়গায় ফিল্ডিং করতে হবে আর তা দলের জন্য কতটা ইতিবাচক হবে আমাদের জানা নেই৷ আর লিটন বা মিঠুন কি সত্যিই মুশফিকের চেয়ে ভালো কিপার? কী প্রমাণ আছে এর পক্ষে আমাদের?

মাশরাফি ক্রিকেট খেলছেন স্রেফ অতিমানবীয় আবেগ দিয়ে৷ খেলা চালিয়ে যেতে যে তার শরীর সাথ দিচ্ছে না তা তাঁকে একনজর দেখলেই বোঝা যায়৷ শুধু দলের সবার মধ্যে বোঝাপড়া ঠিক রাখতে সবাইকে চাপমুক্ত রাখতে খেলে যাচ্ছেন তিনি৷ এটা এক ধরনের ক্যালকুলেটেড রিস্ক, এই মুহূর্তে যার কোনো বিকল্প আমাদের হাতে নেই৷ দ্বিতীয় খেলায় মাশরাফির চতুর বোলিং পরিবর্তনই কিন্তু আমাদের খেলায় ফিরিয়ে এনেছিল৷

ক্রিকেটে হারজিতের প্রসঙ্গে ফিরে আসি৷ সাউথ আফ্রিকার সঙ্গে প্রথম জয়ে বড় ভূমিকা ছিল মুশফিক-সাকিবের রেকর্ড জুটি, সৌম্যের পাল্টা আক্রমণ আর মাহমুদুল্লাহর অসাধারণ ফিনিশিংয়ের৷ কিন্তু মনে করুন তো শুরুতে কী সহজ ক্যাচ মাহমুদুল্লাহ দিয়েছিলেন৷ এরই নাম ক্রিকেট! এখানে নিশ্চিত বলে কিছু নেই৷ মুশফিকের কিপিংয়ের এত সমালোচনা করছেন? ভাবুন তো ডি কক-এর ওই রান আউটটা না হলে খেলার ফল অন্যরকম হতো কিনা? নিউজিল্যান্ডর সঙ্গে রান আউট মিস ও স্টাম্পের সামনে দাঁড়ানো নিয়ে মুশফিককে স্কুলবালকের সঙ্গে তুলনা করছেন কেউ কেউ৷ আপনারা তা করতেই পারেন, কিন্তু এটাও মনে রাখবেন অনেকবারই কিন্তু মুশফিক তাঁর প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব আর বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তাঁর কিপিংয়ের ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছেন৷ এটাই খেলা, কোনোদিন হবে কোনোদিন হবে না৷

DW Bengali Teamleiter - Khaled Muhiuddin
খালেদ মুহিউদ্দীন, প্রধান, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগছবি: DW/A. Islam

আমার ঠিক বুঝে আসে না, একটি টুর্নামেন্ট যা আবার কিনা বিশ্বকাপও বটে আর যেখানে অন্তত আরো সাতটি ম্যাচ বাকি, সেখানে কেউ কেউ দলের বা দলের কোনো খেলোয়াড়ের এত কড়া সমালোচনা কী করে করেন? তারা আসলে কী চান? প্রতি খেলার ফলের উপর ভিত্তি করে দল বদলে দেওয়া হোক?

এতসব সমালোচনায় খেলোয়াড়দের উপর কী প্রভাব পড়ে তা কি কেউ ভেবে দেখেছেন? না চাইলেও দেশ বা আপনজন থেকে যোজন যোজন দূরে হোটেল ঘরে একলা বসে তাঁরা সামাজিক মাধ্যমে ঢুঁ দেন, দেখেন দেশের মানুষ তাঁদের নিয়ে কী ভাবছেন৷ জানি, তাঁরা পেশাদার, তবুও এত এত সমালোচনা এত গালাগালে নিশ্চয়ই তাঁরা কষ্ট পান, কুঁকড়ে যান হয়তো খারাপ করার ভয়ে৷ তারপর প্রতিদিনই হয়তো অনেক চাপ নিয়ে মাঠে নামেন৷আর এই চাপে খানিক মনসংযোগে ব্যাঘাত মানে আরো বাড়তি চাপ৷

ধরা যাক, এইসব মন্তব্য আসে নির্বাচক বা বিসিবির জন৷ সবার নানামুখী মন্তব্য বিবেচনা করে বিশ্বকাপের মাঝে দলে বদল আনতে থাকবেন তারা?

বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেটে ভালো দল, জেতার মতো দল৷ কিন্তু খেলায় হার-জিত আছে৷ আর ১৭ কোটি আমাদের হয়ে যে ১৫ জন খেলছেন, তাঁরাই এই মুহূর্তে আমাদের তুরুপের তাস৷ আসুন, অপেক্ষা করি, জয় উদযাপন করি, হারে রাখি ধৈর্য৷

 

Khaled Muhiuddin
খালেদ মুহিউদ্দীন ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের প্রধান। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত।
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য