1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জেলে বসে প্রাচীন গণিত সমস্যার সমাধান

২৩ জুন ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রে খুনের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি কারাগারেই উচ্চতর গণিতের দীক্ষা নিয়েছেন৷ শুধু তাই নয়, প্রাচীন জটিল এক গাণিতিক সমস্যারও সমাধান করে ফেলেছেন তিনি - যা প্রকাশ হয়েছে গণিত বিষয়ক একটি গবেষণা জার্নালেও৷

https://p.dw.com/p/3eEAJ
Justizvollzugsanstalt Salzburg Puch-Urstein
ছবি: picture-alliance/VOGL-PERSPEKTIVE.AT/M. Vogl

হলিউডের চলচ্চিত্রে এমন ঘটনা হয়তো প্রায়ই দেখা যায়৷ কিন্তু ক্রিস্টোফার হ্যাভেনস যা করেছেন তা গল্পকেও হার মানায়৷ স্কুলের গণ্ডি পেরুতে পারেননি তিনি, পাননি কোনো চাকরিও৷ এক পর্যায়ে হয়ে পড়েন মাদকাসক্ত৷ পেয়েছেন খুনের দায়ে ২৫ বছরের কারাদণ্ড৷ চল্লিশ বছর বয়সি হ্যাভেনস এরমধ্যে নয় বছর কাটিয়েছেন, আরো ১৬ বছরের বন্দিজীবন তার সামনে৷

কিন্তু জেলে তার দিনগুলো আর আট-দশজন কয়েদির মতো নয়৷ বন্দিদশায় নিজেকে তিনি গণিতপ্রেমী হিসেবে আবিষ্কার করেন৷ শুরু করেন উচ্চতর গণিতের পাঠ নেয়া৷ জেলখানায় তা মোটেও সহজ ছিল না৷ চিঠি পাঠিয়ে তিনি যে বইগুলোর অর্ডার দিতেন বাহিরে সেগুলো আটক করত কারারক্ষীরা৷

অবশেষে একটি দফারফা করেন তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে৷ অন্য বন্দিদের অঙ্ক শেখানোর বিনিময়ে শুধু পাঠ্যবই আনার অনুমতি দেয়া হয় তাকে৷ কিন্তু সেগুলো তার জন্য যথেষ্ট ছিল না৷ এক পর্যায়ে তিনি গণিতের জার্নালের বিভিন্ন সংখ্যার প্রকাশকদের কাছে চিঠি লিখতে শুরু করেন৷ বিভিন্ন হাত ঘুরে একটি চিঠি আসে গণিতের অধ্যাপক উমব্যার্তো চেরুতির কাছে৷ সিয়াটলে বন্দি হ্যাভেনসের অঙ্কের দৌড় জানতে তিনি একটি জটিল গাণিতিক সমস্যা পাঠান তাকে৷ কিছুদিনের মধ্যেই ১২০ সেন্টিমিটার লম্বা কাগজে বিরাট এক ফর্মুলা লিখে সঠিকভাবেই সমাধান পাঠান হ্যাভেনস৷    

অধ্যাপক চেরুতি সেসময় প্রাচীন একটি গ্রিক গাণিতিক সমস্যা বা তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করছিলেন, যার উপর ভর করে এমনকি গড়ে উঠেছে আধুনিক ক্রিপ্টোগ্রাফি৷ সেই গবেষণায় তিনি সঙ্গী করেন হ্যাভেনসকে৷ জেলে বসে কোনো ক্যালকুলেটর বা ডিজিটাল ডিভাইস ছাড়াই প্রথমবারের মতো সংখ্যার সেই ধাঁধা উন্মোচন করে ফেলেন হ্যাভেনস৷

তার প্রমাণকে বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করেন চেরুতি৷ ২০২০ সালের জানুয়ারিতে এই দুইজনের যৌথ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে গণিতের জার্নাল ‘রিসার্চ ইন নাম্বার থিওরি'তে৷

হ্যাভেনস যে শুধু নিজে গাণিতিক সমস্যার সমাধান করছেন তাই নয়৷ জেলখানায় অনেক বন্দির মধ্যেই তিনি সংখ্যার মোহ ছড়িয়ে দিয়েছেন৷ তাদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন ম্যাথ ক্লাব, যার সদস্য এখন ১৪ জন৷ 

জেলের বাকি ১৬ বছরের বন্দিজীবন গণিতেই ডুবে থাকতে চান হ্যাভেনস৷ যাকে তিনি দেখছেন সমাজের প্রতি তার ঋণ শোধ হিসেবে৷ কে জানে হ্যাভেনসের এই গল্পই হয়তো সামনে দেখা যাবে হলিউডের কোনো সিনেমাতে!

আলেক্সান্ডার ফ্রয়েন্ড/এফএস 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য