জার্মানির স্কুলে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী বাড়ছে
ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ জার্মানির শিক্ষাব্যবস্থার বড় দুর্বলতাই যেন প্রকাশিত হচ্ছে স্কুলগুলোতে৷ ওইসিডি আগে সতর্ক করা সত্ত্বেও জার্মানিতে ঝরে পড়া স্কুলশিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
সতর্কবার্তা সত্ত্বেও নিঃস্পৃহতা
গত কয়েক বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা ও অর্থনীতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জার্মানির সমালোচনা করে আসছে৷বিশেষ করে স্কুল পর্যায় থেকে লেখাপড়া ছেড়ে দেয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দেশে ‘যোগ্যতাহীন’ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সরকার এই সমস্যা রোধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে জার্মানির কঠোর সমালোচনা করছিল অর্গ্যানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি)৷
শঙ্কা জাগানো পরিসংখ্যান
প্রতি বছর ইউরোপের কোন দেশে কতজন স্কুল-শিক্ষা বা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ শেষ করে না সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে ইউরোপিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস (ইউরোস্ট্যাট)৷ ২০২২ সালে ইউরোপের ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সীদের তথ্য সংগ্রহ করে ইউরোস্ট্যাট দেখেছে, সে বছর জার্মানির অন্তত ১২.২% স্কুল-শিক্ষা বা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেনি৷ইউরোপের ২৭টি দেশের মধ্যে মাত্র তিনটির অবস্থা এক্ষেত্রে জার্মানির চেয়ে খারাপ৷
শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি?
অর্গ্যানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) তিন বছর পরপর ১৫ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের পড়া, অঙ্ক করা এবং বিজ্ঞান বিষয়ে দক্ষতা পরীক্ষা করে৷ প্রোগ্রাম ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস অ্যাসেসমেন্ট (পিসা) নামে পরিচিত সংগঠনটির ২০২২ সালের পরীক্ষায় জার্মানির শিক্ষার্থীরা এত খারাপ করেছে, যা আগে কখনো হয়নি৷
অভিবাসী পরিবারগুলোর অবস্থা
২০২২ সালে জার্মানির ৫২ হাজারের মতো শিক্ষার্থী স্কুল-পর্বেই ঝরে পড়ে৷ ফেডারেল ইন্সটিটিউট ফর পোপুলেশন রিসার্চ (বিআইবি)-র সমীক্ষা বলছে, স্কুল থেকে ঝরে পড়ার দৃষ্টান্ত অভিবাসী পরিবারেই বেশি৷ ২০১৩ সালে এক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য ছিল না৷ তবে ২০২২ সালে দেখা গেছে, ২৫ বছর বয়সী জার্মানদের মধ্যে ৩% পুরুষ এবং ২% নারী স্কুল ডিপ্লোমা করেনি৷ অভিবাসী পরিবারের সন্তানদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ছিল যথাক্রমে ১২% এবং ১০%৷
বিশেষায়িত শিক্ষকের অভাব
জার্মানির স্কুলগুলোতে এই মুহূর্তে প্রয়োজনের চেয়ে অন্তত ১৪০০০ শিক্ষক কম রয়েছে৷ এডুকেশন অ্যান্ড সায়েন্স ট্রেড ইউনিয়ন বোর্ডের সদস্য আনিয়া বেনজিঙ্গার-স্টোলৎসে মনে করেন, ২০৩৫ সাল নাগাদ শিক্ষকের এই ঘাটতি ৫৬ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে৷
দায়ী করোনা, জার্মান ভাষা ও টাকা
সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানির স্কুলগুলোতে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সবার আগে করোনা মহামারির সময় স্কুল বন্ধ থাকার ক্ষতির কথা বলা হচ্ছে৷ এরপরে এসেছে জার্মান ভাষায় অদক্ষতার বিষয়টি৷ আনিয়া বেনজিঙ্গার-স্টোলৎসে অবশ্য স্কুল পর্যায়ে অনেক শিক্ষার্থীর পিছিয়ে পড়ার জন্য আর্থিক ও পারিবারিক অবস্থাকেও দায়ী করেন৷