জার্মান শারীরবিজ্ঞানী এবার নিজের মৃতদেহের প্রদর্শনী করবেন
৯ জানুয়ারি ২০১১তাঁর নাম গুন্টার ফন হাগেন্স, বয়স ৬৫৷ তিনিই প্রথম মৃত মানুষের দেহাঙ্গ দিয়ে প্রদর্শনী করেন৷ বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় চমড়া সরিয়ে ফেলা হয় দেহ থেকে৷ স্পষ্ট দেখা যায় শরীরের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং রক্ত চলাচলের বিভিন্ন ধমনি৷ নানা বয়সের মানুষের দেহাঙ্গ নিয়ে প্রদর্শনী করেছেন তিনি কোলনে, লন্ডনে, বিশ্বের নানা শহরে৷ বিতর্কের ঝড় তুলেছেন৷ অভিহিত হয়েছেন ‘ডক্টর ডেথ' নামে৷
শারীরবিজ্ঞানী গুন্টার ফন হাগেন্স এখন ভীষণ অসুস্থ৷ তিনি ভুগছেন পার্কিনসন্স রোগে৷ এর থেকে আরোগ্যলাভের কোন সম্ভাবনা নেই৷ তিনি তাঁর স্ত্রী এঞ্জেলিনা ওয়েলিকে জানিয়েছেন, তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর দেহটিও যেন প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়৷ বিল্ড পত্রিকাকে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী এঞ্জেলিনা আমার মরদেহ প্লাস্টিনেট করবে৷ প্লাস্টিনেট হল সেই বিশেষ প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে দেহের চামড়া সরিয়ে ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকে দৃশ্যমান করে তোলা হয়৷ হৃৎপিন্ড, পাকস্থলী, রক্ত চলাচলের ধমনি এবং মাংসপেশিগুলো পর্যন্ত থাকে অক্ষত৷ সেগুলো নষ্ট হয়ে যায় না বা তা থেকে কোন ধরণের দুর্গন্ধও ছড়ায় না৷ চোখের সামনে ধরা দেয় একটি মানুষের ত্বকহীন পূর্ণ দেহ৷
প্রশ্ন - গুন্টার ফন হাগেন্স কীভাবে এত মৃতদেহ সংগ্রহ করলেন? যে সব মৃহদেহ দিয়ে তিনি প্রদর্শনী করেছেন সেসব মৃত ব্যক্তিরা জীবিত থাকাবস্থায় তাদের শরীর দান করে গেছেন প্রদর্শনীর জন্য৷ এছাড়া বেশ কিছু দেহ তাঁকে কিনে নিতে হয়েছে৷ যে সব মৃতদেহ দিনের পর দিন পড়ে ছিল মর্গে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তা বেশ চড়া দামে কিনে নিয়েছিলেন গুন্টার ফন হাগেন্স৷
বেশ কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যেই প্রদর্শনী করেছেন গুন্টার ফন হাগেন্স৷ প্রথম প্রদর্শনী ছিল কোলন শহরে৷ সুইজারল্যান্ডে হয়েছে এই 'বডি ওয়ার্ল্ড'৷ তবে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল লন্ডনের প্রদর্শনী৷ কারণ সেখানে একজন গর্ভবতী মহিলার দেহ প্লাস্টিনেট করেছিলেন ‘ডক্টর ডেথ'৷ মহিলার গর্ভস্থ শিশুটির দেহও নিঁখুতভাবে প্লাস্টিনেট করা হয়েছিল৷ এবং এরা দুজনেই ছিল মৃত৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক