জ্ঞানবাপীর তহখানায় পুজোর অনুমতি এলাহাবাদ হাইকোর্টের
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪বারাণসী জেলা আদালত প্রথমে তহখানায় পুজোর অনুমতি দেয়। পাঁচজন নারী আবেদনকারীর আবেদন মেনে নেয় তারা। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি(এঐইএমসি)। তাদের আবেদন ছিল, জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরের দক্ষিণ দিকে 'ব্যাস কা তহখানা'-য় পুজো বন্ধ হওয়া উচিত। আর হিন্দু পক্ষের আবেদন ছিল, ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ওখানে পুজো হয়েছে। ফলে সেখানে পুজো চালু করা উচিত।
এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাদের রায়ে বলেছে, হিন্দুরা পুজো ও আরতি করতে পারবে। হিন্দু পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণু জৈন বলেছেন, তারা সব তথ্যপ্রমাণ দিয়ে দাবি করেছিলেন, ওই জায়গায় বরাবর পুজো হত। ১৯৯৩ সালে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। তার দাবি, মুসলিমপক্ষ আদালতে বলে, ওই তহখানা জ্ঞানবাপীর অংশ। এছাড়া ওখানে পুজো করতে দিলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।
বিষ্ণু জৈন জানিয়েছেন, এরপর আদালতে রাজ্য সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রাজ্য সরকার ঠিক রাখবে।
এর আগে বারাণসী জেলা আদালত জানিয়েছিল, তহখানায় হিন্দুরা পুজো করতে পারবে। কাশী বিশ্বনাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ এর জন্য একজন পুরোহিত নিয়োগ করবে।
এআইএমসি জানিয়েছে, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাবে। আর বিষ্ণু জৈন বলেছেন, তারা সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দাখিল করবেন, যাতে সর্বোচ্চ আদালত তাদের বক্তব্য শুনে তাদের সিদ্ধান্ত নেয়।
আইনজীবীদের প্রতিক্রিয়া
বারাণসী আদালতে হিন্দু পক্ষের আইনজীবী হরিশংকর জৈন বলেছেন, ''১৯৯৩ সালে বেআইনিভাবে পুজো বন্ধ করা হয়েছিল। জেলা আদালতের পর এখন হাইকোর্ট পুজো করার অনুমতি দিল। স্বাগতযোগ্য রায়।''
আইনজীবী সুভাষ নন্দন চতুর্বেদী বূলেছেন, ''হাইকোর্ট মেনে নিয়েছে, ১৯৯৩ পর্যন্ত পুজো হয়েছে। কোনো নথিপত্র ছাড়াই তা বন্ধ করে দেয়া হয়।''
আরেক আইনজীবী প্রভাষ পাণ্ডা বলেছেন, ''জেলাশাসক আগের মতোই তহখানার রিসিভার থাকবেন।''
আবেদনকারী সীতা সাহু সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ''আদালত তো প্রমাণ ছাড়া ফয়সালা করে না। আমরা যা বলেছি, তা যে ঠিক ছিল, সেটা বোঝা গেল।''
স্থায়ী সমাধান কোন পথে?
সাংবাদিক শুভাশিস ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''স্থায়ী সমাধান রাজনৈতিকভাবেই হতে পারে। কারণ, আদালত আইনি বিষয়টি সম্পর্কে রায় দেয়। এক্ষেত্রে আইনি সমাধানের পাশাপাশি রাজনৈতিক উদ্যোগে সমাধান জরুরি।'' তার প্রশ্ন, জনমতের চাপ কি আদালতের উপরেও থাকে?
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী আশিস গুপ্ত ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া রিপোর্ট দিয়ে বলেছে, ওখানে মন্দির ছিল। এরপর আর কি বলা যায়?''
শুভাশিস মনে করেন, ''এভাবে ইতিহাসের কোর্স কারেকশন হয় না। সে জন্যই রাজনৈতিক উদ্যোগটা জরুরি।''
জিএইচ/এসিবি(পিটিআই, এএনআই)