জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের লড়াই
ব্রাজিলে চার বছর আগে জিকা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ খুব ছোট মাথা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে হাজারো শিশু যাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই৷ তাদের কষ্টের কাহিনী থাকছে ছবিঘরে৷
ভ্রূণের মস্তিষ্ককে আক্রমণ করে
২০১৫ সালে প্রথম খুব ছোট মাথা নিয়ে জন্মানো শিশুদের খবর প্রচার হয় ব্রাজিলে৷ তার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই প্রায় তিন হাজার শিশু মাইক্রোসেফালি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে৷ এই ভাইরাস ভ্রূণের মস্তিষ্ককে আক্রমণ করে বলে চিকিৎসকরা জ্যামাইকার ভাইরাসকে দায়ী করে৷
গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাস
মায়ের কোলে আড্রিয়ান, বয়স তিন বছর সাত মাস৷ মাইক্রোসেফালি ও বাঁকা মেরুদন্ড নিয়ে জন্মানো শিশুটি এতদিনে কেবল চিৎকার দিতে শিখেছে৷ আড্রিয়ানের মা কিন্তু গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলো৷
মশার কামড়
টাইগার ইজিপ্টি নামের মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাসটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে৷ গর্ভবতীর এই রোগ হলে শিশুদের মস্তিষ্কের গঠন ঠিকমতো না হওয়ায় শিশু বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷
শিশুদের কোনো ভবিষ্যত নেই
জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের কোনো রকম নড়াচড়া বা অন্য কিছুই করার ক্ষমতা নেই৷ অর্থাৎ সারাটা জীবনই তাদের অন্যের উপর নির্ভর করে বাঁচতে হবে৷
কষ্ট আর হতাশা
জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের জন্মের পর ব্রাজিলে প্রথমদিকে এমন ভাগ্যের সাথে মোকাবিলা করতে অনেক মায়েরই সমস্যা হয়েছিলো৷ পরে তারা ভাগ্যকে মেনে নিয়ে শিশুদের যত্নের দিকেই বেশি নজর দেওয়া শুরু করেন৷
এক মায়ের গল্প
ব্রাজিলের Aracaju -এ জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত এক মেয়ের মা ভালমিরা তাঁদের কষ্টের কথা জানাতে গিয়ে বলেন, অনেক বাবা নাকি সন্তানের মাইক্রোসেফালি অসুখের কথা জানার পর পালিয়ে গেছে স্ত্রী আর সন্তানকে ফেলে৷
মায়ের বিকল্প নেই
তারপরও এই শিশুদের মায়েরা আশার আলো দেখেন, সংসারে অভাব থাকা সত্ত্বেও শিশুদের নিয়মিত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান৷ হাজার হলেও নাড়ির টান তো, তাঁরা যে ‘মা’!
বিশ্বাস শুধু ঈশ্বরকে
সন্তানের ভবিষ্যৎ কেবল ঈশ্বরের হাতেই রয়েছে, এমন কথাই বেশিরভাগ মায়েরা বলেন, তাছাড়া তাদের যে আর কোনো পথও নেই! অসুস্থ শিশু নিয়ে নিম্ন আয়ের একক মায়েদের বেশ কষ্ট হয় সবকিছু সামলে নিতে৷
মায়েদের WhatsApp গ্রুপ
ব্রাজিলের Aracaju হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ কিন্তু মায়েদের কোনো আশার বাণী শোনান না৷ শিশুদের মায়েরাই নিজেদের মধ্যে ‘হোয়াটস অ্যাপ’ গ্রুপ তৈরি করে একে অপরকে মানসিক শক্তি দিয়ে সাহায্য করে থাকেন৷
জিকা ভাইরাস এখনো সক্রিয়
জিকা ভাইরাস এখনো সক্রিয়, ব্রাজিলের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মাত্র কয়েকদিন আগে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে৷