1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জোট-মহাজোটের তীব্র লড়াই হবে খুলনায়

সমীর কুমার দে২২ ডিসেম্বর ২০০৮

খুলনার ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতেই এবার চারদলীয় জোট ও মহা ঐক্যজোটের তীব্র লড়াই হবে৷ একটিতে লড়াই হবে ত্রিমুখী৷ ছয়টি আসনে ১৩টি রাজনৈতিক দলের ৩২ জন প্রার্থী থাকলেও মুল প্রতিদ্বন্দিতায় রয়েছেন মহাজোট ও চারদলীয় জোটের প্রার্থীরা

https://p.dw.com/p/GLMO
খুলনা অঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করতে চায় সকল রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা (ফাইল ফটো)ছবি: dw

তাদের মধ্যেই জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে বলে ভোটারদের ধারণা৷ প্রধান প্রধান প্রার্থীরা পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েছেন৷ তারা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে গণসংযোগ করছেন৷

খুলনা-১ আসন

স্বাধীনতার পর ১৯৮৮ সালের নির্বাচন ছাড়া সব নির্বাচনেই খুলনা-১ আসনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ৷ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এ আসন অনেকটা আওয়ামী লীগের 'রিজার্ভ' আসন হিসেবে পরিচিত৷ ১৯৯১ সালে এই আসনে আওয়ামী লীগের শেখ হারুনুর রশীদ এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পঞ্চানন বিশ্বাস নির্বাচিত হন৷ এ আসনে এবার মোট প্রার্থী চারজন৷ তারা হলেন মহাজোট মনোনীত প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ননী গোপাল মন্ডল, চারদলীয় জোট মনোনীত প্রার্থী বিএনপি নেতা আমীর এজাজ খান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা আবু সাঈদ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শেখ মোঃ জাকির হোসেন৷ চারদলীয় জোট চাইছে এবার আওয়ামী লীগের এই আসনটি নিজেদের দখলে নিতে৷ আর আওয়ামী লীগ চাইছে যে কোনো মুল্যে আসনটি ধরে রাখতে৷ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ আসনটি এবার আওয়ামী লীগের ঘরেই থাকবে৷

খুলনা-২ আসন

প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের কাছে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা নিয়ে গঠিত খুলনা-২ মর্যাদার আসন হিসেবে বরাবরই বিবেচিত হচ্ছে৷ ১৯৭৭ সালের পর এ আসনে কখনো আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেনি৷ তবে বিগত সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়লাভ করার পর এ আসনে জয়লাভের চেষ্টা চালাচ্ছে দলটি৷ আর বিএনপি চাইছে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে৷ ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল৷ এ আসনে এবার প্রার্থী নয়জন৷ তারা হলেন মহাজোটের মিজানুর রহমান মিজান, বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ড. কাজী ফারুক আহমেদ, ন্যাপের মোঃ ফজলুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এস এম আরিফ বিল্লাহ, কল্যাণ পার্টির এম ইব্রাহিম আদিল খান, বাসদের আ ব ম নহৃরুল আলম, মুসলিম লীগের শেখ সিরাজুল ইসলাম ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শেখ মোঃ জাকির হোসেন৷ এখানেও লড়াই হবে বিএনপি ও অওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর মধ্যে৷ শেষ পর্যন্ত নজরুল ইসলাম মঞ্জুই হয়ত বের হয়ে যাবেন৷

খুলনা-৩ আসন

এ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল খুলনা-৩ আসনটি এককভাবে ধরে রাখতে পারেনি৷ ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ও ২০০১-এ বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হন৷ এ আসনে এবার প্রার্থী ছয়জন৷ তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, জাতীয় পার্টির আবদুল গফফার বিশ্বাস, বিএনপির কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, খেলাফত আন্দোলনের এস এম জাহাঙ্গীর মিয়া, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী নুর আহমাদ ও মুসলিম লীগের শেখ জাহিদুল ইসলাম৷ এই আসনটি মহাজোট উন্মুক্ত রাখায় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে ভোটারদের ধারণা৷ স্থানীয় ভোটাররা বলছেন. আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে ভোট ভাগাভাগির ফলে সুবিধা যাবে বিএনপির ঘরে৷

খুলনা-৪ আসন

খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যেই জয়-পরাজয় নির্ধারণ হয়ে আসছে৷ এ আসনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ এবং ২০০১ সালে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল৷ এ আসনে এবার প্রার্থী চারজন৷ তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মোল্লা জালাল উদ্দিন, চারদলীয় জোটের শরীফ শাহ কামাল তাজ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইউনুস আহম্মেদ শেখ এবং মুসলিম লীগের ওয়াজির আলী মোড়ল৷ বিগত তিনটি নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে৷ এবারো তার ব্যতিক্রম হবে না বলে ভোটারদের ধারণা৷ আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মোল্লা জালাল উদ্দিনের সঙ্গে পেরে উঠবেন বলে মনে করছেন না ভোটাররা৷

খুলনা-৫ আসন

খুলনা-৫ আসনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল৷ স্বাধীনতা উত্তরকালে আটটি সংসদ নির্বাচনের মধ্যে ২০০১ সালের নির্বাচনে প্রথম কোনো জামায়াত নেতা এ আসনে জয়লাভ করেন৷ অভিযোগ রয়েছে, জামায়াতের মিয়া গোলাম পরওয়ার চরমপন্থি দল নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান মৃণাল ও তার বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করেন৷ অবশ্য মিয়া গোলাম পরওয়ারের দাবি এগুলো অপপ্রচার৷ এবার এ আসনে প্রার্থী পাঁচজন৷ তারা হলেন আওয়ামী লীগের নারায়ন চন্দ্র চন্দ, জামায়াতের মিয়া গোলাম পরওয়ার, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের ড. কাজী ফারুক আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ জামিল আহমেদ ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের বিদুর কান্তি বিশ্বাস৷ এবারো এ আসনে নারায়ন চন্দ্র চন্দের সঙ্গে মিয়া গোলাম পরওয়ারের মহৃল প্রতিদ্বন্দিতা হবে এবং শেষ পর্যন্ত নারায়ন চন্দ্র চন্দই বেড়িয়ে আসবে বলে ভোটারদের অভিমত৷

খুলনা-৬ আসন

খুলনা-৬ আসন জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত৷ ১৯৯১ ও ২০০১ সালে জামায়াত এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ আসনে বিজয়ী হয়৷ এবারের নির্বাচনে এই আসনে প্রার্থী চারজন৷ তারা হলেন আওয়ামী লীগের সোহরাব আলী সানা, জামায়াতের শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এ কে এম রেজাউল করিম ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের নেপাল কৃষ্ণ দাস৷ এর মধ্যে এ কে এম রেজাউল করিম ও নেপাল কৃষ্ণ দাসের তেমন পরিচিতি নেই৷ ফলে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত প্রার্থীর মধ্যেই লড়াই হবে বলে ভোটাররা মনে করেন৷ তবে শেষ পর্যন্ত জামায়াত তাদের এই আসনটি ধরে রাখতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে৷