জার্মানির খাদ্য কেলেঙ্কারি
ডিম থেকে ঘোড়ার মাংস, স্ট্রবেরি থেকে সবজি, জার্মানির বিভিন্ন দোকানে ছড়িয়ে থাকা খাদ্য সামগ্রীর কোনোটিই খুব নিরাপদ নয়৷ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এসব খাদ্যের পিছনে রয়েছে নানারকম চক্র৷
বিষাক্ত ডিম
জার্মানির বাজারে এসেছিল অসংখ্য ডিম, গবেষকেরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, সেই ডিমে ব্যবহার করা হয়েছে বিষাক্ত কীটনাশক, যা লিভার এবং থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের ক্ষতি করতে পারে৷ নেদারল্যান্ডস থেকে এসেছিল সেই ডিম৷ জার্মানিতে ওই পরীক্ষার পর নেদারল্যান্ডসের প্রায় ১৫০টি পোলট্রি রাতারাতি বন্ধ করে দেওয়া হয়৷
ব্রাজিলের গরুর মাংস
২০১৭ সালের শেষের দিকে ইউরোপের বহু দেশ ব্রাজিল থেকে গরুর মাংস রপ্তানি বন্ধ করে দেয়৷ তবে ততদিনে অবশ্য জার্মানির বাজার ভরে গিয়েছে ওই মাংসে৷ অভিযোগ, ওই মাংস ঠিকভাবে প্যাকেজ না করায় পচে গিয়েছে৷কিন্তু গন্ধ আটকানোর জন্য এক ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছিল সেই মাংসে৷ জার্মানির বহু মানুষ সেই মাংস খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন৷
রুটিতে ইঁদুর
জার্মান পুলিশ তদন্ত করে দেখে যে, বাভারিয়ার বিভিন্ন বেকারিতে প্রচুর ইঁদুর৷ অথচ ওই সমস্ত বেকারি থেকে সারা বছর বিপুল সংখ্যক রুটি পাঠানো হয় দেশের অন্যান্য অঞ্চলে৷ বহু রুটিতে ইঁদুরের কামড়েরও চিহ্নও পাওয়া যায়৷ বহু বেকারির তেলে পাওয়া যায় ছত্রাক৷
ক্ষতিকর ঘোড়ার মাংস
জার্মানির বহু দোকানে দেখা যায়, ‘রেডি টু ইট’ প্যাকেটের বার্গারে গরুর মাংস বলে চালানো হচ্ছে ঘোড়ার মাংস৷ এবং সেই মাংসের গুণাগুণ নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন ওঠে৷ অনেকেই বলেন, যে ঘোড়ার মাংস গরুর মাংস বলে চালানো হচ্ছে, তা আসলে স্বাস্থ্যকর নয়৷ জার্মানি এবং আয়ারল্যান্ডে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ তদন্ত শুরু হয়৷
স্ট্রবেরিতেও ভরসা নেই
২০১২ সালে জার্মানির প্রায় ১১ হাজার স্কুল ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ জানা যায়, তাদের সকলেই একইরকম প্যাকেটের ফ্রোজেন স্ট্রবেরি খেয়েছিল৷ তদন্ত করে দেখা যায়, সেই স্ট্রবেরিগুলি ঠিকভাবে প্যাকেজ না করায় বিষাক্ত হয়ে গিয়েছিল৷ শেষ পর্যন্ত স্কুল ছাত্ররা দ্রুত সুস্থ হয়ে গেলেও ফ্রোজেন ফল খাওয়ার বিষয়ে আতঙ্ক এখনো রয়ে গিয়েছে৷
খাবারে ডাইঅক্সিন
কিছুদিন আগে জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনি অঞ্চলে বেশ কিছু ফার্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ অভিযোগ, ওইসব ফার্মে তৈরি করা হতো মুরগি এবং শুয়োরের খাবার, যার মধ্যে বিপুল পরিমাণ ডাইঅক্সিন জাতীয় রাসায়নিক ব্যবহার করা হতো৷ সেই খাবার খাওয়া মুরগির ডিম বা মাংসও ডাইঅক্সিনে ভরে থাকতো৷
সবজিতে সংক্রমণ
সবজির মধ্যেও এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছে, যার কারণে উত্তর জার্মানির বহু মানুষঅসুস্থ হয়ে পড়েন৷ রক্ত আমাশা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় ৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে৷ কিডনির অসুখও দেখা দেয়৷ কিছু কিছু সবজির বিক্রি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে হয়৷