জীব মাত্রেই গরমে কষ্ট পায়...
গ্রীষ্ম এলে, গরম পড়লে, মানুষকে ঘামতে হয়৷ ঘামাটা ভালো, কেননা ত্বক থেকে এই স্বেদ নির্গত হওয়ার ফলে শরীর উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে না৷ কিন্তু জীবজন্তুরা ঘামে কি করে? কি করে গরমের হাত থেকে প্রাণ বাঁচায় তারা?
গরম সহ্য করতে পারা চাই
উটকে বলা হয় মরুভূমির জাহাজ, চরম তাপমাত্রাও সামলে নিতে পারে৷ ৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রাতেও উটেরা দু’সপ্তাহ জল না খেয়ে থাকতে পারে – তারপর অবশ্য তারা একবারে ১৩৫ লিটার পানি খেতে পারে৷ উটেরা নোনা জল পর্যন্ত খেতে পারে৷ গরমে তাদের শরীরের তাপ ওঠে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবধি, যা কিনা মানুষের পক্ষে জ্বরবিকার!
লোম দিয়ে এয়ারকন্ডিশনিং
গা লোমে ঢাকা থাকলে, শীতে কম কষ্ট হয়৷ হাতিদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কিন্তু ঠিক উল্টো: হাতির গায়ে লোম কম বলেই তারা সর্দিগর্মি হওয়া থেকে বাঁচে৷ মার্কিন গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে, হাতির গায়ে যা কিছু লোম আছে, তা দিয়ে তার গা থেকে উত্তাপ বের হয়ে যায়৷
ওয়েলনেস ট্রিটমেন্ট কার না ভালো লাগে
দক্ষিণ অ্যামেরিকার টাপির জীবটি জল ভালোবাসে; ঝিল, নদী কিংবা জলাভূমির কাছে দেখতে পাওয়া যায় টাপিরদের৷ খুব ভালো সাঁতার কাটতে পারে টাপিররা – গরম দেখলেই জলে পালায়৷ অবশ্য সেখানে কুমিরের ভয়! তার চাইতে চিড়িয়াখানাই ভালো: তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রিতে পৌঁছলেই নল থেকে জল!
কানগুলো হলো ‘ভেন্টিলেটার’
খরগোশদের কান অত লম্বা, আর তা-তে লোম অতো কম কেন জানেন? কারণ ঐ কান দিয়েই খরগোশের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷ গরম যত বাড়বে, খরগোশের কান দিয়ে রক্তচলাচলও তত বাড়বে, যা থেকে বাইরের বাতাস শরীরের উত্তাপ শুষে নেবে৷
আইসক্রিম না জুটলে, বরফেই কাজ চলবে
সাদা ভাল্লুক যে বরফের চাঙড় নিয়ে খেলা করছে, তার মধ্যে ফলের টুকরো লুকনো আছে৷ চিড়িয়াখানার অন্যান্য বাসিন্দাদের জমানো দই, এমনকি জমানো মাছমাংসও দেওয়া হয়ে থাকে – সরাসরি ডিপ ফ্রিজ থেকে৷
গরমে আলস্য
কাঠবিড়ালিরা শরীরে জল ধরে রাখতে পারে না, অর্থাৎ তাদের মাঝে-মধ্যে পানি খাওয়া প্রয়োজন৷ সেজন্য এই খুদে জীবগুলো গরমে জলের কাছাকাছি বাস করতে পছন্দ করে৷ তাদের পায়ের থাবায় কোনো লোম নেই, কাজেই থাবা দিয়ে শরীরের তাপ কিছুটা বার করে দেওয়া চলে৷ গরম খুব বাড়লে কাঠবিড়ালিরা গাছের মগডালে চড়ে পাতার ছায়ায় – নাক ডাকায়!
কুকুরের জিভ
কুকুররা গরমে বড় বেশি কষ্ট পায়, কেন না তারা ঘামতে পারে না৷ মুখ খুলে জিভ বার করে হাঁপানোই হল তাদের পাখার বাতাস থেকে শুরু করে শীততাপনিয়ন্ত্রণ৷ হাঁপানো বলতে মিনিটে চারশ’ বার হাঁপ নেওয়াও হতে পারে! শরীরের ভেতর থেকে রক্ত যায়া লোমের নীচে চামড়ার দিকে৷ তা সত্ত্বেও, পানি কিংবা ছায়া ছাড়া কুকুরদের জীবনসংশয় দেখা দিতে পারে৷ যেমন গরমে কুকুরকে গাড়িতে রেখে অন্য কোথাও যাওয়া উচিত নয়৷