মহাকাশচারীদের সম্মেলন
১৬ আগস্ট ২০১৩সম্প্রতি কোলোন শহরে এসেছিলেন ৮০ জন মহাকাশচারী ৷ তাঁদের প্রত্যেকেই কমপক্ষে একবার পৃথিবীর কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করেছেন৷ বিরল এই অভিজ্ঞতা যাঁদের হয়েছে, তাঁরা সবাই পরস্পরকে চেনেন৷ শুধু সাংবাদিক নয়, অটোগ্রাফ শিকারিরাও ভিড় করেছেন তাঁদের চারিপাশে৷ অ্যামেরিকা ও অন্যান্য দেশের অ্যাসট্রোনট-দের সান্নিধ্য পাওয়া কি সহজ কথা!
রাস্টি শোয়াইকহার্ট-এর কথাই ধরা যাক৷ প্রথম অ্যাপোলো অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন তিনি৷ তিনিই প্রথম মানুষ, যিনি যান ছেড়ে মহাকাশে বেরিয়েছিলেন৷ আর আজ আইএসএস-এর বাইরে বেরিয়ে কাজ সারা এক রুটিন বিষয়৷
মহাকাশে দীর্ঘ সময় বসবাস করা, মাধ্যাকর্ষণ-বিহীন অবস্থায় খাওয়া-দাওয়া করা ও বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে সমস্যার সমাধান করাও আজ আর নতুন ঘটনা নয়৷ বর্তমানে ৩৫টি দেশ মহাকাশ কর্মসূচি চালাচ্ছে৷
কোলোন শহরের সম্মেলনে বলা হলো, কোনো দেশই একা মহাকাশের দখল নিতে চায় না৷ ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ স্পেস এক্সপ্লোরার্স'-এর সদস্যরা জার্মানি সফরে এসে মানবজাতির মধ্যে মিলের বিষয়ই তুলে ধরতে চেয়েছিলেন৷ প্রথম চীনা মহাকাশচারী ইয়াং লিওয়াই বললেন, ‘‘মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে তাকালে সত্যি বোঝা যায়, আমাদের মধ্যে কত মিল রয়েছে৷ উপর থেকে তখন আর আন্তর্জাতিক সীমানা আমার চোখে পড়ে না৷''
জার্মানির মহাকাশচারী অ্যার্নস্ট মেসারস্মিড বললেন, ‘‘আমরা ইউরোপীয় মহাকাশচারী হিসেবে অভিযানে অংশ নেই, জার্মান হিসেবে নয়৷ তখন আমরা ইউরোপীয় অ্যাসট্রোনট, যাদের জার্মান নাগরিকত্ব রয়েছে৷ সেইসঙ্গে আমরা ইউরোপীয় সমন্বয় প্রক্রিয়ার আদর্শ মডেল হয়ে উঠি, অন্তত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে৷ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এত দ্রুত না এগোলেও চলবে৷''
কোলোন শহরে জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টার – ডিএলআর-এর নতুন মেডিক্যাল ল্যাব-এ সাম্প্রতিক গবেষণার কিছু ফলাফল দেখা গেল৷ ভবিষ্যৎ মহাকাশচারীদের অভিযানের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত করে তুলতে এখানে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ একটি সেন্ট্রিফিউজ-এর মধ্যে গবেষকরা শরীরের উপর মাধ্যাকর্ষণহীনতার প্রভাব নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন৷
সম্মেলনে উপস্থিত মহাকাশচারীদের মধ্যে বেশিরভাগই অনেককাল আগে মহাকাশে গিয়েছেন৷ ভবিষ্যতে আবার সেখানে যাবার সম্ভাবনা খুবই কম৷ তবে তাঁরা মহাকাশ থেকে সীমাহীন পৃথিবী দেখার সুযোগ পেয়েছেন৷ যেমন পোল্যান্ড-এর মিরোস্লাভ হ্যারমানচেভস্কি৷ তাই সারা জীবন ধরে তাঁদের এই বিশেষত্ব থেকে যাবে৷