1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির মেয়ররা কেন পদত্যাগ করতে চান

১৫ এপ্রিল ২০২৪

জার্মানির স্থানীয় রাজনীতিতে প্রায় ১১ হাজার মেয়রের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা৷ কিন্তু হুমকির মুখে তাদের অনেকে এখন পদত্যাগ করতে চাইছেন৷

https://p.dw.com/p/4enFq
বার্লিনে ৮০জন মেয়রের সঙ্গে কথা বলছেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার
শঙ্কায় আছেন জার্মানির স্থানীয় সরকারের অনেক মেয়রছবি: Britta Pedersen/dpa/picture alliance

এই মেয়ররাই দেশটির মাঠ পর্যায়ের রাজনীতির মোকাবিলা করেন৷ কিন্তু সেখানে ক্রমাগত বিপদ বাড়ছে৷ সম্প্রতি দেশটির প্রেসিডেন্টও বিষয়টি উল্লেখ করেছেন৷ স্থানীয় রাজনীতির উদ্বেগ ও সমস্যা সম্পর্কে জানতে গত ১১ এপ্রিল তিনি এবং ক্যুরবার ফাউন্ডেশন ৮০ জন সম্মানসূচক পদবীতে থাকা মেয়রকে আমন্ত্রণ জানান৷ তারা অনেক সময় বেতন ছাড়াই এই দায়িত্ব পালন করেন৷

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফোরসাকে দিয়ে এ বিষয়ে একটি জরিপ করিয়েছে ক্যুরবার ফাউন্ডেশন৷ জরিপে ছোট শহরের ৪০ শতাংশ মেয়র জানিয়েছেন তারা নিজেদের দায়িত্ব পালনে আশেপাশের মানুষজনদের কাছ থেকে বিদ্রুপ, হুমকি বা এমনকি শারীরিক আক্রমণের মুখেও পড়েছেন৷ ২০২১ সালে ফোরসার করা আগের জরিপে পূর্ণকালীন নির্বাচিত মেয়রদের ক্ষেত্রে এই হার ছিল ৫৭ শতাংশ৷

এ ধরনের পরিস্থিতির কারণে প্রতি চারজনের একজন মেয়র রাজনীতি ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন৷ এমনকি জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পৌরসভার নাগরিকদের মধ্যে অসন্তুষ্টি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন৷ প্রতি পাঁচজনের একজন নিজের এলাকায় গণতন্ত্রবিরোধী মনোভাব বাড়ার কথা জানিয়েছেন৷ সংখ্যাটি পূর্ব জার্মানির ক্ষেত্রে চারজনে একজন, যেখানে সেপ্টেম্বরে তিনটি রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷

স্থানীয় রাজনীতিবিদদের উপর হামলার বহু ঘটনা

জার্মানির ক্ষমতাসীন মধ্য-বাম রাজনৈতিক দল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসপিডি) সদস্য মিশায়েল ম্যুলার মনে করেন ঠুরিঙ্গিয়ায় তার নিজের শহর ভাল্টার্সহাউসেনে নিরাপত্তা হুমকি ক্রমাগত বাড়ছে৷ গত ফেব্রুয়ারিতে তার বাড়ির সামনে দুবৃত্তরা অগ্নিসংযোগকারী ডিভাইস বসিয়ে যায়৷ রাতে তার গাড়িতে আগুন ধরে যা পরে তার বাড়িতেও ছড়িয়ে পড়ে৷ সৌভাগ্যক্রমে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন তিনি৷

এর কিছুদিন আগে ম্যুলার উগ্র-ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন৷ ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন বলে মনে করছেন না তিনি৷ এই ধরনের ঘটনা রাজনীতির প্রতি মানুষকে বিমুখ করে তুলবে বলে তার মত৷ তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই ভাবছে, সমাজের জন্য আমার সময় বিলিয়ে দেয়ার আদৌ কোনো মানে আছে কিনা যার বিনিময়ে আমি বরং হুমকি পাচ্ছি৷''

এমন অবস্থায় সামনের দিনে সিটি কাউন্সিলর, স্থানীয় কাউন্সিল কিংবা মেয়র পদে লোকজন খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা তার৷

জার্মানির অন্যতম বৃহৎ শহর কোলনের মেয়র হেনরিট্টে রেকা ২০১৫ সালে মৃত্যু থেকে রেহাই পেয়েছেন৷ নির্বাচনের একদিন আগে কট্টর ডানপন্থি এক ব্যক্তি তার ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করে৷  ২০০৭ সালে আল্টেনা নামের আরেক শহরের মেয়রের উপর একইভাবে শরণার্থী বিদ্বেষী এক ব্যক্তি হামলা চালান৷ ২০১৯ সালে মধ্য জার্মানির কাসেল জেলার প্রধান ওয়াল্টার লুবকে এক উগ্র-ডানপন্থির হাতে প্রাণ দেন, যা গোটা দেশকে নাড়া দেয়৷ এর বাইরে স্থানীয় রাজনীতিবিদদের প্রতিনিয়ত নানা হয়রানি ও হুমকির মধ্যে থাকতে হয়৷ যার মধ্যে আছে: বাড়ির সামনের বাগানে ফাঁসির প্রতীকী মঞ্চ রেখে যাওয়া, চিঠির বাক্সে পশুর মৃতদেহ রাখা, হুমকি দিয়ে মেইল পাঠানো প্রভৃতি৷

ব্রান্ডেনবুর্গের সসেন শহরের মেয়র উইবকে সাহিন-সোয়ার্ৎজভেলার জোট সরকারের সঙ্গী ফ্রি ডেমোক্রেটিক পার্টির (এফডিপি) সদস্য৷ ২০১৯ সালের নির্বাচনি প্রচারে তিনি সরাসরি হুমকি পেয়েছেন বলে জানান৷ এমনকি তর্কি বংশোদ্ভুত তার স্বামীও অপবাদের শিকার হন৷

শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের মতো স্থানীয় রাজনীতিবিদদের সাঁজোয়া লিমুজিন বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার সুবিধা নেই৷ কিন্তু সাহিন-সোয়ার্ৎজভেলার হাল ছাড়েননি৷ তিনি প্রেসিডেন্ট স্টাইনমায়ারের সঙ্গে এ নিয়ে যোগাযোগ রেখে চলছেন এবং সচেতনতা তৈরির কাজ করছেন৷

তার এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে একটি নতুন পোর্টাল চালু হয়েছে, যা স্থানীয় রাজনীতিবিদদের সহায়তা করে৷

বেটিনা স্টেহক্যাম্পার/এফএস